ড. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ : | বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর ২০২৫
বর্তমান সময়ে সমাজ, দেশ এবং বিশ্ব নিয়ে কথা বলতে সংশয়ে নিমজ্জিত হওয়ার গত্যন্তর নেই। দ্বিতীয় বিশ্বয়ুদ্ধের অব্যবহিত পূর্বে ইউরোপ মহাদেশ থেকে যে দামামা বেজ ওঠেছিল তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে সময় লাগেনি তেমন । এখন যে পরিস্থিতি তা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হতে পারে এমন শংকার জন্ম দেয়।
ইউক্রেনকে তিন বছর যাবত পুতিনের সোভিয়ত আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে লিপ্ত থাকতে হয়েছে। এ যুদ্ধে ইউরোপ বিভক্ত! সারা বিশ্ব কোন না কোন পক্ষ নিচ্ছে বলা চলে। রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া আগ্রাসনে সরাসরি জড়িত। চীন, ইরান পুতিনকে পরোক্ষ, প্রত্যক্ষ ভাবে সহায়তা দিচ্ছে । ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্র তালবাহানা করছে অনেকদিন যাবত। ভারত, ইসরাইল সুস্পষ্ট অবস্থান না নিলেও পুতিনের বিরোধিতা করে কথা বলছে না। পুতিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ন্যাটো জোট মোটামুটি একমত। হ্যাঙ্গেরী ব্যতিক্রম। আরও দু’একটি ছোট দেশ, বিশেষত রাশিয়ার সীমান্তবর্তী, চুপচাপ আছে। কেউ কেউ প্রচন্ড চাঁপের মুখে। আবার, সম্প্রতি বেশ ক’টি দেশ ইস্পাত কঠিন সংকল্প ও পরিকল্পনা নিয়ে কথাবার্তা বলছে।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ড্রোন ওয়াল পরিকল্পনার প্রেক্ষাপটে বেশ কিছু ছোট দেশ ড্রোন ব্যবস্থা শক্তিশালী করার উপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। সম্প্রতি রাশিয়ার ড্রোন ইউক্রেন সীমান্তের নিকটবর্তী কয়েকটি দেশে অনুপ্রবেশ ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই ক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। পোলান্ড, রুমানিয়া ইউ এবং ন্যাটোর কাছে রাশিয়ান ড্রোনের অনুপ্রবেশ মোকাবেলা এবং প্রতিহত করার আবেদন, করেছে। ফিনল্যান্ডের প্রধান মন্ত্রী আলেকজান্ডার ষ্টাব (Alexander Stubb), নরওয়ের প্রধান মন্ত্রী জেনস্ ষ্টলটেনবার্গ (Jens Stoltenberg) এবং এস্তোনিয়ার প্রধান মন্ত্রী কাজা কানাচ (Kaja Kayllas) ড্রোন তৈরী ব্যবস্থা যথাশীঘ্র সুসম্পন্ন করতে দৃঢ সংকল্প ব্যক্ত করেছে।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এ জন্য তিন বছর সময় লাগতে পারে বল্লেন উপরে উল্লেখিত দেশগুলো ১২ থেকে ১৮ মাসের মধ্যে ড্রোন প্রস্তুত ও মোতায়েন সম্ভব বলে বলছে। এদিকে ইরানে ড্রোন যার উপর রাশিয়া অনেকাংশে নির্ভরশীল সেই কারখানা বা প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করার সংকল্পে ইসরাইল, পক্ষান্তরে যুক্তরাষ্ট্র একাত্মতা ঘোষণা করেছে। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে এহেন তৎপরতা প্রতীয়মান হয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কিছুদিন পূর্বে ইউক্রেনকে গ্রীন সিগন্যাল দিয়ে বলেছেন রাশিয়া দেশটির যে পরিমান ভূমি দখল করেছে তা যুদ্ধ করে নিয়ে নিয়ে নিলে তাতে তার সম্মতি থাকবে।
রাশিয়া বিরোধী সম্মিলিত ইউরোপ তা পারবে এমন মনে করে অনেক মহলই। কালো ধোঁয়া আচ্ছন্ন ইউরোপ এমন কাজে সমর্থ হলে বিশ্বে শান্তির সুবাতাস বইবে এমন ধারণা খুবই সঙ্গত। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গাজায় নিধনযজ্ঞ থামানোর জন্য ২০ পয়েন্টের যে চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছেন তা মানতে নেতানিয়াহু সম্মত হয়েছেন। সর্বশেষ খবরে প্রকাশ হামাস সম্মতি জ্ঞাপন করেছে। সব মিলিয়ে কালো অধ্যায় দূরীভূত হয়ে উজ্জ্বলতর বিশ্ব উদ্ভাসিত হোক এ আশাবাদ রইলো।
ম্যানহাসেট হিলস্, নিউ ইয়র্ক
০১ অক্টোবর ২০২৫
Posted ১১:৪৫ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর ২০২৫
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh