ড. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ : | বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
বর্তমান বিশ্বে শান্তি, স্বস্তির আশাবাদ সূদুরপরাহত। মধ্যপ্রাচ্যের গাজা, লেবানন, সিরিয়া, ইউরোপে ইউক্রেন, আফ্রিকায় সুদান, উপমহাদেশে কাশ্মীর উপত্যকা, অশান্ত আফগানিস্তান ইত্যাদি অনেক দেশ, জনপদ বর্তমান সময়ে মৃত্যুপূরী সদৃশ। বৃদ্ধ, শিশু, কিশোর, যুবা, নারী সবাইকে অবলীলাক্রমে হত্যা করা হচ্ছে।
ক্ষমতার বিস্তার, আধিপত্য প্রতিষ্ঠা, একচ্ছত্র শাসন কায়েম করা, ধর্মের নামে দখল, নিধন এগুলো এই আধুনিক সময়ে অতি সাধারণ ব্যাপার বলেই প্রতীয়মান হয়। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন ও একটি জঘন্য মানবাধিকার লংঘনের শামিল। শক্তির দাপটে একটি সার্বভৌম দেশের বেশ কটি বিরাট অঞ্চল দখল কোন নিয়ম, আইনে বৈধ নয় বলাই বাহুল্য। এমনতরো আরো জবরদস্তি বিশ্বের বিভিন্ন অন্চলে সংঘটিত হচ্ছে। আমেরিকা, রাশিয়া, চীন, ইসরায়েল, ভারত এমনসব ক্ষমতাধর রাষ্ট্রসব অন্য দেশের ভূখন্ড দখলের খেলায় মেতে ওঠেছে।
এমনি যখন পরিস্তিতি ঠিক তখনই তুরস্কের বিদ্রোহী দল পিপিকে ‘চচক’ বা কুর্দীস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির একটি সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত জনমনে কিছুটা হলেও স্বস্তির সুবাতাস বইয়ে দিয়েছে। কতটা ফলপ্রসু হবে এ মুহুর্তে বলা মুশকিল কারণ অনেক খেলোয়াডই ঘাপটি মেরে বসে আছে। তবে, তুরস্কের ক্ষমতাসীন সরকার এবং প্রতিপত্তিশালী রাজনৈতিক দলগুলো পিপিকের এহেন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে।
মুসলিম বিশ্বের একমাত্র ক্ষমতাধর রাষ্ট্র তুরস্কই বিশ্বের সবচেয়ে কার্যক্ষম এবং প্রতিপত্তিশীল সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য। প্রেসিডেন্ট তায়েফ এরদোয়ান দীর্ঘদিন ক্ষমতা ধরে রাখতে সমর্থ হয়েছেন।
বহির্বিশ্বে তিনি সম্মানিত, সমাদৃত এবং প্রতিপত্তিসম্পন্ন কুশলী নেতা। আমেরিকাকে সমর্থন দিয়ে তুরস্কের শিয়াদের একটি গ্রুপের সহযোগিতায় সিরিয়ার হাফেজ আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতে মদদ দিয়েছেন। ইরাক থেকে তুর্কি শিয়া তথা কুর্দী বিদ্রোহী দলের মূল ঘাঁটি পর্যুদস্ত করতেও তাকে তেমন বেগ পেতে হয়নি।
ইরাক পুর্বেকার মত তুরস্কের শিয়া বিদ্রোহীদের নির্ভরযোগ্য আশ্রয়স্থল নয়। একই চালে ইরানের খোমেনীর যে বজ্রকঠিন সমর্থন ছিল তাতেও ঢিলা পড়লে অবাক হওয়ার মত তেমন যুক্তি থাকবেন। কারবালা যুদ্ধের ফলশ্রুতিতে শিয়াদের উত্থানের ইতিহাসে মনে হচ্ছে একটি নতুন অধ্যায় রচিত হতে যাচ্ছে।
যদিও বিশ্বে শিয়া সম্প্রদায় সংখ্যা নগন্য (শতকরা মাত্র ১০ ভাগ) কিন্তু মুসলিম বিশ্বে অগুনতি অশান্ত পরিবেশের জন্য এ দলের ভূমিকা মোটেও গৌণ নয় । তুরস্কে সমযোতায় এ সুবাতাস প্রবহমান থেকে শিয়া-সুন্নী বৈরীতার অবসানে অবদান রাখবে এ আশাবাদ থাকবে বিশ্বের শান্তিকামী আপামর মানুষের।
Posted ১১:২৩ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh