বাংলাদেশ অনলাইন : | সোমবার, ২১ জুন ২০২১
ছবি : সংগৃহীত
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এবং পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান রেললাইনের একটি রুট নিয়ে ফেসবুকে পরস্পর মুখোমুখি অবস্থানে। গত ১৪ জুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেটি পড়ে ২০ জুন রোববার পাল্টা পোস্ট দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেনের ভূমিকায় বিস্মিত হয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, দুজনের মধ্যে দীর্ঘ ৫০ বছরের বন্ধুত্ব, একই সঙ্গে মন্ত্রিসভার সহকর্মী হয়েও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভূমিকা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
গত ১৪ জুন দেওয়া সেই স্ট্যাটাসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিখেছিলেন, ‘মান্নান আমার বন্ধু, মান্নানের সাথে আমার সম্পর্ক ৫০ বছরের অধিক। আমি এবং মান্নান সুখে-দুঃখে সব সময়ই ছিলাম এবং আছি, ভবিষ্যতেও আমৃত্যু থাকব বলেই আশা করি। দুঃখজনক যে সিলেটের একটি স্থানীয় সংবাদপত্রে দেখলাম, আমার এবং মান্নানের মধ্যে নাকি দ্বন্দ্ব রয়েছে এবং এই দ্বন্দ্বের কারণে নাকি সিলেটের অনেক উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে! কে বা কারা এই সংবাদটি প্রচার করছেন জানি না, তবে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট। যে বা যারা এটি প্রচার করছেন, তারা হয়তোবা কোনো বিশেষ বা অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য করছেন। ফেসবুকে এই স্ট্যাটাসটির প্রয়োজন আছে বলে মনে করছি না, তবে একটি বিশেষ কারণে দিচ্ছি আর তা হলো আমার এবং মান্নানের স্থানীয় অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী রয়েছেন আর তাদের মধ্যে যাতে কোনো বিভ্রান্তির সৃষ্টি না হয়।’
এই স্ট্যাটাসের পাল্টা স্ট্যাটাস দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী। রোববার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ‘পরিকল্পনামন্ত্রীর দপ্তর’ ফেসবুক পেজে লেখা হয়, ‘এটা সত্য যে ড. মোমেনের সঙ্গে আমার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘ ৫০ বছরের। কিন্তু তিনি সুনামগঞ্জের পাঁচজন সংসদ সদস্যের পাশে রয়েছেন উল্লেখ করে রেলমন্ত্রীর কাছে যে আধা সরকারি পত্র (ডিও) দিয়েছেন, সেটি আমাকে বিস্মিত করেছে। তিনি যে পাঁচজন এমপির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, সেখানে একজন জাতীয় পার্টির এমপিও রয়েছেন। আবদুল মোমেন ভালো করেই জানেন, আমিও (মান্নান) সুনামগঞ্জের একজন সংসদ সদস্য। সুনামগঞ্জের সঙ্গে ছাতকের রেললাইন নির্মাণ নিয়ে তিনি যেমন অবগত, ঠিক তেমনি বিষয়টি আমিও অবগত। আমি যতটুকু জানি, তার বর্ণিল জীবনে তিনি কখনো সুনামগঞ্জে যাননি। সুনামগঞ্জে কখনো তার পা পর্যন্ত পড়েনি। অথচ তিনি রেললাইন নির্মাণ নিয়ে একটি পক্ষের অবস্থান নিয়েছেন। অন্য কেউ হলে এই পরিস্থিতিতে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইতেন। কিন্তু আমাদের দীর্ঘ ৫০ বছরের বন্ধুত্ব একই সঙ্গে আমরা দুজনেই মন্ত্রিসভার সদস্য অথচ তিনি আমার সঙ্গে এ বিষয়ে এতটুকু যোগাযোগ করেননি। আমার সঙ্গে কথা না বলে অন্য পাঁচজন সংসদ সদস্যের পক্ষ নিয়ে রেলমন্ত্রীকে ডিও লেটার পাঠানো কিছুতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।’
ফেসবুকে স্ট্যাটাসের বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী জানেন বলে তিনি জানিয়েছেন। রেললাইন নির্মাণ নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, সেটি সুরাহা হওয়া দরকার বলেও মন্তব্য করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, ‘রেললাইনের রুট নিয়ে নানা ধরনের কথা হচ্ছে। আমি চাই, বিষয়টি এখানেই শেষ হোক। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমার সহকর্মী, তিনি চাইলে আমার সঙ্গে কথা বলতে পারতেন।’
জানা গেছে, সুনামগঞ্জ থেকে ছাতক পর্যন্ত রেললাইন হওয়ার কথা রয়েছে। রেললাইনের রুট নির্ধারণ নিয়ে রেলমন্ত্রী কথা বলেছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রীর সঙ্গে। যেখান দিয়ে রুটটি করলে লাভজনক হয়, পরিবেশ-প্রতিবেশের কোনো ক্ষতি না হয়, সেদিক দিয়েই করার কথা বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
রেললাইনের রুট নির্ধারণ নিয়ে তিন থেকে চারটি রুট নিয়ে আলোচনা চলছে। এরই মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন সুনামগঞ্জের পাঁচজন সংসদ সদস্যের পক্ষে অবস্থান নিয়ে একটি ডিও লেটার দেন রেলমন্ত্রীকে। এ বিষয়টি নিয়েই প্রথমে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পরে পরিকল্পনামন্ত্রী স্ট্যাটাস দেন।
Posted ৮:০৩ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২১ জুন ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh