বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫ | ২৭ আষাঢ় ১৪৩২

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক উন্নয়নের কাঁটা শেখ হাসিনা

বাংলাদেশ অনলাইন :   |   মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক উন্নয়নের কাঁটা শেখ হাসিনা

ছবি : সংগৃহীত

একটানা বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে ১৬ বছর ক্ষমতা কুক্ষিগত করে থাকার সময় বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ‘সুসম্পর্ক’ তৈরি করেছিল হাসিনা সরকার। হাসিনা-মোদির নেতৃত্বে দুই দেশের সম্পর্ক ‘নতুন উচ্চতায়’ উঠেছিলো কিন্তু পরিবর্তিত সময়ে চিত্র পাল্টে গেছে পুরোপুরি। এখন সেই শেখ হাসিনাই বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক উন্নয়নে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। সে সময় ভারত সরকার সে দেশের রাজনৈতিক ঐক্যমতের ভিত্তিতে তাকে আশ্রয় দেয়। তবে ভারতে আশ্রয় দেওয়ার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে বিভিন্ন টানাপোড়েন শুরু হয়। কারণ পালিয়ে যাওয়ার আগে তিনি বাংলাদেশে গণহত্যার সরাসরি নেতৃত্ব দিয়েছেন। বিচারের জন্য শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ভারত সরকারের কাছে চিঠি পাঠালেও এখনো তার জবাব পায়নি বাংলাদেশ সরকার।

এমনকি শেখ হাসিনা ভারতে বসে যে কোনো ধরনের রাজনৈতিক বা উসকানিমূলক বক্তব্য দিতে না পারেন সে ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানানো হলেও মোদি সরকার তা নিশ্চিত করতে পারেনি। শেখ হাসিনা প্রতিনিয়ত সামাজিক মাধ্যমে উসকানিমূলক অডিও বার্তা ছড়িয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করে যাচ্ছেন।

সোনালী অধ্যায় থেকে তিক্ততা

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অতীতে বারবার বলেছেন, দুই দেশের মধ্যে সোনালী অধ্যায়ের সৃষ্টি হয়েছে। গত ১৬ বছরে দুই দেশের মধ্যে একাধিকবার শীর্ষ পর্যায়ের সফর বিনিময় হয়েছে। সে সময় উভয় দেশের শীর্ষ নেতাই দুই দেশের সম্পর্ককে সোনালী অধ্যায় হিসেবে অভিহিত করেন। তবে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে টানাপোড়েন ও তিক্ততা তৈরি হয়েছে। দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে শীতলতাও দেখা যাচ্ছে। আর এটি মূলত তৈরি হয়েছে, শেখ হাসিনাকে ভারতের আশ্রয় দেওয়ার কারণেই।

শেখ হাসিনাকে নিয়ে অস্বস্তি

ঢাকার পক্ষ থেকে দিল্লির কাছে একাধিকবার অভিযোগ করা হয়েছে, বাংলাদেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিতে শেখ হাসিনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে অব্যাহতভাবে মিথ্যা, বানোয়াট মন্তব্য এবং বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে ডেকে কড়া প্রতিবাদও জানিয়েছে বাংলাদেশ। তারপরেও শেখ হাসিনার বক্তব্য-বিবৃতি থেমে নেই, যা দুই দেশের সম্পর্কে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে।

বিবৃতি-বক্তব্য নিয়ে ভারতের যুক্তি

সামাজিক মাধ্যমে শেখ হাসিনার উস্কানিমূলক বক্তব্য-বিবৃতির বিষয়ে ভারতের পক্ষ থেকে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, শেখ হাসিনা ভারতের নিজস্ব কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন না, তাকে কোনো ডিভাইস দিয়েও সহায়তা করা হচ্ছে না। তিনি নিজস্ব ডিভাইস ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বক্তব্য-বিবৃতি দিচ্ছেন।

শেখ হাসিনাকে ফেরানোর পাশাপাশি স্বার্থ প্রাধান্য

ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত না দিলেও ঢাকা-দিল্লির সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে কি না, এ বিষয়ে স্পষ্ট করেছেন পররাষ্ট্র পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, দুটোই পাশাপাশি চলবে। শেখ হাসিনাকে ফেরত আনা আমাদের একটা ইস্যু। এটা ছাড়াও আমাদের দুই দেশের মধ্যে আরো অনেক স্বার্থের ইস্যু আছে। আমরা সেগুলো নিয়েও পাশাপাশি এগিয়ে যাবো।

ভারতে শেখ হাসিনার স্ট্যাটাস কী?

শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিলেও এখনো তিনি সেখানে কোন স্ট্যাটাসে (মর্যাদায়) আছেন, তা জানতে পারেনি বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মাদ রফিকুল আলম বলেছেন, শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হয়েছে, তবে এই ফেরত চাওয়ার সঙ্গে তার স্ট্যাটাসের কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি সেখানে কোন স্ট্যাটাসে আছেন, তা আমাদের কোনো বিবেচ্য বিষয় নয়। আমরা শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে চিঠি দিয়েছি। এখন আমরা অপেক্ষা করবো। এ বিষয়ে আসলে কোনো ধরা-বাঁধা নিয়ম নেই। আমরা অপেক্ষা করছি।

বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন

শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থানের জন্যই দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে প্রধান বাধা কি না, জানতে চাইলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক শাহাব এনাম খান বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে বাধার জন্য শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান একটা অন্যতম কারণ। তবে এটা ছাড়াও আরো অনেক কারণ আছে। ভারত এখনও বাংলাদেশের বাস্তব অবস্থা অনুধাবন করতে পারছে না। এটা তাদের পররাষ্ট্র নীতির একটি দুর্বলতা। এছাড়া ভারত আওয়ামী লীগের ওপর ভর করে বাংলাদেশে আধিপত্য বিস্তার করতো, ভারতের সেই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তা না হলে সম্পর্কে গতি আসবে না।

এদিকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। তাই বাংলাদেশ সরকার ভারতের কাছে তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে যাতে তাকে বিচারের মুখোমুখি করা যায়। যতক্ষণ না ভারত সরকার তাকে ফিরিয়ে দেয়, আমরা আশা করব যে তারা অন্তত (হাসিনার ওপর) কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে, যাতে তিনি উস্কানিমূলক ও মিথ্যা মন্তব্য না করেন, যা মানুষের মধ্যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।

Posted ১০:২৭ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

কাঁঠাল সমাচার
কাঁঠাল সমাচার

(1756 বার পঠিত)

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

86-47 164th Street, Suite#BH
Jamaica, New York 11432

Tel: 917-304-3912, 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.