বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২০
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে ক্যালিফোর্নিযার অধিকাংশ এলাকা লকডাউনে চলে গেছে। এখনো দ্বিতীয় দফা করোনা স্টিমুলাস বিল পাস না হলেও বেশ তোড়জোড় চলছে কংগ্রেসে। গত ৮ ডিসেম্বর বাইপার্টিসান বিল নিয়ে আলোচনায় বসেন আইনপ্রণেতারা। কিন্তু কোনো মীমাংসায় তাঁরা পৌঁছাতে পারেননি। তবে একটি বিষয় মোটামুটি নিশ্চিত যে জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে ১২০০ ডলারের স্টিমুলাস চেক পাবেন না আমেরিকানরা। ফেডারেল আনএমপ্লমেন্ট বেনিফিট হিসেবে প্রতি সপ্তাহে ৩০০ ডলার করে দেয়া হবে বলে আলোচনা চলছে। কিন্তু তা কত সপ্তাহ পর্যন্ত দেয়া হবে সে সম্পর্কেও নিশ্চিত সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেননি আলোচকরা। ফেডারেল আনএমপ্লায়মেন্ট বেনিফিটের সাথে স্টেট ও স্থানীয় প্রশাসনগুলোকে কী পরিমাণে তহবিল দেওয়া হবে, তা নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারায় বিলটি আপাতত আটকে গেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ডেমোক্রেটিক পার্টি নিয়ন্ত্রিত হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ও রিপাবলিকান পার্টি নিয়ন্ত্রিত সিনেটের একটি টিম করোনা স্টিমুলাস নিয়ে নিয়ে কাজ করছে। আশা করা হচ্ছিল, গত ৮ ডিসেম্বর ৯০৮ বিলিয়ন ডলারের তহবিলটি পাস হবে। কিন্তু তা শেষ পর্যন্ত হয়নি।
আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কংগ্রেস প্রণোদনা বিল পাসে ব্যর্থ হলে বড় অর্থনৈতিক মন্দায় পড়তে হবে। যখন কোনো অর্থনীতি সংক্ষিপ্ত একটি পুনরুদ্ধার পর্যায়ের মধ্য দিয়ে মন্দা থেকে ওঠার পর আবার মন্দার মুখোমুখি হয়, তখন তা অনেক ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চিরতরে বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং বহু মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। কিন্তু এখনো এমন কোনো প্যাকেজ পাসে সম্মত হতে পারেননি দুই দলের আইনপ্রণেতারা। রয়টার্স জানায়, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর বিশেষ সুরক্ষা দেওয়ার রিপাবলিকান দাবি এবং স্থানীয় প্রশাসনগুলোকে কোন প্রক্রিয়ায় সহায়তা দেওয়া হবে, সে বিষয়ে একমত হতে না পারায় বিলটি আটকে আছে। একই কারণে কয়েক মাস ধরে আটকে আছে করোনা প্রণোদনা আইনও। এটি আইনপ্রণেতা, ব্যবসায়ী, শ্রমিক ইউনিয়ন, অঙ্গরাজ্য ও স্থানীয় প্রশাসনগুলোকে রীতিমতো হতাশ করেছে।
কংগ্রেসে এ সম্পর্কিত প্রস্তাবটি আনা সদস্যদের একজন ডেমোক্র্যাট সিনেটর মার্ক ওয়ার্নার। এ বিষয়ে রীতিমতো বিরক্তি প্রকাশ করে গত ৬ ডিসেম্বর সিএনএনকে তিনি বলেন, আগের প্রণোদনা প্যাকেজটির মেয়াদ ফুরাতে চলেছে। এই অবস্থায়ও কংগ্রেস কাজ করতে ব্যর্থ হলে তা বড় ধরনের বোকামি হবে। সামনেই ছুটির সময়। ফলে বিলটি পাসে কংগ্রেসের হাতে আর অল্প কিছু সময় আছে। চলতি মাসেই মার্কিন সরকারি সংস্থাগুলোর তহবিলের মেয়াদ ফুরাবে। এর আগেই প্রণোদনা বিল পাস হতে হবে। সে হিসেবে কংগ্রেসের হাতে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত সময় আছে। এই সময়ের মধ্যেই বিদ্যমান ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি ডলারের তহবিলের সঙ্গে আরও একটি তহবিল সংযুক্ত করার ব্যাপারে আশাবাদী প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ও সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা মিচ ম্যাককনেল।
উল্লেখ্য, আমেরিকান আইনপ্রণেতারা এই বছরের শুরুর দিকেই ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের স্টিমুলাস প্যাকেজ পাস করে। কিন্তু এ সম্পর্কিত তহবিলে অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি গত এপ্রিল থেকে আটকে আছে। করোনা মহামারি মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে ছিল বর্ধিত পরিসরে বেকার ভাতাসহ নানা ধরনের সহায়তা। এগুলো ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ মেয়াদোত্তীর্ণ হবে। এদিকে দ্বিতীয় দফায় যুক্তরাষ্ট্রে করোনা পরিস্থিতি দিন দিন বাজে দিকে যাচ্ছে। ফলে করোনা প্রণোদনা তহবিল দ্রুত পাস করার ব্যাপারে চাপ বাড়ছে। বিশেষত ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বাঁচাতে হলে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে মনে করছেন অর্থনীতি বিশ্লেষকেরা।
Posted ১১:৩২ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh