বাংলাদেশ অনলাইন : | রবিবার, ০৯ জুলাই ২০২৩
ফ্রাঁসোয়াস বেতেনক্যুঁ মেয়ার। ছবি : ফোর্বস ম্যাগাজিন।
ফোর্বসের তালিকা অনুযায়ী, তৃতীয়বারের মতো বিশ্বে বর্তমানে সবচেয়ে ধনী নারী ফ্রাঁসোয়াস বেতেনক্যুঁ মেয়ার। ফরাসি এই বিলিয়নিয়ারের মোট অর্থের পরিমাণ ৮০.৫ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের তুলনায় এই নারীর সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে ৫.৭ বিলিয়ন ডলার। বেতেনক্যুঁ মেয়ার বর্তমানে পৃথিবীর ১১তম ধনী ব্যক্তিত্ব। তিনি গত বছর এই তালিকার ১৪ নম্বরে অবস্থান করছিলেন। ফোর্বসের ২০২৩ সালে সারাবিশ্বে বিলিয়নিয়ারের তালিকায় মাত্র ৩৩৭ জন বিলিয়নিয়ার রয়েছেন। এই ৩৩৭ জন নারী পৃথিবীতে থাকা মোট ২৬৪০ বিলিয়নিয়ারের মাত্র ১৩ শতাংশ।
৬৯ বছর বয়সী এই বিলিয়নিয়ারের বেশিরভাগ অর্থ আসে সৌন্দর্য সংক্রান্ত পণ্য থেকে। তার কোম্পানির নাম ল’রিয়েল। ১০০ বছর আগে বেতেনক্যুঁর দাদা কোম্পানিটি চালু করেন। ২০২২ সালে এটি ৩৮.২ বিলিয়ন ডলার লাভ করে। মোট ৮৫ হাজার কর্মী রয়েছে মেয়ারের। ২০২১ সালের পর থেকে কোম্পানিটি আশার চেয়েও বেশি লাভ করে। ভালো নেতৃত্বের কারণে ল’রিয়েলের স্টকে গত বছরে ১২ শতাংশের বেশি মূল্যবৃদ্ধি ঘটে।
পরিবারের সঙ্গে মিলে মেয়ার ল’রিয়েলের ৩৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করেন। তিনি তার মায়ের কাছ থেকে সবচেয়ে ধনী নারীর টাইটেলটি পেয়েছেন বলা যায়। ২০১৭ সালে তার মা লিলিয়েন বেতেনক্যুঁর মৃত্যু ঘটে। ৪২.২ বিলিয়ন ডলার নিয়ে ২০১৮ সালে নবাগত ধনীর তালিকায় স্থান করে নেন মেয়ার।
ফ্রেঞ্চ এই নারী ল’রিয়েলের বোর্ডে ১৯৯৭ সাল থেকে কর্মরত রয়েছেন। তার দুই সন্তান জ্য ভেক্টর ও নিকোলাসও এখন বোর্ডের বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। ল’রিয়েল বিশ্বের বিখ্যাত মেকআপ, ত্বকের যত্নে ব্যবহৃত পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। জেন জি যুগের ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার জন্য কোম্পানিটি তাদের বিপণনে ঢালাও পরিবর্তন আনছে। যেমন ইউটিউবার এমা চ্যাম্বারলেইন সম্প্রতি ল্যানকামের একটি বিজ্ঞাপনে অ্যাম্বাসাডরের কাজ করেছেন। এর আগে ২০২২ সালে মেটাভার্সের অ্যাভাটার প্ল্যাটফর্ম রেডি প্লেয়ার মি এর সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল।
বেতেনক্যুঁর বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী হওয়ার পথটি সুগম ছিল না। উদাহরণ হিসেবে একটি ফ্রেঞ্চ স্ক্যান্ডালের কথা বলা যায়। বিলিয়ন ডলার এদিক-সেদিকের মামলা মা-মেয়ের সম্পর্কে ফাটল ধরায়। ২০০৭ সালে বেতেনক্যুঁ মেয়ার ফ্রাঁন্সিস মারি বানিয়ের নামের দীর্ঘসময়ের একজন পারিবারিক বন্ধু ও স্বনামধন্য ফটোগ্রাফারের নামে ১ বিলিয়ন ডলারের প্রতারণা মামলা করেন। মেয়ার তার মাকে বাগিয়ে বিভিন্ন শিল্পকর্ম কেনা, রিয়েল স্টেট এবং অন্যান্য জিনিসপত্র কেনার দায়ে অভিযুক্ত করেন ওই ব্যক্তিকে।
পরে আদালত ওই ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করে তিন বছরের জেল দেয় এবং ১৫০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। তবে দুটি শাস্তিই কয়েক বছর পর ঘুরে যায়। পরবর্তীতে তার মা বছরের পর বছরজুড়ে এসব বিষয়ে বেতেনক্যুঁ মেয়ারকে জড়িয়ে মন্তব্য করতে থাকেন। এ ছাড়া মেয়ারের বিরুদ্ধে একজন সাক্ষীকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। ২০১১ সালে আলঝাইমারের চূড়ান্ত পর্যায়ে গেলে আদালতের পক্ষ থেকে বেতেনক্যুঁ মেয়ারকে তার মায়ের আইনত অভিভাবক নির্ধারণ করা হয়।
১৯৫৩ সালের ১০ জুলাই ফ্রান্সের নিউলি-সার-সেইনে জন্মগ্রহণ করেন মেয়ার। তিনি মানবসেবামূলক সংগঠন বেতেনক্যুঁ শ্যুলার ফাউন্ডেশনের সভাপতি। বৈজ্ঞানিক গবেষণা, মানবিক সাহায্য এবং সাংস্কৃতিক ও শৈল্পিক ঐতিহ্য রক্ষার মতো নানা কাজের সঙ্গে জড়িত এ সংগঠন। এর বাইরে একাধিক বইও প্রকাশিত হয়েছে বেতেনক্যুঁ মেয়ারের।
Posted ১১:৪২ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৯ জুলাই ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh