শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

১৫৪ কোটি টাকার অবৈধ ভিসা বাণিজ্য : ২ সৌদি কর্মকর্তাসহ ৮ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার

বাংলাদেশ অনলাইন :   |   সোমবার, ০৬ মার্চ ২০২৩

১৫৪ কোটি টাকার অবৈধ ভিসা বাণিজ্য : ২ সৌদি কর্মকর্তাসহ ৮ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার

সৌদি আরবের দুর্নীতি দমন কর্তৃপক্ষ নাজাহা। ছবি: সৌদি গেজেটের সৌজন্যে

ঘুষ নিয়ে বাংলাদেশি শ্রমিকদের ভিসা দেয়ার অভিযোগে ঢাকার সৌদি দূতাবাসের সাবেক দুই কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির তদারকি ও দুর্নীতি দমন কর্তৃপক্ষ নাজাহা। এই চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আট বাংলাদেশিকেও সৌদি আরবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন মোহাম্মদ নাসের উদ্দিন নূর নামে একজন, যিনি বাংলাদেশে একটি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক। নাজাহা গত ৪ মার্চ বলেছে, এই কেলেঙ্কারিতে জড়িত সবার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হচ্ছে।

গ্রেপ্তার অন্য সাত প্রবাসী বাংলাদেশি হলেন আশরাফ উদ্দিন আকনাদ, আলমগীর হোসেন খান, শফিক আল-ইসলাম শাহজাহান, জায়েদ উসাইয়েদ মাফি, আবুল কালাম মোহাম্মদ রফিক আল-ইসলাম, আজিজ আলহাক মুসলিম উদ্দিন এবং পর্যটক আলামিন খান শহীদ আল্লাহ খান। তারা অবৈধ ভিসা বাণিজ্য এবং সৌদি আরবের বাইরে বেআইনি ব্যবসা ও অর্থ পাচারে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।


আরব নিউজের খবরে বলা হয়, গ্রেপ্তার দুই কর্মকর্তা হলেন ঢাকার সৌদি দূতাবাসের কনস্যুলার বিভাগের সাবেক প্রধান ও উপরাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ ফালাহ মুদাহি আল-শামারি এবং কনস্যুলার বিভাগের উপপ্রধান খালেদ নাসের আয়েদ আল-কাহতানি। তারা বাংলাদেশি শ্রমিকদের কাছ থেকে ৫ কোটি ৪০ লাখ সৌদি রিয়াল ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ মিলেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় ওই অর্থের পরিমাণ প্রায় ১৫৪ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) সভাপতি আবুল বাশার দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় সৌদি দূতাবাসের কর্মকাণ্ড নিয়ে অভিযোগ করে এসেছি, আন্দোলন করেছি। এখন তারা নিজ দেশে আটক হয়েছেন। সত্যের জয় হয়েছে।’


বায়রা সভাপতি বলেন, এসব কাজে যেসব বাংলাদেশি সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তাদের উদ্বুদ্ধ করেছে তাদের বিরুদ্ধেও যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া উচিত। বিশেষ করে যে রিক্রুটিং এজেন্সি মালিক এই অভিযোগে আটক হয়েছেন তার অপরাধ প্রমাণিত হলে বায়রার পক্ষ থেকেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নাজাহা বলেছে, সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুই কর্মীকে অবৈধ আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ৬০ হাজার রিয়ালের বিনিময়ে একজন বিদেশি বিনিয়োগকারীর সঙ্গে ২ কোটি ৩০ লাখ রিয়ালের আর্থিক চুক্তিতে স্বাক্ষরের জন্য এক সৌদি নাগরিককে বাধ্য করেছেন। গ্রেপ্তার ওই দুই কর্মী হলেন রিয়াদ অঞ্চলে আদালতের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সার্জেন্ট মেতাব সাদ আল-ঘনুম ও স্পেশাল মিশন ফোর্সের করপোরাল হাতেম মাস্তুর সাদ বিন তাইয়েব। সংশ্লিষ্ট ফিলিস্তিনি বিনিয়োগকারী সালেহ মোহাম্মদ সালেহ আল-শালাউতকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।


এ অভিযোগের বিষয়ে ব্যাপক অনুসন্ধানের পর সৌদিপ্রবাসী আট বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

একাধিক রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক দৈনিক বাংলাকে জানান, সৌদি আরব থেকে কর্মীর চাহিদা থাকা সত্ত্বেও হঠাৎ করে সৌদি দূতাবাস নিয়ম করে যে একটি রিক্রুটিং এজেন্সি সপ্তাহে ২০টির বেশি ভিসা আবেদন জমা দিতে পারবে না। একটি এজেন্সি সপ্তাহে মাত্র একবার ভিসা আবেদন করতে পারে।

কিন্তু চাহিদার কারণে অনেক রিক্রুটিং এজেন্সি সপ্তাহে কয়েক শ পাসপোর্ট নিয়ে কাজ করে। ভিসা পেতে এই এজেন্সিগুলো সমস্যায় পড়ে যায়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কর্মীদের ভিসা পাইয়ে দিতে সৌদি দূতাবাসের কর্মীরা ঘুষ নেয়া শুরু করে।

একজন রিক্রুটিং এজেন্ট দৈনিক বাংলাকে বলেন, সংকট থাকার পরও তাদের ডলারে ঘুষ দিয়ে ভিসা ছাড় করাতে হয়েছে।

সৌদি দূতাবাসের এসব কর্মকর্তার প্ররোচনায় সৌদিগামী কর্মীদের পাসপোর্ট গ্রহণ ও ভিসা স্ট্যাম্পিংয়ের দায়িত্ব ‘শাপলা সেন্টার’ নামে একটি বেসরকারি ফার্মকে দেয়া হয়। কিন্তু বায়রার আন্দোলনের কারণে শেষমেশ সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে সৌদি দূতাবাস। পরে সংশ্লিষ্ট সৌদি কর্মকর্তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর পর ঘুষ আদায়ও বন্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশ থেকে গত বছর ৬ লাখ ১২ হাজারের বেশি শ্রমিক সৌদি আরবে গেছেন। চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে গেছেন ৮৫ হাজার ৩১৯ জন।

সৌদি সংবাদমাধ্যম জানায়, শ্রমিকদের ভিসা দেয়ার বিনিময়ে দেশটির ওই দুই সাবেক কর্মকর্তা ৫ কোটি ৪০ লাখ রিয়াল আদায় করেছেন। এই অর্থের একটি অংশ সৌদি আরবে পাঠানোর কথা তারা স্বীকার করেছেন এবং বাকিটা সৌদি আরবের বাইরে বিনিয়োগ করেছেন। ওই দুজনের পাশাপাশি আরেক সৌদি কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

অভিযুক্ত তৃতীয় কর্মকর্তার নাম প্রকাশ করা হয়নি। পরিচয় অপ্রকাশিত রেখে সৌদি আরবের রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো ঢাকায় সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তাদের অবৈধ ভিসা বাণিজ্যের ব্যাপারে নাজাহাকে তথ্য দিয়েছে। ওই তথ্যনির্ভর অভিযোগ অনুযায়ী বছরখানেক আগে ঢাকার সৌদি দূতাবাস প্রতিটি ভিসা অনুমোদনের বিনিময়ে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর কাছ থেকে ২২০ থেকে ২৫০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত আদায় করত।

নাজাহা জানায়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ঢাকায় সৌদি দূতাবাসের কর্মচারীদের সঙ্গে অবৈধ ভিসা বাণিজ্যে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। সৌদি আরবে তাদের বাসস্থানে তল্লাশি চালিয়ে ২ কোটি ১ লাখ ৮০ হাজার রিয়াল, সোনার বার এবং বিলাসবহুল গাড়ি জব্দ করা হয়েছে। বেআইনিভাবে সৌদি আরবে কাজের ভিসা বিক্রির মাধ্যমে অর্জিত অর্থে এসব অর্জন করা হয় বলে প্রমাণ মিলেছে।

নাজাহা বলেছে, ব্যক্তিস্বার্থ অর্জন বা জনস্বার্থের ক্ষতি করার জন্য সরকারি পদের অপব্যবহারকারী যেকোনো ব্যক্তিকে তারা খুঁজে বের করার চেষ্টা অব্যাহত রাখবে। কোনো কর্মকর্তা অবসর নেয়ার পরও এই অনুসন্ধানের আওতাভুক্ত হবেন।

advertisement

Posted ১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৬ মার্চ ২০২৩

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

কাঁঠাল সমাচার
কাঁঠাল সমাচার

(1383 বার পঠিত)

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.