বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০
ভয়াবহ ৯/১১ এর সন্ত্রাসী ঘটনায় নিহতদের স্মরণ করলো জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটি। প্রতিবারের মতো এবারো গত ১১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় স্থানীয় হিলসাইড এভিন্যুতে আয়োজন করা হয় সমাবেশ। এ উপলক্ষে মোমবাতি প্রজ্বলন, দোয়া মুনাজাত ও সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন নেতৃবৃন্দ। এবারের স্মরণসভার বিশেষ আকর্ষণ ছিলো স্থানীয় ১০৭ প্রিসিঙ্কটের পুলিশ অফিসারদের অংশ গ্রহণ। সার্জেন্ট ব্রুকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ অফিসার স¥রণ সভায় অংশ নিয়ে কম্যুনিটির একাত্নতা প্রকাশ করেন এ উদ্যোগের সাথে। পুলিশ সার্জেন্ট ব্রুক তার বক্তব্যে জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির প্রশংসনীয় উদ্যোগকে স্বাগত জানান। সংগঠনটির সভাপতি মোহাম্মদ ফকরুল ইসলাম দেলোয়ারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জ্যামাইকা ফ্রেন্ডস সোসাইটি-জেবিএফএস’র প্রধান উপদেষ্টা এবিএম ওসমান গণি, অন্যতম উপদেষ্টা ও সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডাঃ ওয়াজেদ এ খান, মোঃ রেজাউল করিম, সদরুন নূর। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মনির হোসেন, ফারুক তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আল আমিন রাসেল, সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, আপ্যায়ন সম্পাদক সৈয়দ লিটন আলী, সাহিত্য সম্পাদক আকতার বাবুল, আফরোজা রোজী, বাংলা স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আমিনুল ইসলাম ”ুন্নু, বিশিষ্ট কম্যুনিটি এক্টিভিস্ট মোঃ তৈয়েবুর রহমান হারুন প্রমুখ। বক্তাগণ ৯/১১এর সন্ত্রাসী ঘটনায় নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন। ইতিহাসের জঘন্যতম এ ঘটনায় জড়িতদের প্রতি ঘৃণা জানিয়ে বক্তাগণ বলেন, কোন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ এধরণের বর্বরোচিত ঘটনা ঘটাতে পারে না। তারা বলেন, সন্ত্রাসীদের কোন জাত বা ধর্ম নেই। তাদের একমাত্র পরিচয় তারা সন্ত্রাসী। ৯/১১ এর ঘটনার সাথে ইসলাম ধর্মের কোন সম্পৃক্ততা থাকতে পারে না। বক্তাগণ বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। এ ধর্মে সন্ত্রাসের কোন স্থান বা সুযোগ নেই। ৯/১১ এর ঘটনায় নিহত বাংলাদেশী আমেরিকানদেরও স্মরণ করেন সমাবেশকারীগণ। তারা বলেন, আমেরিকা একটি মহান রাষ্ট্র। এ রাষ্ট্রে সকল ধর্ম বর্ণ ও ভাষাভাষী মানুষ এক পতাকার তলে সমবেত হয়ে কাজ করছে। বক্তাগণ আমেরিকার এ মহত্ব বজায় রাখার অঙ্গীকার করেন। বক্তব্য শেষে দোয়া মুনাজাত পরিচালনা করেন মোহাম্মদ রেজাউল করিম। সমাবেশে অংশগ্রহণকারীগণ ব্যানার ফেস্টুন ও মোমবাতি হাতে নিয়ে দিনটির প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এসময় স্থানীয় অন্যান্য কম্যুনিটির অনেকে শামিল হন এ সমাবেশে।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের এই দিনে সন্ত্রাসী হামলায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় নিউইয়র্ক সিটির গর্ব টুইন টাওয়ার। এদিন পরপর চারটি সন্ত্রাসী হামলায় সবকিছু ওলোট-পালোট হয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্রে। সেদিন ছিলো মঙ্গলবার। অন্যান্য দিনের সকালের মতো ব্যস্ত হয়ে উঠা ম্যানহাটানের বাণিজ্যিক পাড়া মূহূর্তেই পরিণত হয় ধ্বংস স্তুুপে। পরপর দু’টি বিমান আঘাত হানে আকাশছোঁয়া এ জমজ ভবনে। এ হামলায় প্রাণ হারান ২হাজার ৯৭৭ জন মানুষ। আহত হন ২৫ সহস্রাধিক। আজীবনের মতো শারিরীক ও মানসিকভাবে পঙ্গু হয়ে যান অনেকে। ভয়াবহ এ সন্ত্রাসী হামলায় শুধু স্থাপনার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ১০ বিলিয়ন ডলারের উপর। নাইন ইলেভেন ছিলো ইতিহাসে সবচেয়ে বড় একটি মারাত্নক সন্ত্রাসী কান্ড। যুক্তরাষ্ট্রের ফায়ার ফাইটার্স ও আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে হতবাক করে দেয়ার মতো একটি ঘটনা। টুইন টাওয়ারে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভাষাভাষী মানুষের সাথে সেদিন প্রাণ হারান বেশ কয়েকজন বাংলাদেশী আমেরিকান।
ফায়ার সার্ভিসের ৩৪৩ জন কর্মী এবং আইন শৃংখলা বাহিনীর ৭২জন মারা যান এ ঘটনায়। ১৯ জন সন্ত্রাসী যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় কয়েকটি বিমান বন্দর থেকে ক্যালিফোর্নিয়ার দিকে ছেড়ে যাওয়া চারটি যাত্রীবাহী বিমান হাইজ্যাক করে সন্ত্রাসী কাজের জন্য। তন্মধ্যে আমেরিকান ও ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের দু’টো বিমান ব্যবহার করে টুইন টাওয়ারের উত্তর ও দক্ষিণ ভবন ধ্বংসের কাজে। আক্রমনের প্রায় পৌনে দু’ঘন্টার মধ্যে ভবন দু’টি মিশে যায় মাটির সাথে। শুধু টুইন টাওয়ারই নয় আশেপাশের অনেকগুলি ভবনও ধ্বসে পড়ে এই হামলায়। সন্ত্রাসীরা হাইজ্যাককৃত আমেরিকান এয়ারলাইনসের তৃতীয় বিমানটি নিয়ে হামলা চালায় আর্লিংটন-ভার্জিনিয়ার পেন্টাগণ চত্বরে। ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের অপর বিমানটি নিয়ে ওয়াশিংটন যাওয়ার পথে তা বিধ্বস্ত হয় পেনসিলভেনিয়ার স্টোনিক্রিপ টাউনশিপে।
Posted ৮:০৯ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh