নিউইয়র্ক | বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারি ২০২৪
দেশে ফিরে বিয়ে করা হলো না নিউইয়র্ক প্রবাসী মামুনের। গত ১৭ জানুয়ারি মঙ্গলবার রাত সোয়া ১১টার দিকে গাড়ি চালানোর সময় ব্রেইন স্ট্রোকে মারা যান তিনি। মৃত মামুনুর রশীদ ওরফে মামুন (৩৬) নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার আমিশাপাড়া ইউনিয়নের পদিপাড়া গ্রামের সফি উল্যাহর ছেলে। যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী মহসিন ওরফে লাল মিয়া জানান, নিউইয়র্ক থেকে পেনসিলভেনিয়া যাত্রী নিয়ে যান মামুন। এরপর যাত্রী নামিয়ে সেখান থেকে নিউইয়র্ক ফেরার পথে গাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়ে তিনি। একপর্যায়ে বমি করে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন মামুন। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। তিন ভাই চার বোনের মধ্যে মামুন সবার বড় ছিল। ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে যান। বৈধ কাগজপত্র পাওয়ার পর দেশে এসে বিয়ে করার কথা ছিল তার। প্রবাসী যুবকের মরদেহ দেশে আনতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে স্বজনেরা।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে সোনাইমুড়ী উপজেলার আমিশাপাড়া ইউনিয়নের নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় মামুনের মরদেহ। এ সময় একনজর দেখার জন্য বাড়িতে ভিড় জমান প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনেরা। মৃত মো. মামুনুর রশিদ সোনাইমুড়ী উপজেলার আমিশাপাড়া ইউনিয়নের পদিপাড়া গ্রামের হাসমত উল্যাহ হাজী বাড়ির শফি উল্যাহর ছেলে। তিন ভাই, চার বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন মামুন। তিনি ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান।
জানা গেছে, গত ১৬ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) স্থানীয় সময় রাত ১১টার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়ায় উবারে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে নিউইয়র্কে ফেরার পথে স্ট্রোক করে অসুস্থ হয়ে পড়েন মামুন। এরপর তার সহকর্মীরা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সোমবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে তার মরদেহ নিজ গ্রামে এলে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। এক নজর মরদেহ দেখার জন্য আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও এলাকার শত শত নারী-পুরুষ ভিড় করেন।
জানাজায় অংশ নেওয়া মৃত মামুনের ছোট ভাই রিয়াদ খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ভাই বহু বছর পর আমাদের বাড়িতে এসেছে। কিন্তু এমন আসা আমরা কখনো কল্পনাও করিনি। আমার ভাই আমার সঙ্গে কথা বলছে না। আমরা সবাই মিলে তাকে কবরস্থানে রেখে এসেছি। কষ্টে আমাদের বুকটা ফেটে যাচ্ছে। আমার ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন প্লিজ।
নিহতের বাবা শফি উল্যাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি আমার সন্তানকে দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি। তিন ভাই, চার বোনের মধ্যে মামুন সবার বড়। সে উবারে যাত্রী আনা নেওয়া করতো। বৈধ কাগজপত্র পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি আসার কথা ছিল। আমাদের সব শেষ হয়ে গেল। আপনারা আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন।
যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত মামুনের সহকর্মী সোহাগ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, মামুন যাত্রী নামিয়ে ফেরার পথে বমি করে। আমরা তাৎক্ষণিক তাকে পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সামনের আগস্ট মাসে তার কাগজপত্র পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাগজপত্র পাওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়।
আমিশাপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান সেলিম ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে কফিনবন্দি হয়ে ফিরলেন মামুন। সংসারের হাল ধরতে সে বিদেশ পাড়ি দিয়েছে। তবে ভাগ্য তার সহায় হয়নি। তাকে অশ্রুসিক্ত নয়নে শেষ বিদায় দিয়েছে সবাই।
Posted ৭:৩৮ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারি ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh