ড. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ : | বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪
অতি সাম্প্রতিক ঘথনা হলো ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী দুজনের বিতর্ক। তেমন মনোগ্রাহী না হলেও বিভিন্ন কারণে সিবিএস নেটওয়ার্ক আয়োজিত ১ অক্টোবর ২০২৪ তারিখের ডিবেটটি আকর্ষণীয় ছিল নানা কারণে। ভ্যান্স এবং ওয়ালয এর মধ্যে বয়সের দিক থেকে পার্থক্য প্রচুর। সপ্রতিভ যুবক ভ্যান্স ইয়েলে পড়াশুনা করেছেন। টিমথি ওয়ালয (Timothy James Walz) ১৯৬৪ সনে জন্ম গ্রহণ করেন। মিনসেটা ষ্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স করেন। দীর্ঘদিন সুনামের সাথে আর্মিতে কাজ করেন এবং বিভিন্ন পদক অর্জন করেন।
আর্মি ন্যাশনাল গার্ডে কাজ করার সাথেসাথে ট্যানিং বেড ফ্যাক্টরীতে ও তিনি কাজ করেন। হাই স্কুলে সমাজ বিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন। তাছাড়া ফুটবল কোচের দায়িত্বও পালন করেছন। ২০১৮ সালে মিনেসোটার গভর্নর নিযুক্ত হওয়ার পূর্বে ৬ বার তিনি হাউস অব রেপ্রেসেন্টটেতিভে নির্বাচিত হয়েছেন (২০০৬-২০১৮)। ওয়ালয বর্তমানে দ্বিতীয় বারের মত নির্বাচিত গভর্নর। সকল নিরিখেই ভ্যান্সের চেয়ে গ্রামীণ আমেরিকান মূল্যবোধের সাথে পরিচিতি ওয়ালসের অনেক বেশী। সোজা সাফটা কথা বলেন। কাজ কর্মে, সাধারণ মানুষের প্রতি দরদ ভালোভাসায় সদায় সিক্ত মানুষটি আপাদোমস্তক একজন কর্মবীর।
ভ্যান্স স্মার্ট যুবক। কথার মারপ্যাচে যে কোন বিষয়কে নিজে মত করে আয়ত্তে আনতে পারেন। প্রয়োজনে ট্র্যাম্পের চাহিদা মত যুক্তি যেমন দিতে পারেন তেমনি অপছন্দনীয় জনগোষ্ঠীর ব্যাপারে বেফাঁস মন্ত্বব্য করেন যত্রতত্র। তবে, গতকালের (১ অক্টোবর) বিতর্কে ট্রেকে থাকার প্রয়াস নিয়েছেন যদিও ২০২০ নির্বাচনের ফলাফল পরনে কায়দা করে জবাব এড়িয়ে গেছেন। গর্ভপাত আবন্দ রিপ্রডাক্সন বিষয়ক ইস্যুগুলোতে সমন্বয়কের এবং গভর্নর ওয়ালজের যুক্তিপূর্ণ কথা পাশ কাটিয়ে গিয়ে বেশ কিছু অবান্তর কথা বলেছেন। মেক্সিকো সীমান্তে অভিবাসীদের আগমন সংক্রান্ত অনেক তথ্য উপাত্ত সঠিক ভাবে ব্যাখ্যা করতে মনগড়া কথা বলেছেন। ট্র্যাম্পের বাঁধা দেয়ার কারণে যে দ্বিপাক্ষিক সমযোতামূলক প্রস্থাব পাশ করানো সম্ভব হয়নি আত্মা স্বীকার না করে বেআইনি অভবাসনের সমস্ত দোষ কমলা হ্যারিসের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন। ট্র্যাম্পের সময়ে যে অমানবিক ভাবে মাদেড় তাদের শিশু সন্তানের কাছ থেকে আলাদা করা হয়েছিল ইস্যুটি উত্তাপিত হলে সত্য জবাব দেননি। মোদ্দা কথা বিভিন্ন পলিসি প্রশ্নে তিনি ট্র্যাম্পের সুরেই কথা বলেছেন।
গতকালের বিতর্কটির একটি সুন্দর দিক ছিল ব্যক্তিগত আক্রমণে না গিয়ে বিভিন্ন পলিসি ইস্যু নিয়ে কথা বলা। সমন্বয়ক দুজনও এ ব্যাপারে খুবই সতর্ক ছিলেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী দুজনেই বিতর্কের শুরু থেকেই ভদ্রজনোচিত আচরণ প্রদর্শন করেছেন। তথ্য যাচাই করা হবে না এমন প্রতিজ্ঞা সিবিএস নেটওয়ার্ক করেছিল। কয়েকটি ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। ভ্যান্স এ নিয়ে রাগ দেখিয়েছেন। এ ছাড়া তেমন কোন অশালীনতা লক্ষ্য করা যায়নি। সব মিলিয়ে একটি পরিছন্ন অনুষ্ঠান ছিল এ বিতর্ক সভা। অনুষ্ঠান শেষে দর্শক শ্রোতাদের অনুভূতি থেকে এমন মতামতই প্রকাশ পেয়েছে। এ বিতর্কে একক ভাবে কোন প্রার্থী জয়ী হয়নি বলেই প্রায় সকল মহলেরই ধারণা।
বিতর্কটি থেকে ট্র্যাম্প বা কমালা হ্যারিস কেউই নির্বাচনে জেতার মত কোন আলাদা শক্তি সঞ্চয় করতে পারবে না। তবে, প্রতীয়মান হয় ট্র্যাম্প তার উত্তরসূরি হওয়ার যোগ্যতা রাখেন এমন একজনকে ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে বেছে নিতে সক্ষম হয়েছেন। ভ্যান্স পেন্সের মত নীতিবান হবেন কিনা বলা মুশকিল তবে তিনি ট্র্যাম্পের অন্ধ অনুসারী হবেন তা অনেকটা নিশ্চিত ভাবেই বলা চলে। নিকট অতীতে দারুণ ট্র্যাম্প বিরোধী ভ্যান্স স্বার্থের প্রশ্নে ভোল পাল্টাতে দ্বিধা বোধ করেননি। ধারনা করা খুবই সঙ্গত হবে গদি টিকিয়ে রাখতে তিনি ট্রাম্পকে অন্ধভাবে মেনে চলবেন। তবে, হোয়াইট হাউসে যাত্রাপথ খুবই কঠিন হবে। ট্রাম্প নির্বাচনের বর্তমান পর্যায়ে কমালা হ্যারিসে চেয়ে প্রায় চার পয়েন্টে পিছিয়ে আছেন। নির্বাচনে ব্যয় নির্বাহের ফান্ড কমালার ট্র্যাম্পের চেয়ে অনেক বেশী স্ফীতকায়। সমর্থক তালিকায় রিপাবলিকান অনেকেই আছেন, যেন আছেন সুবিখ্যাত গায়ক গায়িকা, খেলোয়াড়।
Posted ১:৩২ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh