বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২০
কংগ্রেস কর্তৃক গত সোমবার পাসকৃত স্টিমুলাস প্যাকেজে স্বাক্ষর না দেয়ার হুমকি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। গত মঙ্গলবার এক ভিডিও টুইট বার্তায় ট্রাম্প বলেছেন বিলটি সংশোধন করতে হবে। এটি লজ্জাজনক, অপচয় ও অপ্রয়োজনীয় বলে বর্ণনা করেছেন তিনি। তিনি কর্মহীন মানুষের জন্য ব্যক্তিগত আর্থিক সুবিধা এককালীন ৬০০ ডলারের পরিবর্তে একক ২,০০০ ডলার ও দম্পতির ক্ষেত্রে এককালীন ৪,০০০ ডলার করার আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি কংগ্রেসকে বলছি এই বিল সংশোধন করুন। আমার কাছে একটি গ্রহণযোগ্য বিল পাঠান অথবা পরবর্তী প্রশাসনের জন্য অপেক্ষা করুন। তারা হয়তো এর চেয়ে ভালো কোনো কোভিড ১৯ বিল নিয়ে আসবে এবং হতে পারে পরবর্তী প্রশাসনে আমিই থাকব।”
করোনা ভাইরাস ইস্যুতে কংগ্রেস ৯০০ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা বিল পাস করেছে এবং এর আগে প্রায় ছয় মাস যাবত অনেক দরকষাকষি হয়েছে ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান আইন প্রনেতাদের মধ্যে। ট্রাম্প দাবি করছেন এই বিলের অংককে তিনগুণ করতে হবে। ফলে তার এমন হুমকিতে এই বিলটির ভবিষ্যত নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। যদি তিনি এই বিলে স্বাক্ষর না করেন তাহলে মার্কিন সরকারে আংশিক শাটডাউন বা অচলাবস্থা দেখা দিতে পারে। এর মধ্য দিয়ে তিনি কার্যত তার দল রিপাবলিকানদের বিরুদ্ধেই অবস্থান নিয়েছেন। ওদিকে তিনি নির্বাচনে পরাজয় স্বীকার না করলেও একের পর এক সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে চলেছেন। প্রেসিডেন্টের সাংবিধানিক ক্ষমতা ব্যবহার করে ক্ষমতার শেষ পর্যায়ে এসে গত ২২ ডিসেম্বর তিনি ক্ষমা করে দিয়েছেন ১৫ জনকে। এর ফলে তারা কারাগার থেকে মুক্তি পাচ্ছে।
এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি, বার্তা সংস্থা রয়টার্স, সিএনএন। এতে বলা হয়, মার্কিন কংগ্রেস করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে যেসব মানুষ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের সহায়তার জন্য ৮৯২০০ কোটি ডলারের বিল অনুমোদন করে। এই বিলে এখন শুধু প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষর বাকি আছে। তিনি স্বাক্ষর দিলেই এটি পূর্ণতা পায়। কিন্তুগত ২২ ডিসেম্বর ট্রাম্প এ বিলে ভেটো দেয়ার হুমকি দিয়েছেন। রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার মেয়াদ আছে আর এক মাসেরও কম। এ সময়ে তিনি যে হুমকি দিয়েছেন, তাতে কংগ্রেসে রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট উভয় দলের পাস করা এই প্রণোদনামুলক উদ্যোগ টালমাটাল অবস্থায় নিয়ে যেতে পারে। এক টুইটে ট্রাম্প বলেছেন, যেমনটা প্রত্যাশা করা হয়েছিল তার থেকে ভিন্ন একটি বিল আমার টেবিলে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে তারা (কংগ্রেস)। এটা সত্যিই এক অপমানজনক বিষয়।
উল্লেখ্য, গত ২১ ডিসেম্বর রাতে কংগ্রেস বিলটি পাস করে। কিন্তু ট্রাম্প চাইছেন এই বিলটিকে সংশোধন করে এর পরিমাণ প্রতিজন ব্যক্তির জন্য ২,০০০ ডলার এবং দম্পতির জন্য ৪,০০০ ডলার করা হোক। বাইরের দেশকে, স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউট, মাছের প্রজননসহ অন্যান্য খাতে যে অর্থ সহায়তা দেয়া হয় সেসব বিষয়ে আপত্তি তুলেছেন ট্রাম্প। তিনি নির্বাচনে এখনও পরাজয় মানেননি। অথচ একের পর এক সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে যাচ্ছেন। এখনও তিনি নির্বাচনের ফল পাল্টে দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এক টুইট ও ফেসবুক পোস্টে নিজের রিপাবলিকান পার্টির নেতাদের ওপর চড়াও হয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, রিপাবলিকান পার্টিকে ভুলে গেলে চলবে না যে তার সাহায্য ছাড়া সিনেটে দলের আটটি আসন কম হতো। মার্কিন সিনেটে এখন পর্যন্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখার কৃতিত্ব তার নিজের বলেই দাবি করছেন ট্রাম্প। আগামী ২০ শে জানুয়ারি দুপুর পর্যন্ত ক্ষমতার মেয়াদ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের। এ সময়ের মধ্যে তিনি অনেক কিছু করে ফেলতে পারেন। সাংবিধানিক নির্বাহী ক্ষমতাবলে ক্ষমা করে দিতে পারেন যেকাউকে। এখনও তার হাতে কয়েকদিন সময় আছে। এ সময়ে তিনি আর কি কি করেন তা এখন দেখার বিষয়।
Posted ৯:৩৮ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh