বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২০
গত সপ্তাহ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হয়েছে। সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড ভেনশনের (সিডিসি) স্থিরীকৃত অগ্রাধিকার অনুযায়ী যারা করোনা ভাইরাস মহামারীতে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন, অর্থ্যাৎ স্বাস্থ্যকর্মী এবং নার্সিং হোম ও দীর্ঘস্থায়ী সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর স্টাফ ও রোগীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন দেয়ার কাজ চলছে। এর বাইরে প্রথম মাসগুলোতে কাদের ভ্যাকসিন দেয়া হবে তা নিয়ে বিতর্কের অবসান ঘটিয়েছে সিডিসি। তার পরিপ্রেক্ষিতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁিকতে থাকা লোকদের মধ্যে যাদের বয় ৭৫ বছর বা তদুর্ধ তাদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন দেয়ার পক্ষে গত রোববার একমত হয়েছে সিডিসি। একই সাথে প্রথম সারির অত্যবশ্যকীয় কর্মী, যাদের সংখ্যা প্রায় তিন কোটি এবং যাদের মধ্যে রয়েছেন; জরুরী মুহূর্তে সেবা দেয়া আহবানে যারা সাড়া দিতে যান Ñপুলিশ, দমকল কর্মী ইত্যাদি, শিক্ষক ও গ্রোসারি ষ্টোরের কর্মচারিরা এই অগ্রাধিকার তালিকার অন্তর্ভূক্ত হবেন। সিডিসির প্যানেল কমিটি গত মাসে ভ্যাকসিন দেয়ার দ্বিতীয় অগ্রাধিকারের মধ্যে ৬৫ বছর ও তদুর্ধ বয়সের লোকদের অন্তর্ভুক্ত করলেন গত রোববার প্যানেলের অধিকাংশ সদস্য মত প্রকাশ করেন যে নিম্ন আয়ের অশ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠীর সদস্যরা করোনা ভাইরাসে বেশি সংক্রমিত হয়েছে এবং চিকিৎসা সেবা গ্রহণে তাদের সীমিত সুযোগ থাকার কারণে ভাইরাস সংক্রমণে তারা আরো বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। অতএব তাদেরকে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচিতে অন্তর্ভূক্ত করা উচিত।
গত নভেম্বর মাস থেকে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে মৃত্যু হারও বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন ফাইজার ও মরডানা কোম্পানির উৎপাদিত ভ্যাকসিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩,৭০০ জায়গায় পৌঁছে গেছে। কিন্তু যে গতিতে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করার কথা তা সেই গতি পাচ্ছে না বলে হতাশা ব্যক্ত করেছেন অনেকে। এই গতিতে ভ্যাকসিনেশন চলতে থাকলে আগামী জুন মাসের আগে সাধারণ আমেরিকানদের ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হবে না বলেও মত ব্যক্ত করেছেন কেউ কেউ। স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়ক অনলাইন পোর্টালে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের জনসঙখ্যা ৩৩ কোটির অধিক। কিন্তু ফাইজার আশা করছে যে, চলতি ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ আড়াই কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে পারবে, যা প্রত্যেককে দুই ডোজের হিসেবে এক কোটি ২৫ লাখ লোককে ভ্যাকসিন দেয়া সম্পন্ন করা হবে Ñ অর্থ্যাৎ নিউইয়র্ক ও লস এঞ্জেলেস সিটির জনসংখ্যার সমসংখ্যককে ভ্যাকসিন ডিসেম্বরের মধ্যে বা জানুয়ারীর প্রথম সপ্তাহে সম্পন্ন করা সম্ভব। মরডানা বলেছে যে তারা একই সময়ের মধ্যে দেড় কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে পারবে, অর্থ্যাৎ ৭৫ লাখ লোককে জানুয়ারীর প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ভ্যাকসিন দেয়া সম্ভব হবে।
সিডিসি’র সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করছে এমন চিকিসক ও বিশেষজ্ঞরা ইতিপূর্বে ধারণা দিয়েছিলেন যে, দ্বিতীয় পর্যায়ে অত্যাবশ্যকীয় কর্মীদের মধ্যে পড়ে এমন ৯ কোটি আমেরিকানকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য তারা সিডিসিকে সুপারিশ করবেন এবং এজন্য ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটির অত্যাবশীয় কর্মীর সংজ্ঞা ধরে তারা অগ্রসর হবেন। যুক্তরাষ্ট্রের সমাজকে সার্বক্ষণিকভাবে চলমান রাখতে এভাবেই ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচির বাস্তবায়ন করা হবে। যেসব বয়স্ক ব্যক্তি সুস্থ তারা পরবর্তী পর্যায়ভূক্ত হবেন। কিন্তু গত রোববার সিডিসির প্যানেল কমিটি প্রাথমিক ভ্যাকসিন সরবরাহের সীমাবদ্ধতা ও যুক্তরাষ্ট্রে সংক্রমণ হার ও ভাইরাস সংক্রমণজনিত কারণে বয়স্কদের মৃত্যু হার বৃদ্ধি পাওয়ায় যারা তাদের পেশাগত কারণে ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে থাকেন তাদের পাশাপাশি ভ্যাকসিন দেয়ার দ্বিতীয় অগ্রাধিকার হিসেবে বয়স্কদেরও দ্রুত ভ্যাকসিনেশনের সুপারিশ করা হয়েছে। অন্যান্য শ্রেনির অত্যাবশ্যকীয় কর্মী, যেমন নির্মাণ ও রেষ্টুরেন্ট কর্মীরা ভ্যাকসিন গ্রহণের তৃতীয় অগ্রাধিকারের মধ্যে বিবেচিত হবেন। সিডিসির প্যানেল জানিয়েছে যে তারা এখনো পরবর্তী অগ্রধিকার গ্রুপের ভ্যাকসিনেশনের সময় নির্ধারণ করেননি; কারণ তারা এখনো জানে না যে ইতোমধ্যে যাদের অগ্রাধিকার স্থির করা হয়েছে তাদের জন্য যে পরিমাণ ভ্যাকসিনের প্রয়োজন পড়বে, সেই পরিমাণ ভ্যাকসিনের সরবরাহ কাক্সিক্ষত সময়ের মধ্যে পাওয়া যাবে কিনা সে সম্পর্কে প্যানেল নিশ্চিত নয়। কমিটি চেয়ারম্যান ডা: হোজে আর রোমেরো বলেছেন, “আমরা ষ্টেট গভর্নর ও ষ্টেট স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের কাছে কাঠামো প্রেরণ করছি এবং আপাাতত ভ্যাকসিনের সরবরাহের সাথে সঙ্গতি রেখে ভ্যাকসিন দেয়ার কর্মসূচি অব্যাহত রাখার পরামর্শ দিচ্ছি।”
ফেডারেল স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা আশা করছেন যে ফ্রেব্রুয়ারী মাসের মধ্যে ১০ কোটি লোককে দেয়ার মত ভ্যাকসিনের সরবরাহ পাওয়া যাবে এবং ওই সময়ের অগ্রাধিকারের মধ্যে ৫ কোটির অধিক লোক অন্তর্ভুক্ত হবেন, যার মধ্যে ২ কোটি ১০ লাখ স্বাস্থ্য সেবা কর্মী ও ৩০ লাখ দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণকারী থাকবেন। গত রোববার পর প্রথম অগ্রাধিকারভূক্ত ৫৫৬,০০০ লোক প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন বলে সিডিসি জানিয়েছে। সিডিসি ডাইরেক্টর ডা: রবার্ট রেডফিল্ড এখন প্যানেলের সুপারিশ যাচাই করে তার সিদ্ধান্ত জানাবেন যে প্যানেলের সুপারিশ ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচির জন্য নির্দেশনা হিসেবে অনুসরণ করতে হবে কিনা। একটি ওয়ার্কিং কমিটি গ্রুপ প্রথম সারির অত্যাবশ্যকীয় কর্মীদের মধ্যে শিক্ষক, পুলিশ, দমকল কর্মীদের পাশাপাশি স্কুলের সহায়ক কর্মী, ডে-কেয়ার সেন্টারের কর্মী, কারেকশন কর্মচারি, গণপরিবহনের চালক, গ্রোসারি ষ্টোর, পোষ্ট অফিস কর্মী এবং খাদ্যসামগ্রী প্রস্তুতের সাথে জড়িত কর্মীদের অন্তর্ভূক্ত করার পরামর্শ দিয়েছে। কিন্তু এই গ্রুপের সুপারিশ সুনির্দিষ্ট নয়। সিডিসি প্যানেল ও এডভাইজরি কমিটি অন ইম্যুনাইজেশন প্রাকটিস ষ্টেটগুলোকে পরামর্শ দিয়েছে জনগণের কাজে অত্যাবশ্যকীয় কর্মী নিরূপণ করা যে কারা ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
দোকানের কর্মী ও শিক্ষকদের অগ্রাধিকারের সুপারিশ
করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে ইতোমধ্যে দেশটিতে ফাইজারের করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে আবার মডর্নার করোনা ভ্যাকসিনও অনুমোদন দিয়েছে দেশটি। তবে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দেশটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই ভ্যাকসিন নাগরিকদের মধ্যে প্রয়োগ করছে। এর মধ্যে দেশটির করোনা সম্পর্কিত ফেডারেল উপদেষ্টা পরিষদ তাদের নতুন একটি সুপারিশে মুদি দোকানের কর্মী, শিক্ষক, ডে কেয়ার স্টাফ-সহ অন্য পেশার সম্মুখযোদ্ধা ও ৭৪ বছরের অধিক বয়সী নাগরিকদেরও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনার টিকা প্রদানের সুপারিশ করেছে। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী পর্যায়ে ৪ কোটি ৯০ লাখ আমেরিকানকে টিকা প্রদান করা দরকার। এর মধ্যে মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র, মুদি দোকানের কর্মী, কারারক্ষী, গণ-পরিবহণ কর্মী, অনলাইনে কাজের সুযোগ নেই এমন অত্যাবশ্যকীয় সংস্থার কর্মচারীরা এ তালিকায় থাকবেন। কারণ, তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। এক কোটি ৯০ লাখের বয়স ৭৫ বছরের অধিক। তারাও করোনায় সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছেন। উল্লেখ্য, করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের ২৫% হলেন এই বয়সী এবং ইতিমধ্যেই মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছিলেন প্রবীণ। অন্যদিকে, আমাজন ও উবার-সহ বেশ কয়েকটি সংস্থার পক্ষ থেকে কংগ্রেস ও হোয়াইট হাউজে দেন-দরবার শুরু করছে যেন তাদের কর্মীরাও অগ্রাধিকারের তালিকায় থাকেন।
ফাইজার ও মডার্নার ভ্যাকসিন কোনটি বেশি কার্যকর?
করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ভ্যাকসিন কর্মসূচি শুরু হয়েছে। কোভিড-১৯ থেকে সুরক্ষায় প্রথম ভ্যাকসিন হিসেবে ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি করোনার টিকা দেয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আর দ্বিতীয় ভ্যাকসিন হিসেবে মডার্নার উদ্ভাবিত টিকা জরুরি ব্যবহারের সুপারিশ করেছে মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ)। চলতি সপ্তাহের মধ্যে মডার্নার টিকার প্রয়োগ শুরু হবে দেশটিতে। খবর সিএনএনের। ফাইজার ও মডার্নার তৈরি করোনা টিকার মধ্যে মৌলিক কিছু পার্থক্য রয়েছে। ফাইজারকে যুক্তরাষ্ট্রের জায়ান্ট ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি হিসেবে ধরা হয়। অন্যদিকে মডার্না যার সংক্ষিপ্ত রূপ আরএনএ। এটি ম্যাসাচুসেটস রাজ্যের কেমব্রিজভিত্তিক একটি বায়োটেক সংস্থা। গত ৩ মার্চ মডার্নার টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল অনুমোদন দেয় এফডিএ। প্রথম ট্রায়াল হয় ২৭ মার্চ। মডার্না টিকাটিই যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম সরকারি অর্থায়নে করোনা টিকা, যারা তিন ধাপে ট্রায়াল সম্পন্ন করেছে। গত ৩০ নভেম্বর সংস্থাটি টিকাটির জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন চেয়ে এফডিএ-তে আবেদন করেছে। পরীক্ষামূলক ট্রায়ালে মডার্নার টিকা করোনা প্রতিরোধে কার্যকর এবং সুরক্ষিত বলে প্রমাণিত হয়েছে। ফাইজার ও মডার্নার দুটি টিকাই একই ধরণের কাজ করে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও মানব সেবা বিভাগের সচিব আলেক্স অজার বলেছেন, ফাইজার ও মডার্নার টিকার মধ্যে কয়েকটি মূল পার্থক্য রয়েছে। যা মডার্নার টিকাকে ‘আরও নমনীয়’ করেছে।
মডার্না ও ফাইজারের উভয়ের টিকা করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রায় ৯৫ শতাংশ কার্যকর। গত ১৫ ডিসেম্বর সিএনএন-এর ‘নিউ ডে’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এফডিএর টিকা উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ড. পল অফিট বলেন, দু’টি টিকা মোটামুটি এক বৈশিষ্ট্যের বলে আমার মনে হয়। মডার্না ও ফাইজারের প্রস্তুতকৃত টিকাগুলো হলো এমআরএনএ টিকা। যদিও কিছুটা ভিন্ন কাঠামো রয়েছে। আর এজন্য পরিবহন ও সংরক্ষণ করার পার্থক্য রয়েছে। সংরক্ষণের জন্য মডার্নার টিকা অনেকটা স্বস্তিদায়ক। এই টিকাটি ফাইজারের টিকার মতো উচ্চ মাত্রার ঠান্ডায় রাখতে হবে না। ফাইজার আবিষ্কৃত টিকা সংরক্ষণ করতে হয় মাইনাস ৭৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। মাত্র পাঁচদিন এই ভ্যাকসিন রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করা যাবে। অন্যদিকে মডার্নার টিকা সংরক্ষণ করতে হবে মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বাড়ির ফ্রিজেও এই টিকা রাখা যাবে। ৩০ দিন পর্যন্ত ফ্রিজে সংরক্ষণ করা যাবে। ফলে এই টিকা স্থানান্তর করা সহজ। এই দুই ভ্যাকসিনের তুলনা করলে দেখা যায়, ফাইজারের ভ্যাকসিনগুলি হাসপাতালের মত প্রতিষ্ঠিত অবকাঠামো ও বড় প্রতিষ্ঠানে বেশি ব্যবহৃত হবে। অন্যদিকে স্থানীয় চেইন বা ফার্মাসিস্টের মত ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানেও মডার্নার টিকা ব্যবহার করা যাবে। মডার্নার টিকাটি ৪ সপ্তাহের ব্যবধানে দু’বার ১০০ মাইক্রোগ্রাম করে ডোজ হিসাবে দেয়া হয়। আর ফাইজারের ভ্যাকসিনের দুই ডোজ ২১ দিনের ব্যবধানে ৩০ মাইক্রোগ্রাম।
অনুমোদিত হলে মডার্না ভ্যাকসিনটি ১৮ এবং তার চেয়ে বেশি বয়সীদের মধ্যে ব্যবহার করা হবে। ফাইজারের ভ্যাকসিনটি ১৬ এবং তার বেশি বয়সীদের জন্য অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ফাইজারের টিকার মতো, মডার্নার টিকা আরএনএ বা এমআরএনএ সরবরাহ করে। যা জেনেটিক কোডের একটি ক্ষুদ্র অংশ নিয়ে শরীরকে শেখায় যে কিভাবে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে হবে এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে হবে। একবার ইনজেকশন দেয়ার পরে শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলে অ্যান্টিবডি তৈরি করে। যদি কোনো ব্যক্তি টিকা নেয়ার পর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন তাহলে অ্যান্টিবডি ভাইরাস প্রতিরোধে কাজ শুরু করে।
সম্প্রতি মডার্নার টিকার বিষয়ে এফডিএ ৫৪ পৃষ্ঠার একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, টিকাটিতে বিশেষ কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। মারাত্মক ক্ষতিকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই। এফডিএ বলছে, ৩০ হাজার মানুষের ওপর পরীক্ষায় মডার্নার টিকা ৯৪.১ শতাংশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার জরুরি ব্যবহারের জন্য টিকাটি অনুমোদনের সুপারিশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ)। অনুমোদন পেলে ফাইজার-বায়োএনটেক টিকার পর এটিই হবে যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ভ্যাকসিন। এফডিএ জরুরি চিকিৎসায় মডার্নার টিকা ব্যবহারের সুপারিশ করেছে। এই টিকা দ্রুত করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে কাজ করবে বলে বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছেন।আশা করা হচ্ছে, শুক্রবারের মধ্যেই টিকাটির অনুমোদন দেবে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী সোম বা মঙ্গলবারের মধ্যে দেশটিতে মডার্নার টিকা প্রয়োগ শুরু হবে। এরইমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে প্রথমবারের মতো ফাইজারের টিকা দেয়া শুরু হয়েছে। গত সপ্তাহে এফডিএ টিকাটির ব্যবহারে অনুমোদন দেয়। মডার্নার টিকার অনুমোদনের বিষয়ে উপদেষ্টা কমিটির ভোটাভুটিতে ২০ জন বিশেষজ্ঞ ভোট দেন। তারা সবাই টিকাটির ব্যবহারে অনুমোদন দেওয়ার সুপারিশ করেন। তাদের মতে, ১৮ ও এর চেয়ে বেশি বয়সীদের জন্য টিকাটি ঝুঁকিপূর্ণ না। এর আগে মডার্না তাদের এ টিকার কার্যকারিতা ৯৪ শতাংশ বলে ঘোষণা করে। অনুমোদনের পর মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি থেকে ২০০ মিলিয়ন ডোজ টিকা কিনছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। অনুমোদন পেলে সঙ্গে সঙ্গে ৬ মিলিয়ন ডোজ সরবরাহ করবে সংস্থাটি।
Posted ৯:৩৪ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh