বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই ২০২৩
ফাইল ছবি
গ্রীস্মের গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা নিউইয়র্কারদের। তাপমাত্রা উঠে যাচ্ছে ৯০ ডিগ্রি ফারেনহাইটে। তাপমাত্রার অনুভব আরো বেশি। এ পরিস্থিতিতে নিউইয়র্ক সিটি সাবওয়ের কারগুলোর এয়াকন্ডিশনিং সিস্টেমও কাজ করে না। যারা ভেতরে উঠতে পারেন, তারা হাতপাখার মতো হাত দিয়ে অথবা হালকা পুস্তিকা নাড়েন গরম থেকে বাঁচার আশায়। কেউ বদ্ধ কাঁচের জানালার পাশে বসে আশা করেন, ‘আহা! কাঁচের কোনো ফাঁক গলে যদি একটু বাতাস আসতো! কিন্তু তা হয় না। সাবওয়ের কোনো কোনো কারের এয়ারকন্ডিশনিং সিস্টেম কাজ করে না। যেমন করে না, সিটি সাবওয়ের ওয়ান লাইনে চলাচলকারী ৩৭ বছরের পুরোনো ১৮৫৯ নম্বর কারটি। গত সপ্তাহের বুধবার বাইরের তাপমাত্রা ৯০ ডিগ্রির বেশি ছিল এবং সাবওয়ে কারের বিকল এয়ারকন্ডিশনিং এ ১৮৫৯ নম্বর কারের ভেতরের তাপমাত্রা আরো অধিক ছিল। এটিকে চার দফা সার্ভিস থেকে প্রত্যাহার করে মেরামত করা হলেও গত ছয় বছর ধরে এটি ঠিক হয়নি।
সিটির বাস ও সাবওয়ের পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান মেট্টোপলিটান ট্রানজিট অথরিটির (এমটিএ) মূল প্রতিষ্ঠান নিউইয়র্ক ট্রানজিট অথরিটির প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ড্যাভি বলেছেন যে, সাধারণত এ ধরনের ঘটনা ঘটে না। তিনি বলেন সাবওয়ের প্রায় ৬ হাজার কার ৯৯.৪ শতাংশ সময় পর্যন্ত লাইনে চালু থাকে, যা আগের বছরের তুলনায় ৮.৫ শতাংশ অধিক ভালো এবং দুই বছর আগের চেয়ে ৩৩ শতাংশ ভালো।
তিনি আরো বলেন, আমাদের প্রতিটি যাত্রীর কঠোর অবস্থা আসলে সকলের জন্য কঠোর অবস্থা। কিন্তু আমাদের অধিকাংশ কার ভালো সার্ভিস দিচ্ছে। ব্যতিক্রম হলেই আমরা দ্রুত মেরামতের উদ্যোগ গ্রহণ করছি। প্রচন্ড তাপে আমরা আমাদের যাত্রীদের এই সান্তনা অবশ্যই দিতে পারি, যাতে তারা গরমের মধ্যে লাইনের কোনো স্থানে আটকা না পড়ে। কিন্তু গত সপ্তাহের বুধবার লুলু জেনকিনস (৩৮) নামে এক যাত্রী নিতান্তই ভাগ্যহত ছিলেন। বেলা সোয়া দু’টার মধ্যে তিনি সাবওয়ের তিনটি কারে উঠেছেন এবং কোনোটিতেই এয়ারকন্ডিশনিং সিস্টেম কাজ করেনি। অবশেষে তিনি গরম সহ্য করতে না পেরে সিট থেকে দাঁড়ান এবং কার থেকে প্ল্যাটফর্মে নেমে যান। তার শরীর বেয়ে ঘাম ঝরছিল। কোনো স্টেশনে থামতে ওয়ান ট্রেনের ১৮৫৯ নম্বর কার থেকে যাত্রীরা অনেকটা দৌড়ে বের হয়ে যাচ্ছিল।
মি, ডেভি বলেন, বিভিন্ন কারণে সাবওয়ে কারের এয়ারকন্ডিশনিং বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ‘ফেরন’ নামে একটি গ্যাস, যা এয়ারকন্ডিশনিংএ জরুরী, সেই গ্যাস শেষ হয়ে যেতে পারে অথবা ফিল্টার বন্ধ হয়ে যেতে পারে। অনেক সময় কার পুরোনো হয়ে গেলেও এয়াকন্ডিশনিং এর সমস্যা হতে পারে। পুরোনো কারের সংখ্যা সাবওয়ের ‘এ,’ ‘সি’ এবং ‘ওয়ান’ লাইনে বেশি। রকওয়ে শাটল লাইনের কারেও এ সমস্যা জটিল বলে বর্ণনা করেন তিনি। এমটিএ হাজার হাজার সাবওয়ে কার কিনছে এবং ‘এ’ লাইনে নতুন কার প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। নতুন কারগুলোতে স্বয়ংক্রিয় টেম্পারেচার সেন্সর রয়েছে এবং কারের ভেতর তাপমাত্রা বেড়ে গেলে তা সেন্সর তা শণাক্ত করতে পারে। ডেভি যাত্রীদের উৎসাহিত করেছেন কোনো যাত্রী যদি কারে অধিক তাপমাত্রা আঁচ করেন, তাহলে তা কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট করতে, তাহলে অবস্থা বুঝে এক থেকে ছয় ঘন্টার মধ্যে এয়ানকন্ডিশনিং সিস্টেমের ত্রুটি সারিয়ে ফেলা সম্ভব। তিনি আরো বলেন, টেম্পারেচার গান নিয়ে পরীক্ষা করার মতো ভ্রাম্যমান ম্যানেজার ও সুপারভাইজার নেই। কর্মীরা তাদের থার্মোমিটার মনিটর কারের ছাদে ধরে এবং ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার মুহূর্তে পরীক্ষা করে। কিন্তু বর্তমান অবস্থায় সহসা গরম থেকে সাবওয়ে যাত্রীরা রক্ষা পাবেন বলে আশা করা যায় না। অতএব যাদের স্বাস্থগত সমস্যা আছে, তাদের জন্য এটি এক বিপজ্জনক অবস্থা।
Posted ৩:০২ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh