বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪ | ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

আইএমএফের ঋণেও রিজার্ভ সংকট কাটবে না

ডয়চে ভেলে :   |   বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩

আইএমএফের ঋণেও রিজার্ভ সংকট কাটবে না

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পেতে বাংলাদেশের কোনো অসুবিধা হবে বলে মনে করেন না অর্থনৈতিক বিশ্লেষকেরা। তবে এই ঋণের অর্থ দিয়ে বাংলাদেশের রিজার্ভের পতন ঠেকানো যাবে না বলে মত তাদের। ওয়াশিংটন ডিসিতে মঙ্গলবার সেখানকার স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় আইএমএফের বোর্ড সভা বাংলাদেশের দ্বিতীয় কিস্তির ঋণ ছাড় নিয়ে বৈঠকে বসছে। ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড় করা হলে বাংলাদেশ ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার পাবে এই মাসেই। গত ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ ঋণের প্রথম কিস্তি ৪৯ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার ডলার পায়। মোট ছয় কিস্তিতে ২০২৬ সালের মধ্যে মোট ৪৭০ কোটি ডলার ছাড়ের কথা।

অবশ্য আইএমএফ প্রত্যেক কিস্তি ছাড়ের সময় পরবর্তী কিস্তি ছাড়ের শর্ত ঠিক করে দেয়। গত অক্টোবরে আইএফএফের প্রতিনিধি দল ঢাকা সফর করে ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের আগে পরিস্থিতি মূল্যায়ন করতে। তখন বাংলাদেশ দুইটি শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হলেও আইএমএফের রিভিউ মিশনের কর্মকর্তারা দ্বিতীয় কিস্তির ঋণ ছাড়ের ব্যাপারে একমত হয়ে আইএমএফ বোর্ডে সুপারিশ করে প্রতিবেদন দেন। আইএমএফের শর্ত ছিলো নিট রিজার্ভ ২৪.৬ বিলিয়ন ডলার থাকতে হবে। সেটা বাংলাদেশের ছিল না। আর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য অর্জনেও ব্যর্থ হয় এনবিআর। তবে বাংলাদেশর সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে ওই দুইটি শর্তে কিছুটা ছাড় দেয় আইএমএফ।


সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান বলেন, ‘দ্বিতীয় কিস্তির ঋণের ব্যাপারে আইএমএফ যে রিভিউ করেছে সেখানে কিন্তু দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের ব্যাপারে আমি কোনো আশঙ্কা দেখিনি। যদিও বাংলাদেশ দুইটি ক্ষেত্রে শর্ত পূরণ করতে পারেনি তারপরও আমার মনে হয়েছে আইএমএফ দ্বিতীয় কিস্তির ঋণ ছাড় করবে।’

আর বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘দ্বিতীয় কিস্তি বাংলাদেশ সহজেই পেয়ে যাচ্ছে। কারণ যখন বোর্ড সভায় ওঠে তার আগেই চড়াই-উৎরাই পার হয়ে যায়। ফলে এই কিস্তি বাংলাদেশের পেতে কোনো সমস্যা হবে না। প্রত্যেক কিস্তি ছাড়ের আগেই আইএমএফ মূল্যায়ন করে। দ্বিতীয় কিস্তিতে আইএমএফ বাংলাদেশকে রিজার্ভ এবং রাজস্ব আয়ের টার্গেটে ছাড় দিয়েছে। আর ব্যাংকিং খাতে সুদের হার, ডলারের ফ্লোটিং রেট-এসব বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু তৃতীয় কিস্তির সময় ওই শর্তগুলো আবার আসবে।’


বাংলাদেশ এখন রিজার্ভ এবং ডলার সংকটে ভুগছে। ধারাবাহিকভাবে রিজার্ভ কমছে। সর্বশেষ বাংলাদেশের প্রকৃত বা ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ এখন ১৬ বিলিয়ন ডলারের কম। ২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলার। তাই আইএমএফের দ্বিতীয় কিস্তির ঋণ রিজার্ভ সংকট সামাল দিতে কতটা ভূমিকা রাখবে?

এর জবাবে ড. সেলিম রায়হান বলেন, ‘প্রয়োজনের তুলনায় এই ঋণের পরিমাণ তত বেশি না। তারপরও ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ যদি আমরা ঋণের এই কিস্তিটা পাই তাহলে রিজার্ভ পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে। তার চেয়ে বড় ব্যাপার হলো বাংলাদেশের এই অর্থনেতিক সংকটের সময় আইএমএফের দ্বিতীয় কিস্তির ঋণ পাওয়া ইতিবাচক হিসেবে কাজ করবে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীসহ সামগ্রিকভাবে অর্থনীতিতে আস্থা ফেরাতে সহায়ক হবে।’


তিনি বলছেন, ‘বিশ্বব্যাংক ও এডিবি থেকেও কিছু ঋণ পাওয়া যাবে। আইএমএফের ঋণ ছাড় তাতে সহায়তা করে। আইএমএফের মূল্যায়ন সবাই ফলো করে। আইএমএফ যখন প্রথম ঋণ দিল তারপর কিন্ত বিশ্বব্যাংকও ঋণ দেয়। তবে বাংলাদেশ রিজার্ভসহ পুরো অর্থনীতি নিয়ে যে গভীর সংকটে আছে তা আইএমএফের এই অল্প পরিমাণ ঋণ দিয়ে কাটানো সম্ভব নয়। এজন্য সবার আগে প্রয়োজন অর্থনৈতিক সংস্কার। কিন্তু সংস্কারের বিষয়গুলো এখনো সুস্পষ্ট করা হচ্ছে না। বলা হচ্ছে নির্বাচনের পরে করা হবে। আমার মনে হয় নির্বাচনের আগে রোডম্যাপ চূড়ান্ত করা দরকার।’

আইএমএফ যে শর্ত বাংলাদেশকে দিয়েছে তার মধ্যে প্রধান তিনটি শর্ত হলো নির্দিষ্ট পরিমাণ রিজার্ভ রাখতে হবে, বেঁধে দেওয়া লক্ষ্য অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করতে হবে এবং ঋণ খেলাপি ও ঋণের অব্যবস্থাপনা কমাতে হবে।

ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আইএমএফের বোর্ড বৈঠকের পর জানা যাবে ঋণের তৃতীয় কিস্তি পেতে বাংলাদেশকে কী কী শর্ত পূরণ করতে হবে। তারা তাদের এ সংক্রান্ত ডকুমেন্ট তাদের ওয়েবসাইটেই প্রকাশ করবে। এইএমএফের দ্বিতীয় কিস্তির যে অর্থ তা দিয়ে রিজার্ভ সংকটের তেমন কিছু করা যাবে না। এর সঙ্গে বিশ্বব্যাংক থেকে বাজেট সহায়তা হয়তো ৫০০ মিলিয়ন ডলার পাওয়া যাবে। এডিবি থেকেও কিছু পাওয়া যাবে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক তো মাসে এখন ১০০ কোটি ডলারের বেশি বিক্রি করছে। আইএমফের দ্বিতীয় কিস্তি ওই ডলারের চার ভাগের তিন ভাগ মাত্র। ফলে রিজার্ভে এটা সামান্যই ভূমিকা রাখবে। রিজার্ভের যে পতনের ধারা তা রোধ করতে হলে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে হবে।’

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক ৭ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে চলতি মাসে রিজার্ভ কমবে না। এই মাসে এক বিলিয়ন ডলারের ঋণ ও বাজেট সহায়তা আসবে।

advertisement

Posted ১২:৫৩ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

কাঁঠাল সমাচার
কাঁঠাল সমাচার

(1405 বার পঠিত)

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.