শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫ | ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসির মৃত্যু

  |   বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪

ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসির মৃত্যু

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে। গত ১৯ মে রোববার দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় আজারবাইজান প্রদেশের সীমান্ত এলাকায় প্রতিবেশি দেশ আজারবাইজানের সাথে যৌথ একটি বাঁধ প্রকল্প উদ্বোধন শেষে তেহরানে ফেরার পথে কুয়াশাচ্ছন্ন পাহাড়ি এলাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আব্দুল্লাহিয়ান, পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গর্ভনর মালেক রাহমাতি, ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার প্রতিনিধিসহ মোট ৯জন নিহত হন।

অপর দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে ফিরে আসে। রাইসি এবং আমির আব্দুল্লাহিয়ানের মৃত্যু ইরানের নেতৃত্বে বড় ধরণের শুন্যতা সৃষ্টি করেছে। আর এই মৃত্যুকে ঘিরে নানা রকম সন্দেহ ও জল্পনার ডালপালা বিস্তৃত হয়ে চলেছে। অনেকেই একে সাধারণ দুর্ঘটনা হিসেবে মানতে নারাজ। সন্দেহের আঙুল উঠছে চিরশত্রু ইসরাইল ও আমেরিকার দিকে। যদিও ইরানি কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।

তবে ইসরাইল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগ বাড়িয়ে এই দুর্ঘটনা ও হত্যাকান্ডের সাথে নিজেদের সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেছে। এমন এক সময় প্রেসিডেন্ট রাইসি এবং আমির আব্দুল্লাহিয়ানের এই অপঘাত মৃত্যুর ঘটনা ঘটল, যখন গাজা যুদ্ধকে ঘিরে ইসরাইল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ইরান এক কঠিন চ্যালেঞ্জিং অবস্থায় রয়েছে। প্রেসিডেন্ট রাইসির যোগ্য ও সাহসী নেতৃত্বে ইরান প্রথমবারের মত ইসরাইলের সাথে পাল্টাপাল্টি ক্ষেপনাস্ত্র হামলায় শামিল হয়েছে,যা ইরানের সামরিক সক্ষমতা ও শ্রেষ্ঠত্বের জানান দিয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম রাইসির মৃত্যুতে ইরান জুড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে শোকের মাতম চলছে। তিনি ২০২১ সালে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ইরানকে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন। রাশিয়া ও চীনের মত পরাশক্তির সাথে সম্পর্ক সুদৃঢ় করা এবং সউদি আরবের সাথে দূরত্ব কমিয়ে এনে মধ্যপ্রাচ্যের দুই আঞ্চলিক শক্তির মধ্যে সম্পর্কের নতুন সেতুবন্ধন রচনায় সক্ষম হয়েছেন। রাইসির মৃত্যুতে জাতিসংঘ মহাসচিব, চীন, রাশিয়া ও তুরস্কের নেতারা তাৎক্ষণিক শোক বার্তায় যে কোনো পরিস্থিতিতে ইরানের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। বিশ্বনেতাদের অনেকেই প্রেসিডেন্ট রাইসি ও আমির আবদুল্লাহিয়ানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। ইসরাইলের সাথে সাম্প্রতিক সামরিক উত্তেজনার সময় চীন-রাশিয়া ছাড়াও পাকিস্তান ও উত্তর কোরিয়ার সাথে ইরানের সামরিক-কূটনৈতিক সম্পর্কের নতুন বার্তা পেয়েছে বিশ্ব।

ইবরাহিম রাইসির সুযোগ্য নেতৃত্ব আঞ্চলিক-আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে ইরানকে একটি সম্মানজনক সম্প্রীতির আসনে অধিষ্ঠিত করেছিল। ফিলিস্তিনি ইস্যুতে ইরানের জনগণ এবং মুসলিম উম্মাহ প্রেসিডেন্ট রাইসির ভূমিকা দীর্ঘদিন মনে রাখবে। তাঁর এমন মৃত্যু মধ্যপ্রাচ্যের সামগ্রিক বাস্তবতাকে আরো অস্থিতিশীল ও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলতে পারে বলে পর্যবেক্ষকদের অনেকের ধারনা।

ইরানিরা লড়াকু ও ধৈর্যশীল জাতি। যে কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলায় তাদের সক্ষমতা প্রশ্নাতীত। সামরিক, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক অঙ্গণে ইরানের যোগ্যতর নেতৃত্ব তাদেরকে একটি আঞ্চলিক শ্রেষ্ঠত্বের আসনে বসিয়েছে। প্রেসিডেন্ট রাইসি তার অন্যতম কারিগর। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের অকুণ্ঠ সমর্থনে ইসরাইলের অপরাজেয় শক্তি হয়ে ওঠা এবং ফিলিস্তিনি ও মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিবেশিদের সাথে আ্গ্রাসি ও আধিপত্যবাদী ভূমিকার বিরুদ্ধে ইরানের কৌশলগত একটি নতুন আঞ্চলিক বাস্তবতার জন্ম দিয়েছে। এ কারণেই হেলিকপ্টার বিদ্ধস্ত হওয়া নিয়ে অনেক প্রশ্নের জন্ম হয়েছে।

বিশেষত ইসরাইলের সাথে ইরানের বৈরীতা, সাম্প্রতিক বছরে আজারবাইজানের সাথে ইসরাইলের বন্ধুত্বের সম্পর্ক, সীমান্ত এলাকায় জাতিগত আজেরিদের নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক ইত্যাদি বিষয়গুলোও আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিদ্ধস্ত হওয়া হেলিকপ্টারটি আমেরিকায় নির্মিত অর্ধশত বছরের পুরনো।

ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে ইরান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হওয়ায় হেলিকপ্টার ও এয়ারক্রাফটের খুচরা যন্ত্রাংশ ও নতুন এয়ারক্রাফ্ট সংগ্রহ করতে না পারায় তাদের এভিয়েশন ব্যবস্থার যথাযথ উন্নয়ন সম্ভব হয়নি। এভাবেই প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটিও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল বলে অনেকের ধারণা।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইল যাই বলুক, প্রকৃত সত্য উদঘাটন এখনো তদন্তসাপেক্ষ। বাগদাদ বিমানবন্দরে আইআরজিসি কমান্ডার কাসেম সুলাইমানিকে ড্রোন হামলায় হত্যা, ইসরাইলী বিমান হামলায় আল কুদস ফোর্সের আরেক কমান্ডার সাইয়েদ রাযি মুসাভি হত্যা, কিংবা ১ এপ্রিলে দামেস্কের ইরানি কনসুলেট ভবনে ড্রোন হামলায় ইরানের ৭ সেনা কর্মকর্তার মৃত্যুর ঘটনার ধারাবাহিকতায় হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট রাইসি এবং আমির আব্দুল্লাহিয়ানের মৃত্যু স্বাভাবিকভাবে মেনে নেয়া দুষ্কর।

রাইসির নেতৃত্বে ইরানের সাথে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এক নতুন উচ্চতায় সমাসীন ছিল। ইরানি জনগণের সাথে বাংলাদেশের মানুষের সম্পর্ক সুপ্রাচীন ইতিহাস-ঐতিহ্যের দ্বারা সুচিহ্নিত।

Posted ১১:৪৫ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়

(4744 বার পঠিত)

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়

(1406 বার পঠিত)

সম্পাদকীয়

(940 বার পঠিত)

সম্পাদকীয়

(926 বার পঠিত)

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়

(918 বার পঠিত)

সম্পাদকীয়

(827 বার পঠিত)

বিদায় ২০২০ সাল
বিদায় ২০২০ সাল

(779 বার পঠিত)

ঈদ মোবারক
ঈদ মোবারক

(761 বার পঠিত)

ঈদ মোবারক
ঈদ মোবারক

(724 বার পঠিত)

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০
৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

86-47 164th Street, Suite#BH
Jamaica, New York 11432

Tel: 917-304-3912, 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.