বাংলাদেশ অনলাইন : | রবিবার, ১৪ জুলাই ২০২৪
নিহত ফেরদৌসি সুমাইয়া। ছবি : সংগৃহীত
যৌতুকের ৮ লাখ টাকা না দিতে পেরে চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেন এক গৃহবধূ। নিহতের নাম ফেরদৌসি সুমাইয়া (১৯)। জানা যায়, ফেসবুকে প্রেম-ভালোবাসা ও অভিভাবকের অমতে বিয়ে করে যৌতুকের ৮ লাখ টাকার চাপে সংসারে বনিবনা হচ্ছিলো না সুমাইয়ার। অবশেষে ৭ পৃষ্ঠার চিরকুট লিখে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন জান্নাতুল ফেরদৌসি নামের ওই গৃহবধূ। ১৪ জুলাই সকালে গৃহবধূ সুমাইয়ার মরদেহ ও চিরকুট উদ্ধারের পর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। এর আগে ১৩ জুলাই রাত ১০টার দিকে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের বিশগিরি পাড়া গ্রামে এই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে।
সূত্র জানায়, গত ৮ মাস আগে শেরপুর সদর উপজেলার সাপমারী এলাকার শিপন নামের এক যুবকের সঙ্গে ফেসবুকে প্রেমের মাধ্যমে বিয়ে হয় নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের আবুবকর সিদ্দিকের কন্যা জান্নাতুল ফেরদৌসি সুমাইয়ার। এদিকে অভিভাবকের অসম্মতিতে বিয়ে হওয়ায় মেনে নিচ্ছিলো না স্বামী শিপনের পরিবার। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রী ও পরিবারের লোকজনদের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় প্রায়ই ঝগড়াঝাঁটি লেগে থাকত।
শিপনের বিরুদ্ধে অভিযোগ বিয়ের পর সে সুমাইয়াকে যৌতুক বাবদ ৮ লাখ টাকা এনে দেয়ার জন্য নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করতো। এসব বিষয় নিয়ে রাগারাগি করে গত রোজার ঈদে সুমাইয়া তার বাবার বাড়িতে চলে আসে। এরপর থেকে সুমাইয়া সেখানেই থাকছিলেন। শনিবার রাতে সুমাইয়া মনের ক্ষোভে ৭ পৃষ্ঠার চিরকুট লিখে শয়নকক্ষে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন।
চিরকুটে সুমাইয়া লিখেন, বিয়ের গোসল টাও পেলাম না, শেষ গোসল টাও পাব না, জানাজাও পাব না। আমার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। অনেক ভালোবাসি তোমাকে শিপন, কিন্তু তুমি শেষ পর্যন্ত তোমার সঙ্গে থাকতে দিলা না। তিনি আরো লিখেন, আমি চাইলে দ্বিতীয় বিয়ে করে জীবনটা ভালোভাবে চালাতে পারতাম। কিন্তু আমি তা চাই না। বাবা মাকে উদ্দেশ্য করে সুমাইয়া লিখেন, তোমরা মনে কষ্ট নিও না। শিপনকে সুখে রাখার জন্য আমি চলে যাচ্ছি। আমার মুখ তাকে দেখতে দিও না। আমার শরীরটা কাটতে দিও না, আমি তাহলে কষ্ট পাব।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল আলম ভুঁইয়া জানান, নিহত সুমাইয়ার মরদেহ ও চিরকুট উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
Posted ৬:২৭ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৪ জুলাই ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh