মোহাম্মদ আজাদ : | বৃহস্পতিবার, ২৫ মার্চ ২০২১
ছবি : সংগৃহীত
হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভে পাস হয়েছে বহু কাঙ্খিত ‘ড্রিম এন্ড প্রমিজ অ্যাক্ট ২০২১’ (এইচআর ৬)। গত ১৮ মার্চ বৃহস্পতিবার হাউজে ২২৮-১৯৭ ভোটে পাসকৃত বিলটির ভাগ্য নির্ভর করবে সিনেটের ওপর। তবে সিনেট জুডিশিয়ারি কমিটির চেয়ারম্যান ও সিনেট মেজরিটি হুইপ ইলিনয়ের সিনেটর ডিক ডুরবিন গত রোববার সিএনএনএন এর সাথে সাক্ষাৎকারে বিলটি সিনেটে পাস হবে বলে তার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তবে তিনি বলেছেন যে, আমরা ইতিপূর্বে ‘ডাকা’ অ্যাক্ট পাস করাতে গিয়ে পাঁচবার রিপাবলিকানদের বাধার সম্মুখীন হয়েছি। রিপাবলিকানরা বিলটি ‘ফিলিবাস্টার’ করেছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে সিনেটে আমাদের মেজরিটি থাকলেও রিপাবলিকানদের দ্বারা ফিলিবাষ্টার প্রতিহত করার প্রয়োজনীয় ৬০ ভোট আমাদের নেই। বৃহস্পতিবার ‘ড্রিম এন্ড প্রমিজ অ্যাক্টের’ পক্ষে ১০ জন রিপাবলিকান ভোট দিয়েছেন, অপরদিকে ৫ জন ডেমোক্রেট হাউজ রিপ্রেজেন্টেটিভ বিলের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। হাউজে পাস হওয়া বিলটি মূলত দুটি ইমিগ্রেশন প্রস্তাব পাস হয়েছে। ‘ডাকা’ বা ডেফার্ড অ্যাকশন ফর চাইল্ডহুড এরাইভ্যাল’ এর আওতায় অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারী মা-বাবার সঙ্গে শৈশবে আগত শিশু, যাদের এদেশে প্রবেশ করার ক্ষেত্রে কোন ভূমিকা ছিল না, তাদেরকে বৈধতা প্রদান এবং ‘টিপিএস’ বা টেম্পেরারি প্রটেক্টেড স্ট্যাটাস’ এর আওতায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা নিজ দেশে চলমান সংঘাত থেকে প্রাণ বাঁচাতে যুক্তরাষ্ট্রে সাময়িক অবস্থানের অনুমতিপ্রাপ্ত বিদেশিগণ। ১৯৯০ সালে পাসকৃত আইনটির শর্ত ছিল যে যদি আশ্রিতদের নিজ দেশে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটে তাহলে তাদেরকে নিজ নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে। উল্লেখ্য, টিপিএস এর আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় গ্রহণকারীদের মধ্যে মূলত হাইতি, এল সালভেদর ও গুয়েতেমালার লোকজন রয়েছে। ‘ডাকা’ ও ‘টিপিএস’ দুটিই ‘ড্রিম এন্ড প্রমিজ অ্যাক্টের’ আওতায় পড়েছে। এছাড়া হাউজ অন্য যে বিলটি পাস করেছে সেটি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র্রে কৃষি-শ্রমিক হিসেবে দীর্ঘদিন যাবত কর্মরত ইমিগ্রান্টদের বৈধতা দান সম্পর্কিত। সিনেটে পাসের পর প্রেসিডেন্ট বিলে স্বাক্ষর করলে বিলটি আইনে পরিণত হবে। এ আইনে উল্লেখিত ক্যাটাগরিতে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরতরা গ্রীনকার্ড লাভের পর নাগরিকত্ব লাভের প্রক্রিয়ার দিকে এগিয়ে যাবে। এজন্য সময় লাগবে নয় বছর।
দ্বিতীয় প্রভাবশালী সিনেট ডুরবিন এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ‘ডাকা’ কর্মসূচির আওতায় যাদেরকে ওয়ার্ক পারমিট ও সোস্যাল সিকিউরিটি কার্ড দিয়ে তাদের ডিপোর্টেশন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন ট্রাম্প প্রশাসন তাদের ওয়ার্ক পারমিট নবায়ন বন্ধ করে দিয়েছিল। ব্যাপারটি এক পর্যায়ে সুপ্রিম কোর্টে গড়ায়। সুপ্রিম কোর্ট ডাকা কর্মসূচির আওতাধীনদের ওয়ার্ক পারমিট নবায়ন করার পক্ষে রায় দেয়। সিনেটর বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর তাদেরকে আর ডিপোর্ট করা যাবে না এবং তাদের ওয়ার্ক পারমিট নবায়নও করতে হবে। তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, এ অবস্থায় আমরা ড্রিম এন্ড প্রমিজ অ্যাক্টকে কোন যুক্তিতে ঝুলিয়ে রাখবো?
তিনি বিলটি সিনেটে পাশের আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আমি আশা করি যে এই বিল পাস করার প্রয়োজনীয় সমর্থন আমি পাব। রিপাবলিকানদের ফিলিবাস্টার কীভাবে প্রতিহত করা সম্ভব এই মর্মে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি মনে করছি, বিলটি ফিলিবাষ্টার হবে না। কিন্তু যদি তা করা হয় তাহলে সেটি ঠেকানোর জন্য ৬০টি ভোট আমাদের নেই। আমি প্রয়োজনে আমার বন্ধু রিপাবলিকান সিনেটরদের সাথে বৈঠকে মিলিত হয়ে একটি সমাধানে পৌছার চেষ্টা করবো। অনেক রিপাবলিকান সিনেটর আছেন যারা বিলটি ফিলিবাষ্টার করতে চাইবেন না। তিনি আরও বলেন, হাউজে কমপক্ষে দশজন রিপাবলিকান রিপ্রেজেন্টেটিভ ড্রিম এন্ড প্রমিজ অ্যাক্টের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। বিলটি সিনেটে বাইপার্টিজান সিদ্ধান্তেও পাস করানো যেতে পারে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, বছরের পর বছর ধরে আটকে থাকা সমস্যা আমাদেরকে অবশ্যই সমাধান করতে হবে। আইন প্রনেতারা ছাড়া আর কারও পক্ষে এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়।
Posted ১২:৪২ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৫ মার্চ ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh