বাংলাদেশ অনলাইন : | শনিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২২
প্রতীকী ছবি
নববর্ষের দিন পার্কে প্রেমিক যুগলের ভিডিও ধারণ ও তাদের হেনস্থা করার অভিযোগে কুমিল্লা ডিবি (গোয়েন্দা বিভাগ) পুলিশের দুই সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তারা হলেন ডিবির কনস্টেবল নজরুল ইসলাম ও রোমান হাবিব রবিন। ১৪ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) রাতে তাদের বরখাস্ত করা হয়। ১৫ এপ্রিল (শুক্রবার) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিবি পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (পরিদর্শক) মুজিবুর রহমান।
পহেলা বৈশাখের দিন কুমিল্লা নগরের ধর্মপুর এলাকার একাদশ শ্রেণির ছাত্র ও নবম শ্রেণির এক ছাত্রী কুমিল্লা ধর্মসাগরপাড় নগর পার্কে বসে গল্প করছিল। জেলা ডিবি কার্যালয়ের পাশেই পার্কটির অবস্থান। প্রতিদিন সেখানে শত শত মানুষ জড়ো হয়। নববর্ষের উৎসবে আরও অনেকের মতো ওই কিশোর-কিশোরী পাশাপাশি বসে আড্ডা দিচ্ছিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, লাল শাড়ি আর লাল পাঞ্জাবি পরা ওই কিশোর-কিশোরীকে দেখে দূর থেকে মুঠোফোনে ভিডিও করতে থাকেন ডিবি পুলিশের এক সদস্য। পেছন থেকে ভিডিও করতে করতে তাদের সামনে গিয়ে পরিচয় জানতে চান তিনি। তাদের দাঁড় করিয়ে একের পর এক প্রশ্ন করতে থাকেন ওই সদস্য। সঙ্গে থাকা ডিবির আরেক সদস্য কিশোরীকে মাস্ক খোলার জন্য বলতে গিয়ে তাকে ‘তুই’ করে সম্বোধন করেন। ওই কিশোরকে বলেন, ‘মুড়ায়া ছাটনা ছিরালামু একবারে।’
ডিবি সদস্যরা এ সময় মেয়েটির বাবার মুঠোফোন নম্বর চাইলে তারা ভয়ে মাফ চাইতে থাকে এবং মেয়েটির বাবা বিদেশ থাকেন বলে জানায় ছেলেটি। তখন পাশ থেকে ডিবির অপর সদস্য বলেন, ‘বিদেশ থেকে (কিশোরীর বাবা) আইব এখন, নইলে অফিসে নিয়া যামু। অফিস থেকে অভিভাবক আইসা নিয়া যাবে।’
ভিডিওটিতে ছেলেটিকে কয়েকবার মাফ চাইতে দেখা যায়। কিন্তু কর্ণপাত করেননি পুলিশ সদস্যরা। ১ মিনিট ১০ সেকেন্ডের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সুপারের নির্দেশে জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এই দুই সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। এ বিষয়ে ডিবি পুলিশের ওসি মুজিবুর রহমান বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি সদস্যরা ভিডিও করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে কীভাবে তা অন্যদের কাছে গেল, তা নিশ্চিত করতে পারেননি। পুলিশ সুপারের নির্দেশে দুজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এখন বিধি মোতাবেক তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হবে। তদন্তের পর বিষয়টি প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, ডিবি সদস্যরা বলেছেন, ভিডিওটি তারা কয়েকজন দেখেছেন। তবে ফেসবুকে শেয়ার করেননি। কার মাধ্যম ভিডিওটি ছড়িয়ে দেওয়া হলো, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, ভিডিওটি দেখেছি। বিষয়টি আমাকে কয়েকজন মৌখিকভাবেও জানিয়েছেন। এটি নজরে আসার পর বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই দুই পুলিশ সদস্যকে চিহ্নিত করা হয়। এরপর রাতেই তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কার মাধ্যমে ভিডিওটি ডিবির সদস্যদের মোবাইল থেকে অন্যত্র ছড়িয়েছে, তা তদন্ত করা হচ্ছে।
Posted ৫:৫১ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২২
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh