রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০২৪ | ১৮ কার্তিক ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ নিয়ে দেশে তোলপাড়

ঢাকা :   |   শুক্রবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২০

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ নিয়ে দেশে তোলপাড়

বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণ প্রশ্নে বিতর্ক এখন তুঙ্গে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে গত ২৯ জুলাই চট্টগ্রাম মহা নগরের হালিশহর বড়পোল মোড়ে স্থাপিত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর একটি ভাস্কর্য ‘বজ্রকণ্ঠ’। এদিকে, ঢাকার প্রবেশ দ্বার ধোলাইপাড় চত্বরে বঙ্গবন্ধুর আর একটি ভাস্কর্য স্থাপনের প্রশ্নে বিরোধিতা শুরু করে ইসলামপন্থি বিভিন্ন সংগঠন। এখানে ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপনের পরিবর্তে আল্লাহর ৯৯ নাম খচিত স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন আলেমসমাজ। এ দাবিতে গত ১২ অক্টোবর রাজধানীর যাত্রাবাড়ী-ধোলাইপাড় চত্বরে গণজমায়েত করেছে বাংলাদেশ ইমাম মুসল্লি ঐক্য পরিষদ নামে একটি সংগঠন। গত ১৩ নভেম্বর ঢাকার গেণ্ডারিয়ার ধূপখোলার মাঠে ‘তৌহিদী জনতা ঐক্যপরিষদের’ ব্যানারে এক সমাবেশ থেকে বঙ্গবন্ধুর নামে ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করা হয়। হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব নূর হোসাইন কাসেমী গত ২৬ নভেম্বর জামেয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদ্রাসায় আলেমদের এক জরুরি সভায় প্রাণী বা মানবমূর্তি নির্মাণ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

ওদিকে, চরমোনাইয়ের পীর ও ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করীম ভাস্কর্য নির্মাণের স্থল ঢাকার ধোলাইপাড় এলাকায় এক সমাবেশে বলেন, “ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপনের চক্রান্ত তৌহিদি জনতা রুখে দেবে। রাষ্ট্রের টাকা খরচ করে মূর্তি স্থাপনের অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত থেকে সরকারকে ফিরে আসতে হবে। সরে না এলে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।” একই দিনে, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলামের নেতা মাওলানা মামুনুল হক ঢাকার এক অনুষ্ঠানে বলেন, “বঙ্গবন্ধুর মূর্তি স্থাপন, তার আত্মার সঙ্গে গাদ্দারি করার শামিল। যারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন করে, তারা বঙ্গবন্ধুর সুসন্তান হতে পারে না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন মুসলিম হিসেবে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। তার মূর্তি তৈরি করে রাস্তার মোড়ে মোড়ে স্থাপন করা হলে তা হবে বঙ্গবন্ধুর আত্মার সঙ্গে বেইমানি।” গত ২৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের হাটহাজারী পার্বতী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এক মাহফিলে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, কোনো ভাস্কর্য তৈরি হলে তা টেনেহিঁচড়ে ফেলে দেওয়া হবে।

নতুন ধর্মপ্রতিমন্ত্রীর মন্তব্য : এদিকে নতুন ধর্মপ্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দায়িত্ব গ্রহনের পর গত ২৯ নভেম্বর প্রথম অফিসে এসে এ প্রসংগে সাংবাদিকদের কাছে তার ব্যাখ্যায় বলেছেন, বিশ্বের সব দেশেই ভাস্কর্য আছে, মূর্তি আর ভাস্বর্য এক নয়। সার্বিক দিক থেকে এ সমগ্র বিষয় চিন্তায় রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য অবশ্যই আমি চেষ্টা করব। সবার কাছে আন্তরিক সহযোগিতা চাই।’ তিনি বলেন, ‘ভাস্কর্যই যদি মূর্তি হয় তবে টাকার ভেতরে বঙ্গবন্ধুর ছবি আছে। এর আগে যারা ছিলেন তাদের ছবি ছিল। সেগুলো কীভাবে থাকল। সেগুলো সবাই পকেটে নিয়ে ঘোরে, কয়েনের মধ্যেও আছে। সারাবিশ্বে সব জায়গায় যান, কয়েনের ভেতরে সবকিছু আছে।’

স্বেচ্ছাসেবক লীগের মানববন্ধন : বঙ্গন্ধুর ভাষ্কর্য স্থাপনের বিরোধীতাকারিদের “স্বাধীনতা বিরোধী” আখ্যা দিয়ে আওয়ামীলিগের অঙ্গসংগঠন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ গত ২৯ নভেম্বর জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এক মানববন্ধন কর্মসূচি আয়োজন করে। মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ হুৃঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, সাম্প্রতিক মৌলবাদ অপশক্তি কে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানে প্রতিরোধ করা হবে।

মাওলানা মামুনুল হকের ব্যাখ্যা : ওদিকে, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতার ব্যাখ্যা দিয়ে হেফাজতে ইসলামের নবনিযুক্ত যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক গত ২৯ নভেম্বর রাজধানীর পুরনা পল্টনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “আমাদের বক্তব্য ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে, কোনোভাবেই বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে নয়।” তার বক্তব্য নিয়ে অপপ্রচার হচ্ছে মন্তব্য করে এই হেফাজত নেতা বলেন, “স্বাধীনতার মহান নেতা ও স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মুসলিম নেতা হিসেবে আমি পরিপূর্ণ শ্রদ্ধা করি এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করি। কখনো কোনোভাবেই এমন একজন মরহুম জাতীয় নেতার বিরুদ্ধাচরণ করি না এবং করাকে সমীচীন মনে করি না।” গত ১৩ নভেম্বর ঢাকার গেণ্ডারিয়ার ধূপখোলার মাঠে ‘তৌহিদী জনতা ঐক্যপরিষদের’ ব্যানারে এক সমাবেশ থেকে মুজিববর্ষ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করা হয়। খেলাফত মজলিসের প্রতিষ্ঠাতা আমির ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আজিজুল হকের পুত্র মামুনুল বলেন, “অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে, আমার বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র দানা বাঁধছে। ভুল তথ্যের ভিত্তিতে প্রশাসনকে আমার বিরুদ্ধে উসকে দেওয়া হচ্ছে।’’

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ : এ প্রসঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম গত ২৮ নভেম্বর গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে বলেন, ভাস্কর্য বা মূর্তির বিরোধিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরোধিতা নয়। এটা যারা বুঝতে পারে না, তারাই দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, দেশের শীর্ষ ধর্মীয় নেতাদের বিরুদ্ধে শাহবাগ ও চট্টগামে ছাত্রলীগ, যুবলীগকে মাঠে নামিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গালিগালাজ করিয়ে সরকার অত্যন্ত খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

মুফতি ফয়জুল করীম আরও বলেন, ওলামায়ে কেরাম শুধু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যবিরোধী নন, তারা সব মানবমূর্তি বা ভাস্কর্যের বিরোধী। ওলামায়ে কেরাম বঙ্গবন্ধুসহ দেশ, জাতি ও মানবতার কল্যাণ চান বলেই তার বিরোধিতা করছেন এবং ওলামায়ে কেরাম মূর্তি ও ভাস্কর্যের বিষয়ে খোলামেলা বিশ্লেষণ করে জাতিকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন।
‘অপশক্তি মোকাবেলা করে ইসলামের বিজয় নিশ্চিত করতে হবে’

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব শায়খুল হাদীস মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ভাস্কর্য ইস্যুকে ঘোলাটে করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে একশ্রেণির লোক উঠেপড়ে লেগেছে। ইসলামে ভাস্কর্য বানানোর কোনো সুযোগ নেই। নূনতম কোনো ঈমানদার মূর্তি বা ভাস্কর্য বানানোর পক্ষে কথা বলা সুযোগ নেই। তিনি বলেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের প্রতিটি কর্মীকে সকল অপশক্তির মোকাবেলা করে ইসলামের বিজয় নিশ্চিত করতে হবে। এলক্ষ্যে সারাদেশের সকল শাখাকে দাওয়াতী মাসের কর্মসূচি বাস্তবায়নের আহ্বান জানান। তিনি ২ ডিসেম্বর (বুধবার) বিকেলে পুরানা পল্টনস্থ দারুল খিলাফাহ মিলনায়তনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্র ঘোষিত দাওয়াতী মাসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, অফিস ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলনা আজিজুর রহমান হেলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মূসা, সহ-বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা নিয়ামাতুল্লাহ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা হারুনুর রশীদ ভূঁইয়া, যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা জহিরুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুল মুমিন, সহ-সাধারণ মাওলানা আতিক উল্লাহ, বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা মিজানুর রহমান মিসবাহ, ছাত্র মজলিসের সেক্রেটারী জেনারেল মুহাম্মদ উবায়দুর রহমান প্রমূখ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের হাতে সদস্য ফরম পূরণ করে বিপুল সংখ্যক আলেম-ওলামা যোগদান করেন।

ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন কোনোক্রমে মেনে নেয়া যায় না : সম্মিলিত ইসলামী দলসমূহ

সারা দেশে ভাস্কর্যের নামে যেভাবে মূর্তি স্থাপন করা হচ্ছে, তা কোনোক্রমে মেনে নেয়া যায় না। এক ধরনের বুদ্ধিজীবীসহ কিছু কুচক্রীমহল ভাস্কর্য স্থাপনকে কেন্দ্র করে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পায়তারা করছে। তারা দেশ, জাতি ও ইসলামের দুশমন। কেউ কেউ আলেম-ওলামাদের নামে গালি-গালাজ ও অশালীন বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে। যা কোনো বিচক্ষণ মানুষ মেনে নিতে পারে না।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্থপতি। তাকে বাংলাদেশের সকল জনগণ অবশ্যয় ভালোবাসবে। তাই বলে তাকে স্মরণ করতে রাস্তার মোড়ে মোড়ে তার ভাস্কর্য তৈরি করতে হবে কেন? এভাবে ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন করে দেশে আল্লাহর গজব টেনে আনা হচ্ছে। দেশের বিবেকবান জনগণ কোনোক্রমেই এ বিজাতীয় সংস্কৃতি মেনে নিবে না। ২ ডিসেম্বর (বুধবার) সকালে সম্মিলিত ইসলামী দলসমূহের বৈঠকে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
মাওলানা আবু তাহের জিহাদীর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সম্মিলিত ইসলামী দলসমূহের মহাসচিব ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমীরে শরীয়ত আল্লামা জাফরুল্লাহ খান। ওলামা মাশায়েখ পরিষদের সহ-সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমান আল মাদানী। বাংলাদেশ জনসেবা আন্দোলনের চেয়ারম্যান মুফতি ফখরুল ইসলাম। আইম্মা পরিষদের সভাপতি মাওলানা মহিউদ্দীন রব্বানী। ইসলামী জনতার পার্টির সভাপতি মাওলানা আজিজুর রহমান আজিজ। খেলাফতে রব্বানীর আমীর মুফতি ফয়জুল্লাহ আশরাফী। টেকেরহাটির পীর মাওলানা কামরুল ইসলাম সাঈদ আনসারী। শর্শিনার ছোট পীর মাওলানা মাওলানা শাহ আরেফ বিল্লাহ সিদ্দিকি, মাওলানা আবুল কাসেম কাসেমী, মাওলানা মোহাম্মদ হোসাইন আকন্দ ও মাওলানা ইয়ামিন হোসাইন আজমী প্রমুখ। নেতৃবৃন্দ ভাস্কর্যের নামে দেশব্যাপী মূর্তি স্থাপনের প্রতিবাদে আগামী ৪ ডিসেম্বর শুক্রবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল ও কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকা জাতীয় মসজিদ বাইতুল মোকাররম উত্তর গেইট থেকে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ইসলাম প্রিয় তৌহিদী জনতাকে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল সফল করার জন্য নেতৃবৃন্দ আহ্বান জানান।

যদি কোথাও কোনো ভাস্কর্য হয়, টেনেহিঁচড়ে ফেলে দেবো : বাবুনগরী

হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, যদি কোথাও কোনো ভাস্কর্য হয়, যে দলই করুক, সেটি যদি আমারও হয়, আমি টেনেহিঁচড়ে ফেলে দেবো। গত ২৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের হাটহাজারি উপজেলার পার্বতী মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে, মদিনা সনদে দেশ চলবে। আমরাও তাই চাই। কিন্তু, মদিনা সনদে তো ভাস্কর্যের কোনো উল্লেখ নেই। মদিনা সনদে দেশ চললে দেশে ভাস্কর্ষ থাকতে পারবে না।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে বাবুনগরী বলেন, ‘আমরা আপনার শত্রু নই। আমরা আপনার দুশমন নই। বঙ্গবন্ধুকে কোনো আলেম-ওলামা হত্যা করেননি। কোনো মাদ্রাসা ছাত্র হত্যা করেননি। তার আপন মানুষরাই তাকে হত্যা করেছেন।’ প্রধানমন্ত্রীকে সতর্ক করে দিয়ে বাবুনগরী বলেন, ‘যারা আপনার ঘাড়ের ওপর বসে আছেন, তারাই আপনার ক্ষতি করবে।’ গ্রেপ্তারকৃত মাদ্রাসার ছাত্রদের মুক্তির দাবিতে প্রয়োজনে ‘কঠিন’ কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন জুনায়েদ বাবুনগরী। তিনি বলেছেন, ‘ঢাকার বিক্ষোভ মিছিল থেকে গ্রেপ্তারকৃত মাদ্রাসা ছাত্রদের যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি দেওয়া না হয়, তাহলে হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে কঠিন কর্মসূচি দেওয়া হবে।’ জুমার নামাজের পর ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকার মিছিল থেকে পুলিশ ৯ জন মাদ্রাসাকে আটক করে।এই মাহফিলে মাওলানা মামুনুল হকের বক্তব্য রাখার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তিনি আসেননি। এই প্রসঙ্গে বাবু নগরী বলেন, ‘একটি মহল বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করায় মামুনুল হক নিজে থেকেই আসতে চাননি।’ তিনি বলেন, ‘মামুনুল হক একজন অভিজ্ঞ আলেম, শায়খুল হাদিস। তার মুখ দিয়ে কোরআন হাদিস বের হয়, তার মুখ দিয়ে বোখারী শরিফ বের হয়। তার ছবিতে যারা অপমান করেছেন, যারা আলেম-ওলামাদের অপমান করেছেন, তাদের ওপর আল্লাহর গজব নাজিল হবে।’ রাত পৌনে ৮টার দিকে জুনায়েদ বাবুনগরীর বক্তব্য শেষ হলে কোরআন মাহফিল সমাপ্তির ঘোষণা দেওয়া হয়।

আমরা ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে নই
হেফাজতে ইসলামীর যুগ্ম মহাসচিব ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন আমাদের বক্তব্য মূর্তি-ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে, কোনোভাবেই বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে নয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান নেতা ও স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মুসলিম নেতা হিসেবে পরিপূর্ণ শ্রদ্ধা করি। তার রুহের মাগফিরাত কামনা করি। কোনোভাবেই এমন একজন প্রয়াত মরহুম জাতীয় নেতার বিরুদ্ধাচারণ করি না, করা সমীচীনও মনে করি না। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমার বাবা উপমহাদেশের প্রখ্যাত হাদিস বিশারদ ও বাংলাদেশের একজন জাতীয় নেতা মরহুম শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক। যিনি চারদলীয় জোটের শীর্ষ চার নেতার অন্যতম একজন ছিলেন। তার দেয়া আদর্শিক পাঁচ দফার সঙ্গে একমত হয়েই ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগ খেলাফত মজলিসের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি সই করেছিল।

স্বচ্ছ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা চালানোই আমার ব্রত। কোনো ষড়যন্ত্র অথবা গোপন আঁতাতের মাধ্যমে দেশ, রাষ্ট্র কিংবা সরকারবিরোধী কোনো কর্মসূচি আমাদের নেই। তিনি আরো বলেন, অতীতে বিভিন্ন জোটবদ্ধ রাজনীতিতে ভূমিকা রাখলেও বর্তমানে আমাদের সংগঠন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও ব্যক্তিতভাবে আমি কোনো রাজনৈতিক জোটে যুক্ত নই। একটি মহল ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে আমি ব্যক্তি মামুনুল হককে সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর পাঁয়তারা চালাচ্ছে। এজন্য জামায়াত-শিবিরের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের অমূলক ও কল্পিত অভিযোগ আমার ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। আমি এই ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। তিনি বলেন, আমি আশা করবো অনভিপ্রেত সব অপতৎপরতা বন্ধ হবে। একই সঙ্গে শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক ও সৈয়দ ফজলুল করীম পীর সাহেব চরমোনাইয়ের বিরুদ্ধে কটূক্তি ও বিষোদগারের ব্যাপারে প্রশাসন যথাযথ পদক্ষেপ নেবে। সংবাদ সম্মেলনে খেলাফত মজলিসের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Posted ৯:৪১ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২০

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

কাঁঠাল সমাচার
কাঁঠাল সমাচার

(1573 বার পঠিত)

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বু বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩১৫
১৬১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭
৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

86-47 164th Street, Suite#BH
Jamaica, New York 11432

Tel: 917-304-3912, 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: weeklybangladesh@yahoo.com

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.