সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫ | ২৫ কার্তিক ১৪৩২

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

বিয়েতে অনীহা বিশ্বজুড়ে, সর্বনিম্ন হার যেসব দেশে

বাংলাদেশ অনলাইন :   |   শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

বিয়েতে অনীহা বিশ্বজুড়ে, সর্বনিম্ন হার যেসব দেশে

এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় বিবাহের হার ৩.৭। ছবি : পেক্সেলস

বিশ্বজুড়ে বিয়ের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমছে। দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে বিয়ের ধারণা। অর্থনৈতিক বাস্তবতা, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের পরিবর্তন এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতার প্রতি গভীর মনোযোগের কারণে অনেক দেশে প্রথাগত বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার প্রবণতা কমছে। তরুণেরা এখন কর্মজীবন, শিক্ষা, ভ্রমণ এবং ব্যক্তিগত উন্নতিকে বিয়ের চেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। বিশেষত ইতালির মতো ইউরোপীয় দেশগুলোতে এই প্রবণতা উল্লেখযোগ্য। মানুষ এখন আর প্রথাগত বিবাহবন্ধনে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। দ্য ইকোনমিস্টের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি ১ হাজার জনে বার্ষিক বিয়ের সংখ্যার ভিত্তিতে বিশ্বের সর্বনিম্ন বিয়ের হারের দেশগুলোকে চিহ্নিত করা যায়। যেখানে দেখা যায় কোন দেশে বিবাহের হার এখন তলানিতে।

উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার চিত্র: লিভটুগেদারই যেখানে নতুন রীতি

পশ্চিম গোলার্ধের বেশ কয়েকটি দেশ বিয়ের বাঁধন থেকে সরে আসছে। এই প্রবণতা শুরু হয়েছে কোস্টারিকা থেকে। সেখানে বিয়ের হার হাজারে ৩ দশমিক ৮। দেশটিতে বিরাজমান অর্থনৈতিক উদ্বেগ এবং স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা বিয়ের চেয়ে লিভটুগেদারের পথকে প্রশস্ত করেছে। এর কিছুটা নিচে রয়েছে পানামা (৩ দশমিক ৩) এবং মেক্সিকো (৩ দশমিক ৩)। যেখানে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি সম্পর্কের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন লক্ষণীয়। দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে চিলিতেও (৩ দশমিক ৩) জীবনযাত্রার খরচ বাড়ায় এবং লৈঙ্গিক ভূমিকার পরিবর্তনের কারণে বিয়ে দেরিতে হচ্ছে।

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ সুরিনাম (৩ দশমিক ৪) লিভটুগেদারকে আনুষ্ঠানিক বিয়ের চেয়ে বেশি সমর্থন করে। অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং আইনি বিয়ের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে জনগণের সংশয়ের কারণে আর্জেন্টিনার (২ দশমিক ৯) স্থানও তালিকার নিচের দিকে। উরুগুয়ে (২ দশমিক ৮) এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলে ফরাসি অঞ্চলের মার্তিনিক (২ দশমিক ৮) ও গুয়াডেলুপ (২ দশমিক ৮) বিকল্প সম্পর্কের দিকে ঝোঁক দেখাচ্ছে।

অর্থনৈতিক অস্থিরতার চরম প্রভাব পড়েছে ভেনেজুয়েলা (২ দশমিক ৬) এবং পেরুতে (২ দশমিক ৫), যেখানে আর্থিক নিরাপত্তার তাগিদে বিয়ে এখন অগ্রাধিকার তালিকার একেবারে তলানিতে। ফরাসি গায়ানা (২ দশমিক ৪)-এর তরুণ জনসংখ্যা অনানুষ্ঠানিক সম্পর্ককে প্রাধান্য দেয়।

ইউরোপের সমাজ: সিভিল পার্টনারশিপের উত্থান

ইউরোপ মহাদেশে বিবাহবিমুখতার কারণ কিছুটা ভিন্ন। এখানে বহু মানুষ প্রথাগত বিয়ের পরিবর্তে সিভিল পার্টনারশিপ বা আইনি সুরক্ষার মধ্যে লিভটুগেদারকে বেছে নিচ্ছে। এই তালিকায় ইউরোপের প্রথম দেশ নরওয়ে (৩ দশমিক ৬), যেখানে দেরিতে বিয়ের সংস্কৃতি বিদ্যমান। এরপরই রয়েছে নেদারল্যান্ডস (৩ দশমিক ৫), লুক্সেমবার্গ (৩ দশমিক ৫), গ্রিস (৩ দশমিক ৫) ও বুলগেরিয়া (৩ দশমিক ৫); বিশেষত গ্রিস ও বুলগেরিয়ায় আর্থিক অস্থিরতা অনেক জুটিকে বিয়ে বিলম্বিত করতে বাধ্য করছে।

ইউরোপের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দেশ বেলজিয়াম (৩ দশমিক ৪) লিভটুগেদারের প্রতি ঝুঁকেছে। ইতালি (৩ দশমিক ২) এবং স্লোভেনিয়ায় (৩ দশমিক ২) তরুণ প্রজন্ম কর্মজীবন এবং আর্থিক স্থিতিশীলতাকে বিয়ের আগে প্রাধান্য দিচ্ছে। একেবারে নিচের দিকে রয়েছে স্পেন (৩ দশমিক ১), মাল্টা (৩ দশমিক ১) এবং বিশেষভাবে ফ্রান্স (৩ দশমিক ১)। ফ্রান্সে বিয়ের হার কম হওয়ার মূল কারণ হলো প্যাক্সের মতো আইনি চুক্তির ব্যাপক জনপ্রিয়তা, যা বিয়ে ছাড়াই আইনি সুবিধা নিশ্চিত করে। পর্তুগালের (২ দশমিক ৯) ক্ষেত্রেও অর্থনৈতিক চাপ এবং লিভটুগেদারের প্রবণতা মূল কারণ হিসেবে কাজ করছে।

এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও ওশেনিয়ার ব্যতিক্রমী হার

এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া (৩ দশমিক ৭) এই তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। উচ্চ জীবনযাত্রার ব্যয়, তীব্র কাজের চাপ এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের দ্রুত পরিবর্তন এখানকার কম বিয়ের মূল কারণ।

অন্যদিকে, মধ্যপ্রাচ্যের রক্ষণশীল সংস্কৃতি থাকা সত্ত্বেও বিয়ের উচ্চ ব্যয় এবং তরুণদের পরিবর্তিত প্রত্যাশার কারণে কুয়েতের (৩ দশমিক ৫) হার কম। তবে সবচেয়ে বিস্ময়কর হার দেখা যায় কাতারে (১ দশমিক ৪) । যেখানে বিপুলসংখ্যক একক প্রবাসী শ্রমিক এবং কাতারি নাগরিকদের মধ্যে উচ্চ ব্যয়ের কারণে বিয়ে বিলম্বিত হয়, আর এ কারণে বিয়ের হারও সর্বনিম্ন।

ওশেনিয়া অঞ্চলে নিউজিল্যান্ড (৩ দশমিক ৬) এবং অস্ট্রেলিয়াতেও (৩ দশমিক ৫) দেরিতে বিয়ে এবং বিকল্প সম্পর্কের কাঠামো জনপ্রিয় হচ্ছে। আফ্রিকার ফরাসি অঞ্চল রেউনিওঁতেও (৩.৩) লিভটুগেদারকে প্রাধান্য দেওয়া হয়।

এই পরিসংখ্যানগুলো কেবল বিয়ের হার কমে যাওয়া নির্দেশ করে না; বরং দেখায় যে বিশ্বজুড়ে সম্পর্কের ধারণাটিই বদলে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এবং আত্ম-উন্নয়নের আকাঙ্ক্ষা মানুষকে প্রথাগত প্রতিষ্ঠানের প্রতি কম আগ্রহী করে তুলছে, যেখানে আইনি বন্ধন ছাড়াই আস্থা ও স্থিতিশীলতাকে অনেকে নতুন সম্পর্কের ভিত্তি হিসেবে বেছে নিচ্ছেন।

কোথাও জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয়, ঋণের বোঝা এবং আর্থিক অস্থিতিশীলতার কারণে তরুণ প্রজন্ম বিয়ে বিলম্বিত করছে বা এড়িয়ে যাচ্ছে। আবার কোথাও প্রথাগত বিয়ের গুরুত্ব কমে আসছে। লিভটুগেদার, সিভিল পার্টনারশিপ (যেমন ফ্রান্সের প্যাক্স) এবং আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক ছাড়াই দীর্ঘমেয়াদি বন্ধন এখন বেশি গ্রহণযোগ্য।

সূত্র: স্টাটিস্টা

Posted ১০:১৮ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

86-47 164th Street, Suite#BH
Jamaica, New York 11432

Tel: 917-304-3912, 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.