শ্রম অধিকার নিয়ে নতুন ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, ‘বিশ্বজুড়ে যারা শ্রমিক অধিকার হরণ করবে, শ্রমিকদের ভয়ভীতি দেখাবে এবং আক্রমণ করবে তাদের উপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞাসহ নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেবে যুক্তরাষ্ট্র।’ ১৭ নভেম্বর (শুক্রবার) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করার প্রত্যয় নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো একটি মেমোরেন্ডামে স্বাক্ষর করেছেন। বিষয়টিকে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছে হোয়াইট হাউজ। এ মেমোরেন্ডাম স্বাক্ষরের পরে সানফ্রান্সিসকোর একটি হোটেলে শ্রমিক নেতাদের সামনে এর বিস্তারিত তুলে ধরেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান ফান্সিসকোতে চলমান এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশনের (অ্যাপেক) নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি সংবাদ সম্মেলন করেন ব্লিঙ্কেন। অ্যাপেক নেতাদের বৈঠক ১৭ নভেম্বরও চলছে।

ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘শ্রমিকদের অধিকার এবং তাদের শ্রম মান উন্নয়নের জন্য কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতির কেন্দ্রীয় অংশ এবং এটি পররাষ্ট্র দপ্তরেরও কার্যক্রমের মূল বিষয়।’

শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিতে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনার বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যারা শ্রমিকদের হুমকি-ধামকি দেবে, ভয় দেখাবে, শ্রম ইউনিয়নের নেতা, শ্রম অধিকারের পক্ষে কাজ করা ব্যক্তি এবং শ্রম সংগঠনের উপর আক্রমণ করবে – তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা এবং ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে।’

এ সময় ব্লিঙ্কেন বাংলাদেশের গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকারকর্মী কল্পনা আক্তারের উদাহরণ তুলে ধরেন। ব্লিঙ্কেন বলেছেন, ‘আমরা কল্পনা আক্তারের মতো মানুষদের পাশে থাকতে চাই, যিনি বলেন যে তিনি এখনো জীবিত আছেন কারণ আমেরিকার দূতাবাস তার পক্ষে কাজ করেছে।’

ব্লিঙ্কেন বলেন, শ্রম অধিকার আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা এবং বৈদেশিক নীতির চাবিকাঠি। এটা শুধুই দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়। এটা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা ও বৈদেশিক নীতির বিষয়।

আন্তর্জাতিক মানের শ্রম অধিকার নিশ্চিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশের সরকার, শ্রমিক ও শ্রমিক সংগঠন, বেসরকারি খাত এবং নাগরিক সমাজের সঙ্গে কাজ করবে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেছেন, ‘পৃথিবীর সব দেশে নিয়োজিত আমাদের রাষ্ট্রদূত এবং দূতাবাসে কর্মরত ব্যক্তিরা শ্রমিক ও শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে কাজ করবে যাতে করে আমাদের কাজের মধ্যে তাদের আওয়াজ প্রতিফলিত হয়।’

যারা শ্রমিক নেতা, শ্রমিক সংগঠন ও শ্রম অধিকার নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিদের যারা ভয় দেখায় এবং তাদের উপর আক্রমণ করে, তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে বলে এদিন জানান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।