সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫ | ২৫ কার্তিক ১৪৩২

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

আমরা ইতিহাস গড়ার দ্বারপ্রান্তে : মামদানি

বাংলাদেশ অনলাইন :   |   মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫

আমরা ইতিহাস গড়ার দ্বারপ্রান্তে : মামদানি

ছবি : সংগৃহীত

নিউইয়র্ক সিটি মেয়র নির্বাচনে জনমতে এগিয়ে থাকা ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মামদানিকে ঠেকাতে আরেক ডেমোক্র্যাট নেতা যিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন, সেই অ্যান্ড্রু কুয়োমোকে সমর্থন জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি মামদানিকে ভোট না দিতে ভোটারদের আহ্বান জানিয়েছেন। সেখানেই থেমে থাকেননি তিনি, হুঁশিয়ার করে বলেছেন, মামদানি জিতলে তিনি নিউইয়র্কের তহবিলও ছাঁট করবেন। ট্রাম্পের এই হুমকি মাথায় নিয়েই নিউইয়র্ক সিটির ভোটাররা তাদের নতুন মেয়র নির্বাচনের জন্য ভোট দিচ্ছেন। ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে স্থানীয় সময় সকাল ৬টায়, যা শেষ হবে রাত ৯টায় (বাংলাদেশ সময় বুধবার সকাল ৭টা)।

ডেমোক্র্যাট মেয়রপ্রার্থী জোহরান মামদানি স্ত্রী রামা দুয়াজিকে সঙ্গে নিয়ে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে কুইন্সের অ্যাস্টোরিয়ার একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রে ভোট দেন। মামদানি নির্বাচিত হলে তিনি হবেন নগরীটির প্রথম মুসলিম মেয়র।

ভোট দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সামনে গিয়ে বেশ আশাবাদী ভঙ্গিতে মামদানি বলেন, ‘আমরা আমাদের নগরীর ইতিহাস গড়ার দ্বারপ্রান্তে আছি, অতীতের রাজনীতিকে বিদায় জানানোর দ্বারপ্রান্তে।’ নিউইয়র্কবাসীর সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন নাও পেতে পারেন—এমন কিছু জরিপকে তিনি গুরুত্বহীন বলে মন্তব্য করেন। মামদানির ভাষায়, ‘আমি বিশ্বাস করি, বিজয় নিজেই এক ধরনের জনসমর্থনের ঘোষণা।’ট্রাম্পের দেওয়া হুমকি— তিনি জিতলে নিউইয়র্কের ফেডারেল তহবিল বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে— এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামদানি বলেন, ‘আমি প্রস্তুত আছি নগরীর পাওনা প্রতিটি ডলারের জন্য লড়াই করতে।’

এর আগের দিন সোমবার সন্ধ্যায় নিজের সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ ট্রাম্প এই হুমকি দেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘আপনি অ্যান্ড্রু কুয়োমোকে ব্যক্তিগতভাবে পছন্দ করুন বা না করুন, আসলে আপনার কোনো বিকল্প নেই। আপনাকে তাকে ভোট দিতেই হবে এবং আশা করতে হবে, তিনি দারুণ কাজ করবেন। তিনি সেটা করতে সক্ষম, মামদানি নন।’

এর আগেই ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি মামদানি নির্বাচিত হন, তাহলে তিনি নিউইয়র্কে ফেডারেল তহবিল ‘সর্বনিম্ন পর্যায়ে’ রাখবেন।

গত রবিবার মার্কিন টেলিভিশন সিবিএসের ‘সিক্সটি মিনিটস’ সাক্ষাৎকারে তিনি মামদানিকে ‘কমিউনিস্ট’ বলে আখ্যা দেন, যা মামদানি স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। ট্রাম্প বলেন, ‘যদি নিউইয়র্কে একজন কমিউনিস্ট মেয়র হয়, তাহলে সেখানে টাকা পাঠানো মানে সেই অর্থ অপচয় করা।’

এই হুমকির জবাবে মামদানি বলেন, ‘আমি এটিকে তার মতোই দেখব; এটি একটি হুমকি, কোনো আইন নয়।’

মামদানি নিজেকে ‘গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী’ হিসেবে পরিচয় দেন এবং রসিকতা করে বলেন, ‘আমি অনেকটা স্ক্যান্ডিনেভিয়ান রাজনীতিকদের মতো, শুধু ত্বকের রঙটা বাদে।’

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন অতীতে নিউইয়র্কের মতো ডেমোক্র্যাট-নিয়ন্ত্রিত শহরগুলোর প্রকল্পে ফেডারেল অনুদান কমানোর চেষ্টা করেছে। চলতি অর্থবছরে নিউইয়র্ক সিটি ৭.৪ বিলিয়ন ডলার (৯০ হাজার ২১৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা) ফেডারেল তহবিল পেয়েছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী কুয়োমো ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিসেবে নিউইয়র্কের গভর্নর ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ট্রাম্পবিরোধী হিসেবেই পরিচিত। এবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘সমর্থন’ নিয়ে বলেন, ‘তিনি আমাকে সমর্থন দিচ্ছেন না, মামদানির বিরোধিতা করছেন।’

সর্বশেষ জরিপেও ডেমোক্র্যাট প্রার্থী মামদানি এগিয়ে আছেন। কুয়োমো ডেমোক্র্যাট প্রাইমারিতে পরাজিত হয়ে এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন। রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া অনেক পিছিয়ে আছেন।

তবে ট্রাম্প নিজ দলের প্রার্থী স্লিওয়াকেও সমর্থন দেননি। তার পোস্টে লেখা ছিল, ‘কার্টিস স্লিওয়াকে ভোট দেওয়া মানে আসলে মামদানিকেই ভোট দেওয়া।’

মামদানি বলেন, ‘মেইক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ রাজনৈতিক আন্দোলনে কুয়োমো-সমর্থন আসলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বার্থই প্রকাশ করে। এটি নিউইয়র্ক সিটির জন্য নয়, ট্রাম্প প্রশাসনের সুবিধার জন্য।

গত রবিবার সিবিএসের সিক্সটি মিনিটস অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, মেয়র হিসেবে মামদানি দায়িত্ব নিলে প্রাক্তন মেয়র বিল দে ব্লাসিও ‘দারুণ নেতা বলে মনে হবে।’ ট্রাম্পের ভাষায়, ‘দে ব্লাসিও খারাপ মেয়র ছিলেন, কিন্তু এই ব্যক্তি (মামদানি) তার চেয়েও অনেক খারাপ হবেন।’

নিউইয়র্কের পাঁচটি প্রশাসনিক বরোর মধ্যে একটি কুইন্স, সেখানে জন্ম নেওয়া ট্রাম্প বলেন, ‘আমি কুয়োমোর ভক্ত নই, তবে যদি আমাকে একজন খারাপ ডেমোক্র্যাট আর একজন কমিউনিস্টের মধ্যে বেছে নিতে হয়, তাহলে আমি খারাপ ডেমোক্র্যাটকেই বেছে নেব।’

৩৪ বছর বয়সি মামদানি যদি জয়ী হন, তিনি হবেন নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র এবং গত এক শতাব্দীতে সবচেয়ে তরুণ মেয়র। রাজ্য পরিষদের এই তরুণ আইনপ্রণেতা কুয়োমোকে ট্রাম্পের ‘কাঠপুতলি’ বলে সমালোচনা করেছেন।

মামদানির ভাষায়, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্সির প্রতিচ্ছবি তৈরি করা নয়, বরং এমন বিকল্প তৈরি করা দরকার, যা নিউইয়র্কবাসীর মর্যাদা, মানবিকতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার প্রতিফলন ঘটাবে।’ তার প্রচারণার মূল ইস্যুÑ সাশ্রয়ী আবাসন, বিনামূল্যে গণপরিবহন ও করপোরেট কর সংস্কার, যা তরুণ ও অভিবাসী ভোটারদের মধ্যে প্রবল সাড়া ফেলেছে।

অন্যদিকে কুয়োমো নিজের অভিজ্ঞতা ও প্রশাসনিক দক্ষতার কথা তুলে ধরে বলেন, তিনিই ট্রাম্প প্রশাসনের মোকাবিলা করতে সক্ষম একমাত্র প্রার্থী। কোভিড-১৯ মহামারির সময় নিউইয়র্কের গভর্নর হিসেবে তিনি সরাসরি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছিলেন, যদিও পরবর্তীতে নার্সিং হোমে মৃত্যুর সংখ্যা গোপনের অভিযোগে তিনি সমালোচিত হন।

সাম্প্রতিক এক বিতর্কে কুয়োমো বলেন, ‘আমি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লড়েছি। নিউইয়র্কের পক্ষে লড়াইয়ে আমি কখনও পিছু হটব না।’

ট্রাম্প প্রশাসন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ডেমোক্র্যাট-নিয়ন্ত্রিত শহরগুলোতে অপরাধ দমন অভিযানের অংশ হিসেবে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করেছে এবং ফেডারেল অভিবাসন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা না করা এলাকাগুলোর তহবিল বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে।

Posted ১০:৫৭ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

86-47 164th Street, Suite#BH
Jamaica, New York 11432

Tel: 917-304-3912, 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.