বাংলাদেশ ডেস্ক : | বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট ২০২০
আমেরিকায় এমনিতেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি। এর মধ্যেই দেশটির শিশুদের মধ্যে করোনার সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে অন্তত ৭ শতাংশ শিশু করোনায় সংক্রমিত হয়েছে। করোনা শনাক্তের পরীক্ষার অপ্রতুলতার কারণে এই সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই সংখ্যা আরও বেশি হবে। নিউইয়র্ক ডেইলি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমেরিকায় শিশুদের করোনা সংক্রমণ নিয়ে ১৪ আগস্ট সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সিডিসি বলেছে, গত মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত আমেরিকায় শিশুদের মধ্যে করোনার সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। এমনিতেই প্রাপ্তবয়স্ক ও গুরুতর অসুস্থ ব্যক্তিদের করোনার পরীক্ষার হার খুবই কম। এই পরিস্থিতিতে শিশুদের পরীক্ষা করানোয় অগ্রাধিকার কম। এ কারণে শিশুদের সংক্রমণের প্রকৃত তথ্য অস্পষ্ট। চলতি মাসের শুরুর দিকে আমেরিকার একাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস (এএপি) জানিয়েছে, গত ৯ জুলাই থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত দেশটিতে শিশুদের করোনায় সংক্রমিত হওয়ার হার ৯০ শতাংশ বেড়েছে।
এএপি ও চিলড্রেনস হসপিটাল অ্যাসোসিয়েশনের একটি যৌথ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাইয়ের শেষ দুই সপ্তাহে আমেরিকায় ৯৭ হাজারেরও বেশি শিশুর করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির তথ্য অনুযায়ী, ১৬ আগস্ট রাত পর্যন্ত আমেরিকায় প্রায় ৫৪ লাখের বেশি মানুষ করোনায় সংক্রমিত হয়েছে। আর এই সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে এক লাখ ৭০ হাজার ১৯ জনের।
সিডিসি বলছে, শিশুরা অন্য কারও কাছ থেকে এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে সহজেই অন্যদের সংক্রমিত করতে পারে। তবে সংক্রমিত শিশুদের হাসপাতালে ভর্তির হার অনেক কম। প্রাপ্তবয়স্কদের চেয়ে শিশুরা তুলনামূলক কম অসুস্থ হয়।
সিডিসি এর আগে শিশুদের মধ্যে করোনার উপসর্গ নিয়ে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই গবেষণায় চীন থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, শিশু রোগীদের (১৮ বছরের নিচে) ৭৩ শতাংশের জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টের লক্ষণ ছিল। অন্যদিকে প্রাপ্তবয়স্ক (১৮ থেকে ৬৪ বছর) রোগীদের ৯৩ শতাংশের এ লক্ষণ ছিল। আক্রান্ত রোগীদের ৫ দশমিক ৭ শতাংশ বা ১৪৭টি শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন হয়, যা প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের তুলনায় কম। এই গবেষণার অন্তর্ভুক্ত শিশু রোগীর তিনজন মারা যায়। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ১৪৭টি শিশুর মধ্যে ১৫টি শিশুকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়ার প্রয়োজন হয়। চীনে ১৬ বছরের নিচে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ৪১ দশমিক ৫ শতাংশের ক্ষেত্রে জ্বর হয়েছে, ৪৮ দশমিক ৫ শতাংশের কাশি ছিল এবং ১ দশমিক ৮ শতাংশকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্য নিয়ে করা গবেষণায় দেখা গেছে, ১৮ বছরের নিচে শিশুদের মধ্যে কোভিড-১৯-এর প্রকোপ কম। তবে এই বয়সের মধ্যে অপেক্ষাকৃত বেশি ঝুঁকিতে একদম ছোট শিশুরা।
সিডিসি বলছে, লকডাউন ও স্কুল বন্ধ থাকায় এত দিন শিশুদের মাঝে করোনায় সংক্রমণের হার অনেক কম ছিল। এখন স্কুল খুলে গেলে এই হার আরও বাড়তে পারে।
এ বিষয়ে অ্যারিজোনার একজন স্কুলশিক্ষক ম্যাট চিচ্চি বলেন, ‘আমি যদি ক্লাস নেওয়া শুরু করি, তাহলে একটি ছোট্ট কক্ষে ৩০ জনের বেশি শিশু থাকবে। ওই কক্ষে একটি বহির্গমন পথ, বাতাস চলাচলেরও তেমন ভালো ব্যবস্থা নেই। করোনা মহামারির এই সময়ে এটা মোটেও ঠিক হবে না।’ প্রতিবেদনে বলা হয়, স্কুল খুলে গেলে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সবার জীবনের ঝুঁকি রয়েছে। এ কারণে ম্যাট চিচ্চি তাঁর চাকরি ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা করছেন। কারণ, তিনি দেখেছেন জর্জিয়ার একটি স্কুল খোলায় সেখানে সংক্রমণ ছড়িয়েছিল। পরে সেখানকার এক হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাদের কোয়ারেন্টিনে যেতে হয়েছিল।
Posted ৭:১৯ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh