বাংলাদেশ অনলাইন : | শুক্রবার, ১৬ জুন ২০২৩
মানব পাচার রোধে বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টা উল্লেখ করার মতো হলেও তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। মানব পাচার পরিস্থিতি নিয়ে বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে এ মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। আমেরিকার নতুন ভিসা নীতি ও ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠি ইস্যুতে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই ‘ট্রাফিকিং ইন পারসনস রিপোর্ট ২০২৩’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি ১৫ জুন (বৃহস্পতিবার) প্রকাশ করা হলো।
মানব পাচার নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্ষিক প্রতিবেদনের র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় স্তরের ‘নজরদারিতে থাকা দেশের’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই ধাপে বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে ভারত, পাকিস্তান, ভুটান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা রয়েছে।
প্রতিবেদনে দেশগুলোর মানব পাচার পরিস্থিতি তিনটি ধাপে তুলে ধরা হয়েছে। আর ধাপগুলো তৈরি করা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের মানব পাচারের শিকার ব্যক্তিদের সুরক্ষা আইনের (টিভিপিএ) বিষয়গুলোকে ভিত্তি হিসেবে ধরে।
মানব পাচার বন্ধে যেসব দেশ টিভিপিএর ন্যূনতম মানদণ্ড অর্জন করতে পেরেছে সেগুলোকে প্রথম ধাপে রাখা হয়েছে। যেসব দেশ ন্যূনতম মানদণ্ড অর্জন করতে পারেনি, কিন্তু উল্লেখযোগ্যভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, সেগুলোকে দ্বিতীয় ধাপে।
আর যেসব দেশ টিভিপি-এর ন্যূনতম মানদণ্ডও অর্জন করতে পারেনি, আবার পাচার বন্ধে উল্লেখযোগ্য চেষ্টাও চালাচ্ছে না, সেগুলোকে শেষ ধাপে রাখা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানব পাচার রোধে ন্যূনতম যা করা প্রয়োজন, তা পুরোপুরি করতে পারেনি বাংলাদেশ। তবে সরকারকে উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ নিতে দেখা গেছে। যেমন, পাচারকারীদের বিচার ও শাস্তির আওতায় আনা, পাচারের শিকার রোহিঙ্গাদের নিয়ে মামলার তদন্তে গুরুত্ব আরোপ এবং বিদেশে জনবল পাঠানোয় যুক্ত সরকারি সংস্থাগুলোর কিছু কিছু ক্ষেত্রে ফি কমানোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
মানব পাচার রোধে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ন্যূনতম মানদণ্ড বজায় রাখতে পারেনি বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়েছে, দেশের ভেতরে যৌনকর্মী হিসেবে মানব পাচার বন্ধ এবং পাচারের সঙ্গে জড়িত সবাইকে জবাবদিহির আওতায় না আনা। ভুক্তভোগীদের সুরক্ষা দেওয়ার প্রচেষ্টাও আগের মতো অপর্যাপ্ত রয়ে গেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পাচারকারীদের বড় একটি অংশকে কারাদণ্ডের বদলে জরিমানা করা হচ্ছে আদালতে। এটা মানব পাচার রোধে সরকারের প্রচেষ্টাকে বাধার মুখে ফেলছে। পাশাপাশি ভুক্তভোগীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশে মানব পাচার পরিস্থিতিরউন্নতির জন্য বেশ কিছু সুপারিশও করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, পাচারসংক্রান্ত ঘটনাগুলো তদন্ত ও দোষীদের বিচারের আওতায় আনার প্রচেষ্টা বাড়াতে হবে। একই সাথে উল্লেখযোগ্য মেয়াদে কারাদণ্ডের মতো যথাযথ সাজা প্রদান করতে হবে দোষীদের।
এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট ট্রাইবুন্যালে যুক্ত ব্যক্তি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ বাড়ানোর কথাও বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।
Posted ১১:২৭ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১৬ জুন ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh