বাংলাদেশ ডেস্ক : | বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট ২০২০
করোনাভাইরাস মহামারীকালে যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। ভোটগ্রহণ মেইলে বা ডাক বক্সে হবে নাকি ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে হবে- তা নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। করোনা সংক্রমণের এ সময়ে দেশটির নীতিনির্ধারকদের একাংশ যথাসময়ে নির্বাচনের পক্ষে হলেও ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোটদানের পক্ষে নয়। দেশটির পোস্টাল সার্ভিস (ইউএসপিএস) ইতোমধ্যেই সতর্ক করে জানিয়েছে, নির্বাচনে ডাকযোগে ভোটগ্রহণ করলে ফলাফল আসতে বিলম্ব হবে। কয়েক সপ্তাহ, এমনকি মাসও পেরিয়ে যেতে পারে। মার্কিন নীতিনির্ধারকদের একজন রিপাবলিকান দলের থিংকট্যাংক ড্যানিয়েল গ্রিফথ শনিবার সিএনএনকে বলেন, ভোট হতে হবে ডাক বাক্সে অথবা ই-মেইলে। অন্যদিকে অন্য পক্ষ চাইছে, প্রচলিত নিয়মেই ভোট হবে এবং জনগণ সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিয়ে ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে যাবেন। ইউএসপিএস বলেছে, অন্তত পাঁচটি রাজ্য- মিশিগান, পেনসিলভানিয়া, ক্যালিফোর্নিয়া, মিসৌরি ও ওয়াশিংটনের ভোটাররা রাজ্যের বর্তমান আইনে তাদের ব্যালটে ভোট দেয়ার জন্য যথেষ্ট সময় পাবেন না এবং তা সময়মতো পৌঁছাবে না। এ ব্যাপারে ৫০টি রাজ্যের ৪৬টি ও কলাম্বিয়া জেলাকে সতর্ক করে চিঠি লিখেছে ডাক পরিষেবা। সেখানে বলা হয়, নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মেইল ভোট দেরিতে পৌঁছানোর কারণে তা অগণনীয় থাকতে পারে। ইউএসপিএস মুখপাত্র মার্থা জনসন বলেন, ‘রাজ্য ও স্থানীয় নির্বাচনী কর্মকর্তাদের অবশ্যই বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে এবং আমাদের ডেলিভারির মানদণ্ড ও সময়সীমা বিবেচনা করতে হবে।’
সম্প্রতি অ্যাক্সিওস/সার্ভে মানকির চালানো জরিপে দেখা গেছে, তিন-চতুর্থাংশ রিপাবলিকান সশরীরে আর ৫০ শতাংশ ডেমোক্র্যাট মেইল-ইন পদ্ধতিতে ভোট দিতে চান। কর্তৃপক্ষ ভোটারকে ব্যালট পাঠালে সেই ব্যবস্থাকে ‘মেইল-ইন’ বলা হয়। কোনো ভোটার বিশেষ কারণ দেখিয়ে ডাকযোগে ভোটের আবেদন জানালে সেটিকে ‘অ্যাবসেন্টি ব্যালট’ বলা হয়। ডেমোক্র্যাট অধ্যুষিত কয়েক রাজ্য মেয়র ও গভর্নরের পক্ষ থেকে মেইল-ইন ভোটের দাবি জানানো হলেও ট্রাম্প শুরু থেকেই এর বিরোধিতা করছেন। করোনা মহামারীর মধ্যে জনসমাবেশ এড়াতে মেইলে ভোট দেয়াকে সহজ মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে কোনো প্রমাণ দিতে না পারলেও ট্রাম্পের দাবি, এই প্রক্রিয়ায় ভোট জালিয়াতি হতে পারে এবং ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী জো বাইডেনের সুবিধার জন্য তা করা হচ্ছে। ফেডারেল সরকার ২২ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দিলে তারা ভোটের কাজ সুন্দরভাবে করতে পারবে। কিন্তু শুক্রবার ট্রাম্প এর বিরোধিতা করে বলেন, জনগণের আয়কর থেকে ভোটের জন্য অর্থ দিতে রাজি নন তিনি।
সাবেক ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা উদ্বেগের সঙ্গে জানিয়েছেন, ডাক সেবাকে নতজানুর চেষ্টা করছেন ট্রাম্প। প্রেসিডেন্টের এ অর্থ বরাদ্দ না দেয়াকে ডাক পরিষেবার ওপর ‘হামলা’ বলছে ডেমোক্র্যাটরা। এরই মধ্যে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। অর্থ সংকটের চাপে মেইল বক্স সরানো হচ্ছে। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মেশিনগুলো ডাক পরিষেবা থেকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। কমানো হয়েছে কর্মীদের কর্মঘণ্টা। ভোট যতই এগিয়ে আসছে মার্কিন আইনপ্রণেতারা ডাক বিভাগের এ পরিবর্তনে দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে পড়ছেন। ডেমোক্র্যাটরা বলছেন, আমেরিকার ভোট পদ্ধতিকে জটিল করে তুলতে এসব ট্রাম্পের কারসাজি।
Posted ৭:৩৮ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh