মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫ | ৩১ আষাঢ় ১৪৩২

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

দেশে গণপরিবহন বন্ধ, ভোগান্তিতে মানুষ

বাংলাদেশ অনলাইন :   |   শনিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২১

দেশে গণপরিবহন বন্ধ, ভোগান্তিতে মানুষ

ছবি : সংগৃহীত

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনের মতো পরিবহন বন্ধ রেখেছে মালিকরা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন কর্মমুখী মানুষ। গত ৩ নভেম্বর মধ্যরাত থেকে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানো হয়। এরপরই ৫ নভেম্বর (শুক্রবার) সকাল ৬টা থেকে পরিবহন মালিকরা তেলের দাম কমানো বা ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে ধর্মঘট শুরু করেন।

পরিবহন ধর্মঘটে ৫ নভেম্বর (শুক্রবার) কার্যত পুরো দেশ থমকে যায়। হাজারো ভোগান্তি মাথায় চেপে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করেন যাত্রীরা। সড়কে রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য ছোট যানের ভাড়া বেড়ে যায় কয়েকগুণ। যানবাহন না পেয়ে অনেকে হেঁটেই গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেন।

শনিবার সকালে ঢাকা-আরিচা, চন্দ্রা-নবীনগর ও টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়ক ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন পয়েন্টে দাঁড়িয়ে আছেন অফিসগামীরা। পরিবহনের দেখা না পেয়ে অনেকেই হেঁটে রওনা দিয়েছেন কর্মস্থলের উদ্দেশে। কেউবা ছুটছেন ভ্যান, রিকশা কিংবা ইজিবাইকে। যেভাবেই হোক সকাল ৮টার আগেই পৌঁছাতে হবে কর্মস্থলে।

কর্মস্থলে হেঁটেই রওনা দিয়েছেন পোশাকশ্রমিক বিউটি বেগম। তিনি বলেন, আমার স্বামী চাকরি করেন জিরানী বাজার। সেখানেই আমি স্বামীর সঙ্গে থাকি। প্রতিদিন সকালে উঠে বাসার কাজ শেষে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে অফিসের উদ্দেশে রওনা হই। আজও তাই করেছি। কিন্তু রাস্তায় বের হয়ে দেখি গাড়ি নেই। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলাম কিন্তু গাড়ি আসল না। পরে জানতে পারলাম ধর্মঘট চলছে। আমি ধর্মঘটের খবর শুনিনি। শুনলে হাতে একটু সময় নিয়ে বের হতাম।

এদিকে পরিবহন ধর্মঘটের কারণে ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছেন রিকশা-ভ্যানচালকরা। ১০ টাকার ভাড়া তারা হাঁকছেন ২০ টাকা। রিকশাচালক হান্নান বলেন, যাত্রীর খুবই চাপ। সড়কে গাড়িও নেই, সবাই ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছে। তাই আমিও বেশি ভাড়া নিচ্ছি। এতে দোষের কিছু নেই। আমরা ভাড়া মিট করেই গন্তব্যে রওনা করি। যাদের ইচ্ছে তারা যাবে, যাদের ভালো লাগবে না তারা হেঁটে যাবে।

বুধবার ডিজেলের নতুন দাম ঘোষণার পরদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার মালিকরা সাফ জানিয়ে দেন, অতিরিক্ত দামে ডিজেল কিনে পরিবহন চালানো সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে তারা পরিবহনের ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব দেন। মালিকদের সঙ্গে একমত হন শ্রমিক নেতারা।

ডিজেলের বাড়ানো দামের সঙ্গে বাসভাড়া সমন্বয়ের বিষয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) বরাবর চিঠি দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে শুরুতে কোনো সাড়া দেয়নি বিআরটিএ। যদিও বৃহস্পতিবার সারাদিন ধরেই পরিবহন বন্ধ রাখা নিয়ে আলোচনা চলছিল মালিকপক্ষের মধ্যে। গণমাধ্যমেও এ সংক্রান্ত বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছিল।

সারাদিনের আলোচনা ও দুপুরের চিঠির পর রাত আটটার দিকে মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের বিআরটিএর পক্ষ থেকে জানানো হয়, রোববার বেলা ১১টায় ভাড়া সমন্বয় সংক্রান্ত সভা হবে। সভাটি হবে বিআরটিএ সদর কার্যালয়ে। শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক সরকারি ছুটি থাকায় সভাটি রোববার ডাকা হয়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে শুক্রবার সারাদিন ভোগান্তিতে ছিলেন সাধারণ যাত্রীরা। অর্থাৎ কোনো সমাধান না এলে শনিবারও তাদের দুর্ভোগের মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে।

বিআরটিএর দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা শুক্র ও শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি কাটানোর পর রোববার সমস্যা সমাধানের জন্য সভায় বসবেন। বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের মত নিয়েই রোববারের সভা ডাকা হয়েছে। সময় পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই।

সংশ্লিষ্ট ও সচেতনরা বলছেন, উদ্ভূত সমস্যার জরুরি সমাধানে দায়িত্বশীলদের উদ্যোগের অভাবে সড়কে পরিবহন ধর্মঘটের পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হচ্ছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, দ্রুত এ সমস্যা সমাধান করা উচিত ছিল।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় উদ্ভূত পরিস্থিতির সমাধান হচ্ছে না। শনিবারও সারাদেশে বাস ও পণ্যবাহী যান চলাচল বন্ধ থাকবে। সাধারণ মানুষকে তার খেসারত দিতে হবে। রোববার সমস্যার সমাধান হলে সারাদেশে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড সামসুল হকের মতে, দেশে যখন পরিবহন ধর্মঘটের মতো অবস্থা চলছে, তখন সমস্যা সমাধানের জন্য জরুরি উদ্যোগ প্রয়োজন। অতীতে এ ধরনের সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এবারও এ ধরনের সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। কালবিলম্ব করা হচ্ছে। তাতে সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

হঠাৎ এ ধরনের সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি হলে তা দ্রুত সমাধানের জন্য ব্যবস্থাপনা থাকা জরুরি। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আরও দায়িত্বশীল হওয়ার কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করছেন এ বিশেষজ্ঞ।

Posted ৭:৫৭ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২১

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

কাঁঠাল সমাচার
কাঁঠাল সমাচার

(1767 বার পঠিত)

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

86-47 164th Street, Suite#BH
Jamaica, New York 11432

Tel: 917-304-3912, 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.