বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই ২০২৩
ছবি : সংগৃহীত
প্রতিবছর কানাডায় প্রবেশকারী লক্ষ লক্ষ ইমিগ্রান্টের বৈধতা লাভের জন্য ইংরেজি বা ফরাসি জানার বাধ্যবাধকতার কারণে তাদেরকে ভাষা জানার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। কিন্তু ভাষা পরীক্ষায় লাভ করা স্কোরের মেয়াদ থাকে মাত্র দুই বছর। অর্থ্যাৎ ওই সময়ের মধ্যে যদি ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাদের ইমিগ্রান্টদের কানাডায় বসবাসের বৈধতার পরীক্ষা না নেয় বা স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমোদন প্রদান না করে, তাহলে তাদের ইংরেজি বা ফরাসি জ্ঞানের স্কোরের মেয়াদ ফুরিয়ে যাবে এবং তাদেরকে পুনরায় ভাষাজ্ঞানের পরীক্ষায় অবতীণ হতে হবে।
গত বছর কানাডার সরকার ৪৩১,৬৪৫ জনকে তাদের দেশে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি দান করেছে। তাদের মধ্যে একটি বড় অংশ, যারা ইংরেজি বা ফরাসি ভাষা জানে না, বা কম জানেন, তাদেরকে ভাষাজ্ঞানের পরীক্ষা দিয়ে স্কোরসহ ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের মুখোমুখি হতে হয়েছে। কানাডার ‘ইমিগ্রেশন রিফিউজি এন্ড সিটিজেনশিপ কানাডা’ (আইআরসিসি), কানাডিয়ান ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ প্রফিসিয়েন্সি ইনডেক্স প্রোগ্রাম (সিইএলপিআইপি) বা ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ ল্যাঙ্গয়েজ টেস্টিং সিস্টেম (আইইএলটিএস)। পরীক্ষাগুলোতে অংশ নেয়ার জন্য ২৫০ ডলারের বেশি খরচ হয় এবং ফলাফল বা স্কোরের মেয়াদ মাত্র দুই বছর।
ফরাসি ভাষার পরীক্ষার ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি প্রযোজ্য এবং ব্যয়ও প্রায় একই রকম। ভাষাজ্ঞানের ফলাফল অনৈক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বা ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করার সময়েও প্রয়োজন হয়।
কানাডার আলবার্টায় বসবাসরত নাইজেরিয়ার নাগরিক উওরি এজিবে ২০২০ সালে কানাডায় আসেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আন্ডাগ্রাজুয়েট করেছেন এবং দুটি বিষয়ে তার মাস্টার্স ডিগ্রি রয়েছে, একটি প্যারিস থেকে আরেকটি সিঙ্গাপুর থেকে। কিন্তু কানাডায় আসার আগে তাকে নাইজেরিয়ায় দু’বার আইইএলটিএস পরীক্ষা দিতে হয়েছে। অথচ নাইজেরিয়ার সরকারি ভাষা ইংরেজি। আইইএলটিএস এর স্কোরই শেষ কথা নয়, স্কোর কত, সেটিরও পয়েন্ট ভ্যালু রয়েছে। আবেদনকারীর স্কোর ভালো হলে তার পয়েন্ট ভ্যালুও বেড়ে যায় এবং স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার সুযোগও বৃদ্ধি পায়। এজিবে’র ২০১৬ সালের আইইএলটিএস স্কোর স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে অনুমোদন লাভের জন্য যথেষ্ট ছিল না। দ্বিতীয় বারের স্কোরে তাকে ইমিগ্রান্ট হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান হয়। তাকে তৃতীয়বার আইইএলটিএস পরীক্ষা দিতে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়ার জন্য।
কানাডার ইমিগ্রেশন এডভোকেটি গ্রুপ মাইগ্রান্ট ওয়ার্কার্স এলায়েন্স ফর চেঞ্জ এর এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর সাইয়িক হুসাইনের মতে, তারা যেসব ইিিমগ্রান্টের সঙ্গে কাজ করেন, তাদের অধিকাংশই প্রথম বারের চেষ্টায় ভাষা পরীক্ষায় পাস করতে পারেন না, এমনকি যাদের মাতৃভাষা ইংরেজি, তাদের বেলায়ও এ সমস্যা হয়। সবকিছু মিলিয়ে তার মনে হয় যে, ভাষা জ্ঞানের পরীক্ষা প্রক্রিয়া এক অর্থ আয়ের বিরাট এক মেশিন। দুইববছরের মধ্যে স্কোর বাতিল হওয়ার অর্থ পুনরায় পরীক্ষা দেওয়ার নামে নগদ অর্থ হাতিয়ে নেওয়া। স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার জন্য আবেদন ফি এর পরিমাণ ১,৩৬৫ ডলার। এজিবে বলেছেন, তাকে ভাষা পরীক্ষা দিতেই প্রায় এক হাজার ডলার ব্যয় করতে হয়েছে। তবে সিটিজেনশিপের পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ভাষাজ্ঞানের স্কোরের আর প্রয়োজন পড়ে না। শুধু আগের পরীক্ষার ফলাফল জমা দিতে হয়।
Posted ১২:০৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh