বাংলাদেশ অনলাইন : | রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪
বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন মনির আহমেদ। মাসে সর্বমোট তার বেতন ৫০ হাজার টাকা। স্ত্রী ও দুই সন্তানের সংসার। দুই বেডের ভাড়া বাসা নিয়ে থাকেন বনশ্রী এলাকায়। বাসা ভাড়া ১৬ হাজার টাকা; সংসারের খাবার খরচে ব্যয় হয় ১৮ হাজার টাকা; পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ, ডিশ বিল, ইন্টারনেট বিল, গৃহকর্মী বেতনসহ খরচ হয় প্রায় ৬ হাজার টাকা; অফিস যাতায়াতে ব্যয় হয় প্রায় ৫ হাজার টাকা; সন্তানের স্কুল বেতন ৬ হাজার টাকা এবং আসা-যাওয়ায় খরচ হয় আরও ৩ হাজার টাকা; গৃহশিক্ষক আর কোচিংয়ে ব্যয় আরও ৮ হাজার টাকা। এসব মিলিয়ে ব্যয় দাঁড়ায় ৬২ হাজার টাকা। সন্তানের স্কুলড্রেস, বই-খাতা ক্রয়, বিনোদন ব্যয়, বিভিন্ন সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে যোগদান, চিকিৎসা-ব্যয় ইত্যাদি ইত্যাদি বিষয় তো রয়েই গেছে। ফলে প্রতি মাসেই তাকে সংসার চালাতে ধারদেনা করতে হচ্ছে। মাসশেষে যখন বেতন পান, তখন সেই ধারদেনা শোধেই চলে যায় বড় একটা অঙ্ক। এভাবে যত দিন যাচ্ছে, ততই বাড়ছে তার ধারদেনা। সংসার চালাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন মনির। ফলে যারপরনাই টেনশনে কাটছে তার দিন। যত দিন যাচ্ছে বাড়ছে ধারদেনা, বাড়ছে তার টেনশনও। অনেক ভেবেও কোনো কূলকিনারা পাচ্ছেন না তিনি।
শুধু মনির আহমেদই নন, মূল্যস্ফীতির চাপে চিড়েচ্যাপ্টা দশা সমাজের অধিকাংশ মানুষের। নিম্নবিত্তদের অবস্থা আরও সঙ্গীন। বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের ধাক্কার পর আসে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এই দুটির বড় ধাক্কা লাগে পুরো বিশ্বের অর্থনীতিতেই। বিশ্বের অনেক দেশই ইতোমধ্যে এটি কাটিয়ে উঠলেও বাংলাদেশ এখনও পড়ে আছে এর আবর্তে। বিগত সরকার নানা ধরনের আশ্বাস দিলেও বাস্তবে এর ফল মেলেনি। মূল্যস্ফীতির চাপে পিষ্ট দেশের সাধারণ মানুষের যাপিত জীবন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের জুলাই মাসে দেশে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আগস্টে এ হার কিছুটা কমে দাঁড়ায় ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ। অন্তর্বর্তী সরকার মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমালেও এখনো তা ৯ শতাংশের উপরেই রয়ে গেছে। আগস্টের তুলনায় কিছুটা কমে সেপ্টেম্বরে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৯২ শতাংশে। যদিও বিবিএসের এ তথ্য নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন রয়েছে অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকদের। তারা বলছেন, বাজারে জিনিসপত্রের প্রকৃত মূল্যবৃদ্ধির হারের সঙ্গে বিবিএসের দেওয়া তথ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে মূল্যস্ফীতির হার দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থায় রয়েছে।
Posted ৯:৩৯ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh