বাংলাদেশ অনলাইন ডেস্ক : | শনিবার, ০৩ এপ্রিল ২০২১
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটলে স্থানীয় সময় ২ এপ্রিল (শুক্রবার) দুপুরে হামলার চেষ্টা হয়েছে। এ ঘটনায় এক পুলিশ সদস্য নিহত এবং আরেকজন আহত হয়েছেন। পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন সন্দেহভাজন হামলাকারী। ক্যাপিটল ভবনে গত ৬ জানুয়ারি তৎকালীন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকদের হামলার তিন মাস পর গতকাল এ ঘটনা ঘটল। শুক্রবারের এ হামলাকে সন্ত্রাস-সংশ্লিষ্ট বলে মনে করছে না কর্তৃপক্ষ। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা জানিয়েছে, ২ এপ্রিল (শুক্রবার) যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল ভবনের বাইরে এক গাড়িচালক সজোরে ব্যারিকেডে ধাক্কা দিলে দুই ক্যাপিটল পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন।পরে তাঁদের একজন হাসপাতালে মারা যান। ঘটনাটি ঘটে ওয়াশিংটন ডিসির কন্সটিটিউশন অ্যাভিনিউতে ক্যাপিটল ভবনের সিনেট অংশের একটি নিরাপত্তা চৌকিতে।
ক্যাপিটল পুলিশ বলছে, সন্দেহভাজন এক ব্যক্তি সজোরে নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ধাক্কা দেওয়ার পর ছুরি হাতে গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন। তাঁকে তৎক্ষণাৎ আটক করা হয়।স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানিয়েছে, গুরুতর আহত অবস্থায় সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁর মৃত্যু হয়।
গত জানুয়ারীতে ট্রাম্পপন্থি সমর্থকদের দাঙ্গা বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ভোটের গণনারোধ করার চেষ্টা করার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার বেষ্টনীতে রাখা হয়েছিল।
এদিকে হামলার পর ওয়াশিংটন ডিসির মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান রবার্ট কনটে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এখন পর্যন্ত এই হামলাকে সন্ত্রাসবাদের ঘটনা বলে মনে হচ্ছে না। এক বিবৃতিতে তিনি নিহত পুলিশ কর্মকর্তার নাম উইলিয়াম বিলি ইভান্স বলে উল্লেখ করেছেন। উইলিয়াম বিলি ইভান্স ক্যাপিটল পুলিশে ১৮ বছর ধরে কাজ করছিলেন।
তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আইন-শৃঙ্খলা বিভাগের দুটি সূত্র বলছে, সন্দেহভাজন হামলাকারীর বয়স ২৫ বছর। এ ছাড়া তদন্তের সঙ্গে জড়িত দুজন কর্মকর্তা সিবিএস নিউজকে বলেছেন, সন্দেহভাজন হামলাকারীর নাম নোয়াহ গ্রিন। তিনি ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা।
স্থানীয় সময় দুপুর একটার দিকে ক্যাপিটল হিলের পুলিশের সতর্কতা ব্যবস্থা (অ্যালার্ট সিস্টেম) থেকে একটি মেইল আসে। মেই বলা হয়- ক্যাপিটল হিলের ভেতরে ও বাইরে যারা আছে, তারা যেন কোনো কিছুর আড়ালে অবস্থান করে নিজেদের রক্ষা করেন। সবাইকে জানালা বা দরজার কাছ থেকে সরে যেতে বলা হয়।
পুলিশ বলছে, ঠিক সে সময় সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তি একটি নীল রঙের সেডান গাড়ি নিয়ে ক্যাপিটলের উত্তর দিকের বেরিকেডের ওপর আছড়ে পরে। তারপর চালক গাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে ছুরি দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। একসময় পুলিশের একজন সদস্য আগ্নেয়াস্ত্র বের করে তাঁকে গুলি করেন।
হামলাকারী নিহত হওয়ার আগে তাঁর ছুরিকাঘাতে দুজন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে- ঘটনাস্থলে হেলিকপ্টার উড়ছে, দুটি স্ট্রেচারে করে দুজনকে অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়া হচ্ছে।
ওয়াশিংটন ডিসির মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান রবার্ট কনটে জানিয়েছেন, সন্দেহভাজন ওই হামলাকারী একাই ছিল।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এই সহিংস হামলার কথা জেনে তাঁর হৃদয় ভেঙে গেছে। তিনি পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যুতে তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। তাঁর সম্মানে হোয়াইট হাউসের পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে।
ডেমোক্রেটিক হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেছেন, ‘আমেরিকানদের হৃদয় ভেঙে গেছে।’ নিহত পুলিশ সদস্য ইভান্সকে ‘গণতন্ত্রের শহীদ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন তিনি। রিপাবলিকান সিনেটের সংখ্যালঘু দলীয় নেতা মিচ ম্যাককনেল লিখেছেন, তিনি প্রার্থনা করছেন।
ক্যাপিটল হিলে হামলাকারীর পরিচয় জানা গেছে : যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিল ভবনে হামলাকারীর পরিচয় জানা গেছে। বলা হয়েছে, তার নাম নোয়া গ্রিন, বয়স ২৫। তিনি ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা ছিলেন। এক ফেডারেল সূত্রের বরাতে ৩ এপ্রিল (শনিবার) এ খবর দিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সিএনএন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রিনের সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায় তিনি চাকরি হারিয়েছেন এবং অসুস্থতায় ভুগছেন। কয়েক সপ্তাহ আগে তিনি পোস্ট করে বলেন, ফেডারেল সরকার তাকে “মাইন্ড কন্ট্রোল” দিয়ে টার্গেট করছে। হামলার দু’ঘণ্টারও কম সময় আগে গ্রিন বেশ কয়েকটি ইনস্টাগ্রাম স্টোরি পোস্ট করেছিলেন। এর মধ্যে কয়েকটি ভিডিও লিংকও রয়েছে।
আরও বলা হয়, একটি ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার কৃষ্ণাঙ্গদের এক নম্বর শত্রু। আরেকটি ইন্সটাগ্রাম পোস্টে গ্রিন লিখেছিলেন, আমি যে দুর্ভোগ পোহাচ্ছি তা সম্ভবত এফবিআই এবং সিআইএ’র তৈরি।
Posted ৫:৩৩ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০৩ এপ্রিল ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh