বাংলাদেশ অনলাইন : | বুধবার, ০৫ এপ্রিল ২০২৩
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-জাতিসংঘ-ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ সারাবিশ্ব বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। ফলে আগামী নির্বাচন কেমন হবে তার উপর শুধু বাংলাদেশের গণতন্ত্রই নয়, বরং গোটা দেশের অস্তিত্বের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। এই কথাগুলো বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর উদ্যোগে ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন, সাংবিধানিক কাঠামো ও বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ’ শীষর্ক একটি গোলটেবিল বৈঠকের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। পাগল ছাড়া কেউই বিশ্বাস করে না শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব।
৪ এপ্রিল (মঙ্গলবার) সুজন সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে ও সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের সঞ্চালনায় অনলাইনে অনুষ্ঠিত ওই গোলটেবিল বৈঠকে নির্ধারিত আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুজন সহ-সভাপতি বিচারপতি এম এ মতিন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) এম সাখাওয়াত হোসেন, বিশিষ্ট সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক, যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর আলী রীয়াজ এবং অস্ট্রেলিয়ার চার্লস ডারউইন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র আইন কর্মকর্তা ড. রিদওয়ানুল হক।
প্রফেসর আলী রীয়াজ বলেন, শেখ হাসিনা সরকার সংবিধান সংশোধন করবে না বলে নিজের জায়গায় অনড় থাকলেও সংবিধান সংশোধন না করেও ‘তত্বাবধায়ক সরকার’ ব্যবস্থা কার্যকর করা সম্ভব। ক্ষমতাসীন দল দেশে কার্যত বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চায় কিনা তা আগামী নির্বাচন দিয়েই বোঝা যাবে। ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, যে নামেই ডাকা হোক না কেন, নির্বাচনকালে এমন একটি সরকার দরকার যারা প্রশাসন, আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী, নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করবে। কারণ মানুষ গত দুটি নির্বাচনে ভোট দিতে যায়নি এবং ভোট দিতে পারেনি।
এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, অলৌকিক কিছু না ঘটলে কিংবা ‘অন্যকিছু’ না হলে সরকার সংবিধান সংশোধন করবে না। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি›র দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, যে যাই বলুন, বাংলাদেশে বড় দুটি রাজনৈতিক দলের কোনো একটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে না। এ ক্ষেত্রে মূল দায়িত্ব সরকারের। আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য নাগরিক সমাজকে আরো জোর গলায় কথা বলার আহবান জানান।
সবশেষে সুজন সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, নির্বাচন নিয়ে যতো কথাই বলি ঘুরেফিরে ওই একটি কথাই আসে- নির্বাচনকালে নির্দলীয় সরকার চাই, যেটা আগে ছিল। নির্দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফল নিয়ে অতীতে কোনো বিতর্ক হয়নি। এ বিষয়ে সমঝোতায় না আসতে পারলে দেশের জন্য সামনে বড় বিপর্যয় অপেক্ষা করছে বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, সুজন মনে করছে আগামী জাতীয় নির্বাচন সুুুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক তথা গ্রহণযোগ্য হবে কি না, তা নিয়ে জনমনে ব্যাপক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা রয়েছে। তাই, এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্যই তাদের এমন আয়োজন বলে সংগঠনটি নিশ্চিত করেছে।
Posted ৩:২০ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৫ এপ্রিল ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh