বাংলাদেশ অনলাইন : | বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট ২০২২
সনাতন ধর্মের মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মতিথি আজ বৃহস্পতিবার। শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথিকে ভক্তরা জন্মাষ্টমী হিসেবে উদযাপন করেন। শাস্ত্রমতে, দ্বাপর যুগের সন্ধিক্ষণে ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথির রোহিণী নক্ষত্রের যখন প্রাধান্য ছিল তখন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বিশুদ্ধ পঞ্জিকার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ সেই তিথি শুরু হচ্ছে। তবে আগামীকাল শুক্রবারও এই তিথি থাকবে। তাই অনেকেই শুক্রবারও জন্মাষ্টমী উদযাপন করবেন। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, ৫ হাজার বছরেরও বেশি আগে পাশবিক শক্তি যখন ন্যায়, নীতি, সত্য ও সুন্দরকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়, তখন সেই অশুভ শক্তিকে দমন করে কল্যাণ ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য অবতার হিসেবে শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটে। দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের জন্য যুগে যুগে ভগবান মানুষের মধ্যে অবতীর্ণ হন এবং সত্য ও সুন্দরকে প্রতিষ্ঠা করেন।
আজ সরকারি ছুটির দিন। জন্মাষ্টমী উপলক্ষে তিনদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ। গতকাল বুধবার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এই কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়, আগামীকাল শুক্রবার সকালে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় গীতাযজ্ঞ, বিকালে জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রা ও রাতে কৃষ্ণপূজা এবং শনিবার বিকালে রয়েছে আলোচনা সভা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবার সীমিত পর্যায়ে বঙ্গভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন রাষ্ট্রপতি। আর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে উপস্থিত ভক্তদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিক, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি মনীন্দ্র কুমার নাথ ও সাধারণ সম্পাদক রমেন মণ্ডল প্রমুখ।
রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনে আজ সকাল থেকেই শুরু হবে জন্মাষ্টমী উদযাপনের কর্মসূচি। সকাল সাড়ে আটটায় শ্রীমদ্ভগবদগীতা পাঠের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচি শুরু হবে। এছাড়া অন্যান্য আয়োজনের মধ্যে রয়েছে- ভজন, আলোচনা, শ্রীশ্যামনাম সংকীর্তন, প্রসাদ বিতরণ প্রভৃতি। আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘেও (ইসকন) জন্মাষ্টমী উপলক্ষে চারদিনব্যাপী কর্মসূচি পালিত হবে।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জন্মাষ্টমী উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন। এছাড়া বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিবৃতিতে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষকে জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, সমাজ থেকে অন্যায়-অত্যাচার, নিপীড়ন ও হানাহানি দূর করে মানুষে মানুষে অকৃত্রিম ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে তোলাই ছিল শ্রীকৃষ্ণের মূল দর্শন। আমি শ্রীকৃষ্ণের দর্শনকে ধারণ করে পরোপকারের মহান ব্রত নিয়ে সমাজের অসহায় ও দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য হিন্দু ধর্মাবলম্বী সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
আর প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ব স্থাপন এবং সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠাই ছিল শ্রীকৃষ্ণের লক্ষ্য। তিনি আজীবন শান্তি, মানবপ্রেম ও ন্যায়ের পতাকা সমুন্নত রেখেছেন। শ্রীকৃষ্ণ তার জীবনাচরণ এবং কর্মের মধ্য দিয়ে মানুষের আরাধনা করেছেন। শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ ও শিক্ষা বাঙালির হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, সোহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরো সুদৃঢ় করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
Posted ৫:১২ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট ২০২২
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh