বাংলাদেশ ডেস্ক : | বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট ২০২০
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কঠোর সমালোচনায় বিদ্ধ করেছেন সাবেক ফার্স্টলেডি মিশেল ওবামা। তিনি বলেছেন, ‘যতটা সম্ভব পরিষ্কার করে বলার চেষ্টা করছি- ডোনাল্ড ট্রাম্প আমাদের দেশের ভুল প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্প নিজেকে প্রমাণ করার যথেষ্ট সময় পেয়েও ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি এমন কোনো ব্যক্তি নন, যাকে আমাদের প্রয়োজন।’ চার দিনব্যাপী ডেমোক্রেটিক পার্টির জাতীয় কনভেনশনের প্রথমদিন সোমবার এমন কাটছাঁট কথার জাদুতে দেশ মাতালেন সাবেক এ প্রেসিডেন্ট-পত্নী। সম্মেলনের দ্বিতীয় রাত স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (বাংলাদেশ সময় বুধবার সকাল) ভাষণ দেবেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন। তিনি কিভাবে শো মাতাবেন সেটাই দেখার অপেক্ষায় মার্কিনিরা। খবর রয়টার্স, বিবিসি ও এএফপির। ‘ঐক্যবদ্ধ আমেরিকা’ স্লোগানে ১৭ আগস্ট থেকে ডেমোক্রেটিক পার্টির জাতীয় কনভেনশন শুরু হয়েছে। প্রথমদিনের থিম হল ‘উই দ্য পিপলস’। কনভেনশনের সঞ্চালক ছিলেন মার্কিন অভিনেত্রী ইভা লঙ্গোরিয়া। করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে ভার্চুয়াল এ সম্মেলনের শুরুর দিনেই ট্রাম্পের কঠোর সমালোচনা করেন মিশেল ওবামা। আমেরিকার ইতিহাসে সম্ভবত তিনিই কোনো সাবেক ফার্স্টলেডি, যিনি ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্টের সরাসরি সমালোচনা করে বক্তব্য দিলেন। আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্টরাও সাধারণত কোনো ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের বিপক্ষে কথা বলেন না। আর ফার্স্টলেডিরা সব সময় রাজনৈতিক বক্তব্য এড়িয়ে চলেন।
এক্ষেত্রে একটু ব্যতিক্রমী পথে হাঁটলেন মিশেল। ট্রাম্পের সমালোচনা করে সাবেক ফার্স্টলেডি বলেন, ‘তিনি যে (প্রেসিডেন্টের) কাজ চালাতে পারেন, তা প্রমাণের জন্য প্রচুর সময় পেয়েছিলেন। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারী, অর্থনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতি আর বর্ণবৈষম্যের চক্করে ঘুরপাক খাওয়া একটি দেশের সময়ের চাহিদা পূরণ করতে পারেননি।’ ট্রাম্পকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ভুল প্রেসিডেন্ট’ অ্যাখ্যা দিয়ে তিনি আরও বলেছেন, ‘আমরা হোয়াইট হাউসে পেয়েছি বিশৃঙ্খলা, বিভক্তি এবং সহমর্মিতার ভয়াবহ ঘাটতি। তিনি (ট্রাম্প) সেই লোক নন, যাকে আমাদের প্রয়োজন। আপনাদের যদি মনে হয়, পরিস্থিতি এর চেয়ে খারাপ হওয়া সম্ভব নয়; বিশ্বাস করুন, এর চেয়েও খারাপ হতে পারে। তারা তা করবে, যদি এ নির্বাচনে আমরা পরিবর্তন না আনতে পারি। এই বিশৃঙ্খলা বন্ধের কোনো আশা যদি আমাদের থাকে, তাহলে বাইডেনকে এমনভাবে ভোট দিতে হবে যেন আমাদের জীবনও এর ওপর নির্ভর করছে।’
বাইডেনকে বিপুলসংখ্যক ভোটে জয়ী করার আহ্বান জানিয়ে নির্বাচনের দিন ভোটারদেরকে আরামদায়ক জুতা ও মাস্ক পরার পাশাপাশি কেন্দ্রগুলোতে দীর্ঘ লাইন বিবেচনায় ব্যাগে রাতের খাবার এমনকি পরদিন সকালের নাস্তাও নিয়ে যেতে পরামর্শ দিয়েছেন মিশেল। তিনি বলেছেন, ‘যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে সারারাত লাইনে দাঁড়িয়ে থাকারও ইচ্ছা থাকতে হবে আমাদের।’ বাইডেনের জীবনের মর্মান্তিক কাহিনী তুলে ধরে মিশেল বলেন, ‘যখন তিনি শিশু তখন তার বাবা চাকরি হারান। যখন তিনি তরুণ সিনেটর তখন তার স্ত্রী ও মেয়ে মারা যান। এবং যখন তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট তখন তার প্রিয় পুত্রকে হারান। মিশেল বলেন, ‘আমি জানি, আমার বক্তব্য কোনো কোনো মহলে পাত্তা পাবে না। আমি একজন কৃষ্ণাঙ্গ নারী হিসেবে ডেমোক্রেটিক পার্টির কনভেনশনে বক্তব্য দিচ্ছি। অনেকেই জানেন, আমি নিজে যা মনে করি, তাই বলি।আপনারা জানেন, আমি রাজনীতিকে ঘৃণা করি। আপনারা এও জানেন, আমি এ দেশটাকে নিয়ে ভাবি। দেশকে আমার প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসি। দেশের মানুষের ব্যথা আমাকেও ব্যথিত করে।’ ট্রাম্প শুধু গণতন্ত্রের জন্যই হুমকি নন, বিজ্ঞানকে প্রত্যাখ্যান করে তিনি আমাদের জীবন ও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছেন। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে আমাদের বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে হবে।’
Posted ৭:২৭ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh