আল জাজিরা : | রবিবার, ৩০ মার্চ ২০২৫
ছবি : সংগৃহীত
গাজা এখন ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া এক নগরী। এই ধ্বংসস্তূপের মধ্যেও ফিলিস্তিনি জনগণ ঈদ পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পবিত্র রমজান মাস ফিলিস্তিনিদের কেটেছে দুঃসহ কষ্টে। ১ মার্চ ইসরায়েলের সঙ্গে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রথম দফার যুদ্ধবিরতি শেষ হয়।
এর পর থেকে গাজায় আবার হামলা শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। রোজার মধ্যেও খাবার নেই, মাথা গোঁজায় ঠাঁই নেই তাঁদের। কষ্টে, অনাহারে কাটছে মানুষের জীবন।
হামাসের ওপর চাপ প্রয়োগের কৌশল হিসেবে এ মাসের শুরু থেকে গাজায় ত্রাণসহায়তা পৌঁছাতে দেয়নি ইসরায়েল। ফলে আবার গাজা ছেড়ে পালাতে হয়েছে অনেক পরিবারকে। এই অনাহার ও কষ্টের মধ্যেও ঈদ পালন করতে যাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। রোজার মাস শেষ হতে যাচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যে আজ ঈদ উদ্যাপিত হবে। কিন্তু ঈদ যেন গাজাবাসীর জন্য নয়। ফিলিস্তিনিরা বলছেন, ‘তাঁদের উদ্যাপনের কিছুই নেই’।
১৮ মার্চ ইসরায়েল গাজায় নতুন করে হামলা শুরু করেছে। এতে গত ১১ দিনে ৮৯০ জন নিহত হয়েছেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামলা শুরুর পর থেকে ইতিমধ্যে ইসরায়েলি হামলায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন। নিহতদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। এ ছাড়া কয়েক সপ্তাহ ধরে গাজা উপত্যকায় কোনো খাবার বা ত্রাণ প্রবেশ করতে পারেনি। আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার পরিস্থিতি এখন অত্যন্ত অস্থিতিশীল।
ইসরায়েলি হামলার মধ্যে গাজাবাসীর জন্য এটা হবে দ্বিতীয় ঈদ। প্রথম ঈদের সময় ইসরায়েলি ভয়াবহ হামলার রেশ এবারও তাঁদের টানতে হচ্ছে। কিন্তু এবার আশায় বুক বেঁধেছিলেন তাঁরা। ভেবেছিলেন যুদ্ধবিরতি হবে। ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে হামলা কিছুটা কমেছিল। তবে ১৮ মার্চ থেকে গাজায় আকস্মিক হামলা চালিয়ে যুদ্ধবিরতি ভেঙে ফেলে ইসরায়েল। তাদের হামলায় কয়েক শ মানুষ মারা যান। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এ হামলার নির্দেশ দেন।
ইসরায়েলের পক্ষ থেকে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ আরও বাড়ানোর কথা বলা হয়েছিল। এ সময় হামাসের হাতে থাকা ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিতে চাপ দেওয়া হয়। হামাসের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ বাস্তবায়নের দাবি করা হয়। এতে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার ও একযোগে সব জিম্মিকে মুক্তির কথা বলে হামাস। ইসরায়েলি প্রস্তাবে হামাস রাজি না হওয়ায় গাজায় ত্রাণসহায়তা বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল।
একটি নাজুক যুদ্ধবিরতির মধ্যে রোজা পালন শুরু করেছিলেন গাজাবাসী। তাঁদের আশা ছিল স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দিকে যাবে হামাস ও ইসরায়েল। কিন্তু যুদ্ধবিরতি ভেস্তে যাওয়ায় ফিলিস্তিনিদের ভাগ্য আবার বদলে গেল।
অ্যাম্বুলেন্সে হামলা
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ইসরায়েলের সেনাবাহিনী শনিবার স্বীকার করেছে, গাজার অ্যাম্বুলেন্সগুলোকে তারা সন্দেহজনক যান হিসেবে চিহ্নিত করে এগুলোতে গুলি চালিয়েছে। হামাস একে ‘যুদ্ধাপরাধ’ হিসেবে নিন্দা জানিয়েছে। অ্যাম্বুলেন্সে হামলায় অন্তত একজন নিহত হয়েছেন।
গত রোববার রাফার তাল আল-সুলতানে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা ছাড়াও গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ২৭৭।
Posted ১০:২৪ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ৩০ মার্চ ২০২৫
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh