বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫ | ২৭ আষাঢ় ১৪৩২

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

কথিত রেমিট্যান্স মেলায় আসছেন না বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর

বাংলাদেশ রিপোর্ট :   |   বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫

কথিত রেমিট্যান্স মেলায় আসছেন না বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর

নিউইয়র্কে অনুষ্ঠেয় কথিত রেমিট্যান্স মেলায় আসছেন না বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ড. আহসান এইচ মনসুর। আগামী ১৯ ও ২০এপ্রিল নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসের একটি রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশ রেমিট্যান্স মেলা ২০২৫ এর ঘোষণা দেয় একটি সংঘবদ্ধ চক্র। দু’টি অখ্যাত সংগঠনের নামে চিহ্নিত মহলটি বাংলাদেশের কতিপয় সংবাদপত্রে ঘোষণা দেয় এই মর্মে।

তাতে উল্লেখ করা হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর আগামী ১৮ এপ্রিল নিউইয়র্ক আসছেন কথিত রেমিট্যান্স মেলা উদ্বোধন করতে। দু’দিন ব্যাপী অনুষ্ঠেয় এই মেলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর সহ সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও শীর্ষ পর্যায়ের কয়েক ডজন কর্মকর্তা মেলায় অংশ নিবেন।

এছাড়াও স্টল থাকবে বিভিন্ন ব্যাংক ও অর্থ লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানের। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশী মালিকানাধীন রেমিট্যান্স হাউজ ও তাদের সংগঠনকে আড়ালে রেখে এধরণের মেলার আয়োজনকারীদের পরিচিতি ও অভিসন্ধি নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে। বিশেষ করে বিগত ১৬ বছর ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে চিহ্নিত ব্যক্তিবর্গ বিভিন্ন কিসিমের মেলার নামে অতীতে বাংলাদেশ থেকে অর্থপাচারের সাথে জড়িত বলে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে তারাই দেশের একশ্রেনীর অসাধু ব্যাংকার ও আমলার সাথে যোগসাজোস করে নতুন কায়দায় অর্থ পাচারের ধান্ধায় রেমিট্যান্স মেলার উদ্যোগ নেয়। রেমিট্যান্স মেলায় মিথ্যে বয়ান দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সহ বিভিন্ন ব্যাংকের উচ্চ মহলকে প্রভাবিত করার চেষ্টা চালায়।

কৌশলে তারা মোটা অংকের অর্থও হাতিয়ে নেয়ার প্রয়াস পায়। ফ্যাসিবাদের দোসর দুষ্ট এই চক্রটির অভিসন্ধি চাউর হয়ে যায় দেশ ও প্রবাসে। সাপ্তাহিক বাংলাদেশ বিষয়টি নিয়ে গত ২০ মার্চ সংখ্যায় “রেমিট্যান্স মেলার নামে দেশ থেকে অর্থ পাচারের ফন্দি” শীর্ষক প্রধান শিরোনাম সংবাদ প্রকাশ করে। এতে উল্লেখ করা হয় ফ্যাসিবাদের দোসরদের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর অংশ নিচ্ছেন বলে। সাপ্তাহিক বাংলাদেশে প্রকাশিত সংবাদটি দেশ ও প্রবাসে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।

সংবাদটি বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় বিষয়টি গুরুত্বের সাথে আমলে নেয়। তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর, সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান সহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ রেমিট্যান্স মেলার আমন্ত্রণ বাতিল করে দেন। শুধু তাই নয় বাংলাদেশের স্বার্থপরিপন্থি এসব কর্মকান্ডে দেশ ও প্রবাসে যারা সম্পৃক্ত তাদের ব্যাপারে অনুসন্ধান চালানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তারপরও কথিত এ মেলার মূলহোতা বিশ্বজিৎ সাহা নিউইয়র্কে মেলার পক্ষে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে, রেমিট্যান্স হাউজ ব্যবসায়ী মহল থেকে।

ফ্যাসিবাদের চিহ্নিত দোসর বিশ্বজিৎ সাহা এতোটাই বেপরোয়া যে গত অক্টোবর মাসে ম্যানহাটানে তার আয়োজিত মেলা প্রাঙ্গণে টানানো বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছবি তিনি নিজ হাতে ছিঁড়ে ফেলে বলে বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী সাপ্তাহিক বাংলাদেশকে জানিয়েছেন।

এদিকে নিউইয়র্কস্থ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ও চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তি কথিত রেমিট্যান্স মেলা প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা গোটা বিষয়টি তদন্ত করে এই চক্রের সাথে সম্পৃক্তদেরকে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান বাংলাদেশ সরকারের প্রতি।

‘মুক্তধারা’র বিশ্বজিৎ সাহা বইমেলার পাশাপাশি ট্রেড শো এবং রেমিট্যান্স ফেয়ারেও ঝাঁপিয়ে পড়েন কয়েক বছর আগে। সে সব আয়োজনে জড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের বাণিজ্য, অর্থ মন্ত্রণালয়সহ গুরুত্ব কয়েকটি দফতর। রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো আগের মত গতবছরও সরাসরি বাংলাদেশে বিজ্ঞপ্তি প্রচারও করে।

এমনকি এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকেও ব্যবসায়ী-শিল্পপতিগণকে আহবান জানানো হয়েছে বিশ্বজিৎ সাহার ট্রেড ফেয়ার অথবা রেমিট্যান্স ফেয়ারে অংশগ্রহণের জন্যে। আগে নাম ভাঙিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণের দিন ঘিরে এবং গতবছর টেকনিক পরিবর্তন করে ‘বাংলাদেশ ইমিগ্র্যান্ট ডে অ্যান্ড ট্রেড ফেয়ার’ নাম দেয়া হয়েছিল। আর এসব কথিত আয়োজনের নেপথ্যে ছিল আদম পাচার, অর্থ পাচার এবং রাষ্ট্রীয় খরচে পদস্থ আমলাদের বিনোদন ভ্রমণ। কয়েকটি ব্যাংকের কর্মকর্তারা এসব ট্রেড ফেয়ারের স্পন্সরশীপের নামে মোটা অংকের বৈদেশিক মুদ্রা হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। রেমিট্যান্স ফেয়ারে স্টল দেয়ার আহবানে রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরোর সার্কুলার।

সাবেক সরকারের আইসিটি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রি জুনাইদ আহমেদ পলকের বিশেষ সুপারভিশনে নিউইয়র্কে বিশ্বখ্যাত মেডিসন স্কোয়ার গার্ডেনে ‘জয় বাংলা কনসার্ট’ এবং তারও আগে-পিছে সেই সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন একটি বন্ড বাজারজাত করার অভিপ্রায়ে রাষ্ট্রীয় অর্থে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে রোড শো করা হয়েছে বিশাল আয়োজনে।

এসব শো-তে মার্কিন কোন বিনিয়োগকারির দেখা মেলেনি। তবে বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ভূয়া কোম্পানী, আবাসন কোম্পানী ও নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের নামে যারা বিপুল অর্থ ঋণ হিসেবে নিয়েছেন তারা ছিলেন সরব।

ঢাকা থেকে উড়ে এসে সালমান রহমান সন্তুষ্ট রাখার জন্যে কথিত সব রোড শো-তে অংশ নিয়েছেন। এমনকি, ডলারের সংকট তীব্র আকার ধারণকালেও অর্থাৎ ২০২৪ সালের ২৪ মে তারিখেও বাংলাদেশের ৩০ ব্যাংকের ৩০ জন এমডি, বাংলাদেশের শীর্ষ কর্মকর্তাগণের অংশগ্রহণে বড় ধরনের একটি রোড শো’র ঘোষণা দেয়া হয়। সেখানে ৪৫ জন কর্মকর্তা এসেছিলেন মূলত: বিনোদন ভ্রমণে। রোড শো, রেমিট্যান্স ফেয়ার, ট্রেড ফেয়ারের নামে গত ১৫ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে যে সব সমাবেশ হয়েছে কোনটি থেকেই বাংলাদেশ লাভবান হয়নি। নেপথ্যে ছিল অর্থ পাচারের ফন্দি, সম্ভব হলে আদম পাচারের ঘটনাও ঘটেছে। কেউ মুখ খুলেননি বহুবিধ কারণে।

যেমন জয় বাংলা কনসার্ট উপলক্ষে নিউইয়র্ক কন্স্যুলেটে জুনাইদ আহমেদ পলক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকগণের সঠিক প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে মাঝে মধ্যেই ‘জয় ভাই’ উচ্চারণ করতেন। অর্থাৎ সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একমাত্র পুত্রের নাম ভাঙিয়েছেন বিশ্বজিৎ সাহা ।

গত ২০ মার্চ ২০২৫ সংখ্যা সাপ্তাহিক বাংলাদেশ’ এ প্রকাশিত ‘রেমিট্যান্স মেলার নামে দেশ থেকে অর্থপাচারের ফন্দি’ শীর্ষক রিপোর্টের প্রতিবাদ করেছেন বাংলাদেশ-ইউএসএ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট ডা. জিয়াউদ্দীন আহমেদ। তিনি রিপোর্টটিকে ভিত্তিহীন উল্লেখ করে বলেছেন যে, বাংলাদেশ রেমিট্যান্স ফেয়ার আয়োজনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন যে এর মাধ্যমে মেলা আয়োজকদের নামে কুৎসা রটনারর অপচেষ্টা করা হয়েছে, যা অপসাংবাদিকতা, মানহানিকর এবং এদেশের আইনে গর্হিত অপরাধ।

Posted ৩:২৯ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

86-47 164th Street, Suite#BH
Jamaica, New York 11432

Tel: 917-304-3912, 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.