বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ০১ অক্টোবর ২০২০
করোনা মহামারিকালীন লকডাউন শুরু হওয়ার পর নিউইয়র্কে প্রথম দিকে বাড়ি ক্রয়-বিক্রয় ও মর্টগেজ লোন পরিশোধ নিয়ে অনেকটা অনিশ্চয়তায় পড়ে যান সাধারণ মানুষ। লকডাউন শেষে মর্টগেজ লোনের বিষয়টি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে। বর্তমানে রিয়েল এস্টেট মার্কেটে বাড়ি কম, গ্রাহক বেশি। এমতাবস্থায় বাড়ির দাম কমার কোন সম্ভাবনা নেই। উল্টো লাফিয়ে বাড়ছে বাড়ির দাম। অনেক সময় দেখা যাচ্ছে পুরো অফার দিয়েও বাড়ি পাওয়া যাচ্ছে না। করোনা মহামারীতে আমেরিকান সিটিজেন ও বৈধভাবে বসবাসকারীদের ফেডারেল সরকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে। সেই প্রনোদনার অর্থের কারণে নগদ মুদ্রার স্ফীতি বেড়ে গেছে। রিয়েল এস্টেট মাকের্টে সৃষ্টি হয়েছে একধরণের সংকট। সরকারের দেয়া এই আর্থিক সুবিধা নিয়ে কমিউনিটির অনেকের মধ্যে চলছে বাড়ি ও গাড়ি কেনার অসম প্রতিযোগিতা। এসব কারণে রিয়েল এস্টেট মার্কেটে বিশেষ করে সিটির ইমিগ্রান্ট অধ্যুষিত আবাসিক এলাকাগুলোতে বাড়ির মূল্য প্রকৃত বাজার মূল্যের চেয়ে গত কয়েক মাসে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, বলে জানিয়েছেন রিয়েল এস্টেট অর্থায়নে অগ্রণী প্রতিষ্ঠান এলায়েড মর্টগেজ গ্রুপের সিনিয়র লোন অফিসার মোহাম্মদ জান ফাহিম।
ব্যাংকার ইসমাইল আহমেদ, এটর্নি আফফার বকশ্ ও মোহাম্মদ জান ফাহিম
সাপ্তাহিক বাংলাদেশ এর সাথে এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, নিউইয়র্ক সিটিতে বিক্রয়যোগ্য বাড়ির সংখ্যার চেয়ে ক্রেতার সংখ্যা অধিক হওয়ায় সম্ভাব্য ক্রেতারা প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে বাড়ির লিস্টিং প্রাইসের চেয়ে অধিক মূল্যে বাড়ি ক্রয় করার আগ্রহ প্রদর্শন করছেন। অসম এ প্রতিযোগিতায় বাড়ির দাম বেড়ে গেছে। এছাড়া যারা আনএমপ্লয়মেন্ট বেনিফিট এবং প্যানডেমিকের কারণে ব্যবসায়ে ক্ষতি হওয়ার ঘোষণা দিয়ে স্মল বিজনেস লোন নিয়ে বাড়ি কিনছেন বা বাড়ি কেনার কাজে এই অর্থ বিনিয়োগের চেষ্টা করছেন। তাদের জন্য এভাবে বাড়ি কেনা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে বলে জানান জান ফাহিম। কারণ আনএমপ্লয়মেন্ট বেনিফিট নিয়ে সেই অর্থ তারা বাড়ি বা গাড়ি কেনার কাজে ব্যয় করতে পারেন না এমন নির্দেশনা রয়েছে। ছোট ব্যবসায়ের ক্ষেত্রেও একইভাবে সংশ্লিষ্টরা যে ব্যবসায়ের জন্য অর্থ নিয়েছেন সেই ব্যবসায়েই তাদেরকে অর্থ কাজে লাগাতে হবে। একথা সত্য যে, এই লোন স্বল্প সূদে দেয়া হয়েছে। কিন্তু অনেকেই মনে করছেন যে, এ লোন মওকুফযোগ্য বা ব্যাংক্রাপ্সি ফাইল করা হলে ঋণের অর্থ পরিশোধ না করলেও চলবে, যা সঠিক নয়। প্রতি মাসে এ ঋণ পরিশোধ করতে হবে। সরকার প্রয়োজনে আংশিক রিলিফ দিতে পারে। কিন্তু ঋণ অবশ্যই পরিশোধযোগ্য। এসব দিক চিন্তা না করে এক খাতের অর্থ আরেক খাতে বিনিয়োগের চেষ্টা করা হলে সংশ্লিষ্টরা ভবিষ্যতে সমস্যার মধ্যে পড়তে পারেন। এমনকি সরকার তাদেরকে আর্থিক দণ্ডে দণ্ডিত করতে পারে।
রিয়েল এস্টেট অর্থায়নে দীর্ঘ অভিজ্ঞতার অধিকারী মোহাম্মদ জান ফাহিম আরো জানান, আনএমপ্লয়মেন্ট বেনিফিট বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ে ক্ষতির জন্য নেয়া অর্থে বাড়ি কিনতে গিয়ে এমন ঘটনা ঘটছে যে, ব্যাংকগুলো তাদেরকে মর্টগেজ লোন দিতে অস্বীকার করছে। কারণ বিপদে পড়া মানুষকে দেয়া আর্থিক সহায়তা বাড়ি বা গাড়ি কেনার মতো বিলাসিতার জন্য নয়। মর্টগেজ লোন নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারির জন্য রয়েছে আধা সরকারি FannieMac I FreediMac সংস্থা। তাদের কাছে এসব অনিয়ম ধরা পড়লে অনিয়মকারীদের মর্টগেজ লোন মঞ্জুরের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা আসবে। । বাংলাদেশী কম্যুনিটির লোকজন বর্তমানে বাড়ি ক্রয় এবং কন্টাক্ট সাইন করছেন। অনেক লোন ক্লোজ হচ্ছে। অনেকে যারা কন্টাক্ট এ ছিলেন তারা আনএমপ্লয়মেন্ট নেওয়াতে অসুবিধা হচ্ছে লোন নিতে । সুতরাং এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন অনেকেই। কারণ ব্যাংক আনএমপ্লয়মেন্ট অবস্থায় লোন ক্লোজ করতে পারে না।প্যানডেমিকের সময় যারা কাজ হারিয়েছেন এবং ফেডারেল আমএমপ্লয়মেন্ট বেনিফিট গ্রহণ করেছেন তারা যদি মর্টগেজ লোন পেতে চান তাহলে তাদেরকে ফুলটাইম কাজে ফিরে যেতে হবে। সেলফ-এমপ্লয়মেন্টের ক্ষেত্রে যারা কাজে যোগ দিয়েছেন তাদের কাজ শুরু করার পর এক মাসের ডিপোজিট যাচাই করা হবে এবং সেই এক মাসের আয় হতে হবে পূর্ববর্তী বছরের একই মাসের আয়ের সমপরিমাণ ।
বর্তমানে মর্টগেজ লোনের ওপর সূদের হারকে জান ফাহিম সর্বকালের নিম্ন হার হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, এই সুযোগ নিয়ে মর্টগেজ লোন গ্রহণকারীরা পুন:তফসিলীকরণ বা রিফাইন্যান্সের সুযোগ নিয়ে মাসিক মর্টগেজের পরিমাণ কমিয়ে নিচ্ছেন। অনেকে ৩০ বছরের জন্য নেয়া মর্টগেজ লোনের মেয়াদ ২০ বছর, এমনকি ১৫ বছরে কমিয়ে আনছেন। এর ফলে ক্ষেত্র বিশেষে মাসিক মর্টগেজের পরিমাণ কিছু বৃদ্ধি পেলেও অর্ধেক সময়ের মধ্যে পেইড-অফ হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। যা বাড়ি মালিকদের জন্য একটি সুখবর। শুধু তাই নয়, যারা এক, দুই বা পাঁচ বছর আগে বাড়ি ক্রয় করেছেন, তারা বর্তমানে দেয়া ট্যাক্স এসাইনমেন্টের সুযোগ নিয়ে ক্লোজিং কষ্ট কমিয়ে নিতে পারেন। কমিয়ে নেয়া ক্লোজিং কস্ট সেক্ষেত্রে মূলধনের সাথে যুক্ত হবে। যা লোন গ্রহীতার জন্য লাভজনক। মর্টগেজ লোন সংক্রান্ত যেকোন পরামর্শের জন্য তিনি বাংলাদেশীদের আহ্বান জানান তার সাথে যোগাযোগ করতে।
বিস্তারিত তথ্যের জন্যে যোগাযোগ করুণ: মোহাম্মদ ফাহিম জান, NMLS 21812 এলাইড মর্টগেজ গ্রুপ, ফোনঃ-৫১৬-৩৪৮-৩৪২৮।
Posted ১১:২৩ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০১ অক্টোবর ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh