বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ২৬ আগস্ট ২০২১
ভাড়া পরিশোধ না করা অথবা ভাড়া নেয়ার সময় ভাড়াটে ও বাড়ি মালিকের মধ্যে স্বাক্ষরিত ভাড়ার চুক্তির শর্ত লংঘনের অভিযোগে বাড়ি মালিক ভাড়াটেকে তার বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার জন্য নোটিশ প্রদান করতে পারেন এবং ভাড়াটে যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাড়ি থেকে চলে না যায় তাহলে বাড়ি মালিক আদালতের আশ্রয় গ্রহণ করতে পারেন। করোনা ভাইরাস মহামারী শুরু হওয়ার পর কর্মজীবী মানুষের একটি বড় অংশ, বিশেষ করে স্বল্প আয়ের লোকজন ব্যাপকভাবে কর্মহীন হয়েছেন এবং ভাড়াটেদের অবস্থা বিবেচনা করে সরকার তিন দফা ভাড়াটে উচ্ছেদ স্থগিতকরণ বা মরাটরিয়াম জারি করেছে, যাতে ভাড়া পরিশোধ না করার কারণে মালিকরা ভাড়াটেদের উচ্ছেদ করতে না পারে। এছাড়া সরকার হাউজিং আদালতগুলোর উপরও নির্দেশ দিয়েছেন যে মরাটরিয়ামের মেয়াদ পর্যন্ত আদালতগুলো যাতে আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত কোনো বাড়ি মালিকের ভাড়াটে উচ্ছেদ সংক্রান্ত মামলা গ্রহণ না করে এবং যে সমস্ত মামলা আগে থেকে বিচারাধীন ছিল সেগুলোর কার্যক্রমও বন্ধ রাখা হয়। এদিকে ফেডারেল সরকার ভাড়াটেদের বাড়ি ভাড়া পরিশোধে সহায়তার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন, যাতে ভাড়া পরিশোধ না করার কারণে বাড়ি মালিকরা ভাড়াটেদের উচ্ছেদ করতে না পারে।
কিন্তু এ অবস্থারও ব্যতিক্রম রয়েছে এবং অনেক মালিক ভাড়াটেদের উচ্ছেদ করার জন্য নোটিশ পাঠাতে শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। কোন ভাড়াটে যদি তার বাড়ি মালিকের নিকট থেকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার নোটিশ লাভ করেন, সেক্ষেত্রেও তার ঘাবড়ানোর প্রয়োজন নেই। কোভিড ১৯ এর কারণে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে মরাটরিয়ামের মেয়াদ এখনো শেষ হয়নি। এর আওতার বাইরেও কোন কারণে মালিক নোটিশ জারি করলে সকল নোটিশপ্রাপ্তকেই যে বাড়ি ছেড়ে দিতে হবে, এমন নয়। বাড়ি মালিক চাইলেই কোন ভাড়াটেকে উচ্ছেদ করতে পারেন না। উচ্ছেদ করার যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকতে হবে। যুক্তিসঙ্গত কারণে মধ্যে রয়েছে: ভাড়া পরিশোধে অক্ষমতা, ভাড়ার চেক বাউন্স হওয়া, সাধারণভাবে ভাড়া পরিশোধে বিলম্ব করা ও ভাড়ার চুক্তি লংঘন করা। এর মধ্যে কোনটাই যদি প্রযোজ্য না হয়, সেক্ষেত্রেও মালিক অবৈধ ভাবে উচ্ছেদ করার জন্য ভাড়াটেকে নোটিশ দিয়ে থাকে। কোন সিদ্ধান্তে পৌছার আগে ভাড়াটেদের উচিত তার অধিকার সম্পর্কে জানা। যেমন, ভাড়াটের ব্যক্তিগত গোপনায়তা বা প্রাইভেসি ও সম্পূর্ণ বাসযোগ্য বাড়ি পাওয়ার অধিকার রয়েছে, যার মধ্যে গরম পানি, বিদ্যুৎ এবং শীতৈর মাসগুলোতে তাপের ব্যবস্থা থাকাও অধিকারের মধ্যে পড়ে। কেউ যদি নিয়মিত ভাড়া পরিশোধ করে এবং চুক্তির শর্ত মেনে চলে তাহলে বাড়ি মালিকের কোন উচ্ছেদ নোটিশ অবৈধ বলে বিবেচিত হবে।
উচ্ছেদ প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ নোটিশ লাভ করা, যেখানে নোটিশ পাঠানোর কারণ উল্লেখ করতে হবে। সাধারণত তিন ধরনের উচ্ছেদ নোটিশ থাকে এবং কোন কোন নোটিশের ক্ষেত্রে ভাড়াটের তাড়াহুড়ো করে বাড়ি ছেড়ে দেয়ার অথবা আদৌ বাড়ি ছাড়ার কোন প্রয়োজন পড়ে না। কেউ যদি যথাসময়ে বাড়ি ভাড়া পরিশোধ না করতে পারে, তাহলে তাকে ৩ থেকে ৫ দিন সময় দেয়া হয় ভাড়া পরিশোধ করতে। এর অন্যথা ঘটলে ভাড়াটে নোটিশ অনুযায়ী বাড়ি ছাড়তে বাধ্য। ভাড়াটে যদি চুক্তির কোন অংশ লংঘন করেন, যেমন বাড়িতে কোন পোষা প্রাণী রাখা, যা শর্তে নেই, তাহলে মালিক বাড়ি ছাড়ার জন্য নোটিশ দিতে পারেন। চরম ক্ষেত্রে বাড়ি মালিক ভাড়াটে চুক্তির শর্তের বাইরেও বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার নোটিশ দিতে পারেন, যেমন, বাড়িতে অপরাধমূলক কর্মকান্ড করা অথবা অনেক মাসের বাড়ি ভাড়া পরিশোধ না করা।
করোনা পরিস্থিতিতে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা ঠেকাতে প্রথম পদক্ষেপ হলো সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এর ইস্যু করা ‘এভিকশন প্রটেকশন ডিক্লারেশন’ পূরণ করে তা বাড়ি মালিককে দেয়া। এক্ষেত্রে ভাড়াটে উচ্ছেদ থেকে রেহাই পাবেন যদি করোনার কারণে তারা কর্মচ্যুত হয়, বা আয় কমে যায়। ভাড়াটে যে কাউন্টিতে বসবাস করেন সেখানে কোভিড ১৯ এর সংক্রমণ অত্যধিক হয়ে থাকে। ভাড়াটের বসবাসের জন্য যদি ভিন্ন কোন স্থান না থাকে এবং তার গৃহহীন হয়ে পড়ার আশংকা সৃষ্টি হয় ইত্যাদি। সবকিছু বিবেচনায় বাড়ি মালিক যদি তার অবস্থান সঠিক প্রমাণ করার জন্য ভাড়াটের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন, তখনো তার শঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। আদালত কিছু প্রমাণ দাখিল করতে বলবে এবং সেসব প্রমাণের ভিত্তিতে বিচারককে সন্তুষ্ট করতে পারলে তিনি মামলা স্থগিত বা খারিজ করতে পারেন।
Posted ৭:০৯ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৬ আগস্ট ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh