রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০২৪ | ১৮ কার্তিক ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

আল জাজিরাকে সাক্ষাতকার

মুসলিমদের কষ্ট বুঝতে পেরেছেন ম্যাক্রন

বাংলাদেশ অনলাইন :   |   রবিবার, ০১ নভেম্বর ২০২০

মুসলিমদের কষ্ট বুঝতে পেরেছেন ম্যাক্রন

মহানবী হযরত মোহাম্মদ (স.) কে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্রের প্রতিবাদে বিশ্বব্যাপী মুসলিমরা যে ‘সেন্টিমেন্ট’ বা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, কষ্ট পেয়েছেন তা অনুধাবন করতে পেরেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন। আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মহানবী (স.)কে নিয়ে যে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন করা হয়েছে তাতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন মুসলিমরা। হতাশ হয়েছেন। তবে একই সঙ্গে তিনি একথাও বলেন যে, তিনি ‘উগ্রপন্থি ইসলামের’ বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। এই উগ্রপন্থা বিশেষ করে মুসলিম সহ সব মানুষের জন্য হুমকি।

ম্যাক্রন এমন এক সময়ে এ মন্তব্য করেছেন যখন ওই ব্যঙ্গচিত্র নিয়ে ফরাসি সরকার এবং মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা চরম আকারে পৌঁছেছে। মহানবী (স.)-এর এমন ব্যঙ্গচিত্রকে মুসলিমরা ব্লাসফেমি বা ধর্ম অবমাননা হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি মহানবী (স.)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন করে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন স্যামুয়েল প্যাটি নামে এক শিক্ষক। এ কারণে প্রকাশ্যে দিনের বেলায় রাস্তায় তার শিরশ্ছেদ করে এক চেচেন যুবক। এ ঘটনায় ওই শিক্ষকের পক্ষ অবলম্বন করেন ইমানুয়েল ম্যাক্রন। তিনি ব্যঙ্গচিত্রকে মত প্রকাশের স্বাধীনতা হিসেবে অনুমোদন দিয়ে এমন ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনকে সমর্থন করেন। একই সঙ্গে ইসলামের সঙ্গে সন্ত্রাসকে যুক্ত করে ফেলেন। এর প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠে বাংলাদেশসহ মুসলিম দেশগুলো। ডাক উঠেছে ফরাসি পণ্য বর্জনের। দেশে দেশে ঘেরাও করা হয়েছে ফরাসি দূতাবাস।

এমন এক প্রেক্ষাপটে আল জাজিরাকে সাক্ষাতকার দিয়েছেন ম্যাক্রন। তিনি বলেছেন, (মুসলিমদের পক্ষ থেকে) যে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে আমি তা বুঝতে পারি এবং আমি তাদেরকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু আপনাদেরকে ঠিক এই মুহূর্তে আমার ভূমিকা বুঝতে হবে। এখন আমাদের দুটি কাজ করতে হবে। এক হলো- পরিস্থিতি শান্ত করতে হবে। দুই হলো- একই সঙ্গে এসব অধিকার সুরক্ষিত করতে হবে। সব সময়ই আমি আমাদের দেশে মুক্তভাবে কথা বলার, লেখার, ভাবার এবং আঁকার স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলবো। সাক্ষাতকারে তিনি রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করেন। তিনি এমন বক্তব্যকে রাজনৈতিক নেতাদের তরফ থেকে ‘বিকৃতি’ হিসেবে বর্ণনা করেন। বলেন, জনগণকে এটা বুঝানো হয়েছে যে, ওই ব্যঙ্গচিত্র বানিয়েছে ফরাসি রাষ্ট্র।

তিনি বলেন, আমি মনে করি আমার কথাগুলোকে মিথ্যা ও বিকৃত করে ব্যবহার করা হয়েছে। এর ফলেই এমন প্রতিক্রিয়া এসেছে। লোকজন বুঝেছে যে, আমি ব্যঙ্গচিত্রকে সমর্থন দিয়েছি। এই ব্যঙ্গচিত্র সরকারি কোন প্রজেক্ট নয়। কিন্তু তা এসেছে অবাধ ও নিরপেক্ষ সংবাদ মাধ্যম থেকে। এসব সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে সরকারের কোনো যোগসূত্র নেই।

২০১৫ সালে শার্লি এবদো অফিসে চালানো হামলার মামলা চালু করার সময় সম্প্রতি তাতে নতুন করে ওই ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশিত হয়েছে। সেপ্টেম্বরে ওই ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশিত হয়। এ সময় তিনি মুক্ত মত প্রকাশের অধীনে ‘রাইট টু ব্লাসফেম’-এর পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। এ ঘটনায় তিনি মুসলিম অধিকারকর্মীদের কাছ থেকে ব্যাপক সমালোচনার শিকার হয়েছিলেন। ওই সময় ২রা অক্টোবর তিনি এক বক্তব্যে দাবি করেছিলেন ‘বিশ্বব্যাপী সঙ্কটে ইসলাম’। একই সঙ্গে তিনি ‘ইসলামের সংস্কার’ পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলেন, যাতে তা তার প্রজাতন্ত্রের মূল্যবোধের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হয়।

এরপর ফরাসি শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটির শিরচ্ছেদ করার পর ম্যাক্রন তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। ওদিকে শিক্ষক স্যামুয়েলকে হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন ফরাসি মুসলিমরা। একই সঙ্গে তারা এখন আতঙ্কে। তারা মনে করছেন, ইসলামিক সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে এখন শাস্তিমূলক দমনপীড়ন চালাবে সরকার। মসজিদগুলোতে নজরদারি বৃদ্ধি পাবে। তবে ব্যঙ্গচিত্র নিয়ে ম্যাক্রনের বক্তব্যে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ, বাংলাদেশ থেকে ফিলিস্তিন- সর্বত্র মুসলিমরা যোগ দিয়েছেন ফ্রান্স বিরোধী বিক্ষোভে। কিছুদিন ধরে ইসলাম এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে বিতর্ক গভীর হয়েছে। মুসলিম প্রধান দেশগুলোর সরকারি অনেক কর্মকর্তা এবং বিক্ষোভকারীরা ফরাসি পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছেন।

ইসলামে মহানবী (স.)-এর ছবি আঁকা একেবারেই নিষিদ্ধ। ফলে যে ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করা হয়েছে তাতে তারা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। বেড়েছে ইসলামভীতি। কারণ, ওই ব্যঙ্গচিত্রের কারণে ইসলামকে সন্ত্রাসের সঙ্গে জুড়ে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ইমানুয়েল ম্যাক্রন বলেছেন, বিশ্বে বর্তমানে এমন অনেক মানুষ আছেন, যারা ইসলামকে বিকৃত করছেন। তারা হত্যা, গলা কেটে হত্যার পক্ষে অবস্থান নিতে ধর্মকে ব্যবহার করেন। বর্তমানে ইসলামের নামে কিছু চরমপন্থি আন্দোলনকারী এবং ব্যক্তিবিশেষ সহিংসতা চর্চা করেন। ম্যাক্রন বলেন, অবশ্যই এটা ইসলামের জন্য একটি সমস্যা। কারণ, এতে প্রথম ভিকটিম হচ্ছেন মুসলিমরা। সন্ত্রাসের শিকারে পরিণত হচ্ছেন এমন শতকরা ৮০ ভাগের বেশি মানুষ মুসলিম। এটা আমাদের সবার জন্যই একটি সমস্যা।

আল জাজিরার সিনিয়র রাজনৈতিক বিশ্লেষক মারওয়ান বিশারা বলেছেন, ম্যাক্রন তার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তার অবস্থান পরিষ্কার করার চেষ্টা করেছেন। যেসব ইস্যু ফ্রান্স ও মুসলিম দুনিয়ার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ- সেসব বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন। তিনি আরো বলেন, আমি মনে করি ক্ষতি যা হবার তা হয়ে গেছে। আমার মনে হয় না যে, এই উত্তেজনা অব্যাহত রাখা উচিত। কারণ, দিনশেষে দেখা যাবে কেউই বিজয়ী নন। বিশারা আরো বলেন, বহু মুসলিম দেশের সঙ্গে সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ইস্যুতে কাঁধে কাঁধ রেখে অবস্থান করছে ইউরোপ। ফলে উত্তেজনার মধ্যে কেউই বিজয়ী নন। যদি এতে কারো লোকসান বা ক্ষতি হয়ে থাকে তাহলে তারা হবেন ইউরোপে বসবাসকারী বিপুল সংখ্যক মুসলিম। তাই ফরাসি প্রেসিডেন্ট এখন যেহেতু আন্তরিকভাবে বুঝতে পেরেছেন কেন ওই ব্যঙ্গচিত্র বিতর্কিত এবং তিনি একটি ধর্ম হিসেবে ইসলামের সমালোচনা করেন নি- তখন ফ্রান্স, ইউরোপ এবং মুসলিম বিশ্বের মধ্যে আবহ উন্নতকরণ শুরু করা উচিত।

Posted ৮:১৭ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০১ নভেম্বর ২০২০

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বু বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩১৫
১৬১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭
৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

86-47 164th Street, Suite#BH
Jamaica, New York 11432

Tel: 917-304-3912, 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: weeklybangladesh@yahoo.com

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.