মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

‘এখনকার ছাত্র রাজনীতি টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি নির্ভর’

  |   মঙ্গলবার, ০৪ আগস্ট ২০২০

‘এখনকার ছাত্র রাজনীতি টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি নির্ভর’

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরীর জন্ম ১৯৫১ সালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তরের পর ১৯৭৪ সালে যোগ দেন উন্নয়ন পেশায়। অনেক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করেছেন। এখন ঢাকার মোহাম্মদপুরে অবস্থিত গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক। সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকের সঙ্গে কথা বলেছেন সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে।

প্রশ্ন : করোনায় গৃহবন্দির এই সময়ে কোন বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছেন?


রাশেদা কে চৌধুরী : ২৫ মার্চের পর থেকে গণসাক্ষরতা অভিযানের দফতর বন্ধ না করে ঘরে থেকে, নিরাপদে অনলাইন, ফোনের মাধ্যমে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিই। অনলাইনে সহকর্মীদের কেউ না কেউ ছুটির দিনেও কাজ করছেন।
করোনা পরবর্তী শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সরকার কি করবে তা নিয়ে আমাদের ভাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে এপ্রিল মাসে জরিপ করা হয়েছে। আগে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শতকরা ১৭ থেকে ১৮ শতাংশ শিক্ষার্থীর ঝরে পড়ার হার ছিল। রুটি-রুজির সংস্থানের কারণে এখন শিক্ষার্থীর বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়ার হার বাড়বে।

স্বাস্থ্য সুরক্ষা ভিত্তির আওতায় বিনিয়োগ করা দরকার। এছাড়া শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধির কথা মাথায় রেখে শিক্ষা খাতে বাজেট বৃদ্ধি করা দরকার। এই লক্ষ্যে শিক্ষা খাতে শতকরা ১৫ শতাংশ বরাদ্দ দেয়ার সুপারিশ করেছি।
কারণ করোনার কারণে শিক্ষাক্ষেত্রে একটি প্রজন্ম পিছিয়ে পড়লে দেশ ও জাতির সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে না।


প্রশ্ন : তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা, মহিলা ও শিশু বিষয়ক এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন? এই তিনটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনকালে কোনো ঘটনা আজও কি আপনাকে আলোড়িত করে?

রাশেদা কে চৌধুরী : ২০০৮ সালের ১২ জানুয়ারি থেকে ২০০৯ এর ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত এই তিন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। প্রথম দিকে দায়িত্ব পালনকালে আমার ভেতর একটু দ্বিধা, উদ্বেগ কাজ করত। এর পেছনে কারণও ছিল, কখনো দলীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না।


এছাড়া আমলাদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতাও ছিল না। তবে অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করলাম, মানুষের যদি সদিচ্ছা, নৈতিকতা, সততা ও নিষ্ঠা থাকে তাহলে মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের সবাই তাকে সম্মান করেন। তারা আমাকে বুঝতে পেরেছিলেন। আমলাতন্ত্রের সঙ্গে কাজ করতে আমার কোনো সমস্যাই হয়নি।

আমি তিন মন্ত্রণালয়েই ভালো সহযোগী দল পেয়েছিলাম। যেমন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আদিবাসীর শিক্ষার বিষয় নিয়ে সঙ্গে আলোচনা করেছি। নিয়ম হল- একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৫০ শিক্ষার্থী না হলে বিদ্যালয় চালু রাখা যায় না। চরাঞ্চল, হাওর, পাহাড়ি এলাকায় ১৫০ শিক্ষার্থী পাওয়া দুষ্কর। এজন্য একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় ৫০ জন শিক্ষার্থী হলেই স্কুল করতে পারবে।
দুস্থ সংস্কৃতি কর্মী অসুস্থ হলে চিকিৎসা খরচ বহনের আর্থিক সামর্থ্য নেই, তাদের মধ্যে অনেকেই বিনা চিকিৎসায় মারা যান। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবগত করলাম। তাদের বললাম, দুস্থ সংস্কৃতিকর্মীদের জন্য কিছু করা যায় কিনা? তারা বললেন, ‘সংস্কৃতিসেবী কল্যাণভাতা রয়েছে।’

কিন্তু সেটা তেমনভাবে কাজে লাগে না। কি করা যায়, বিষয়টি নিয়ে সবাই ভাবলাম। সেই ভাবনা অনুযায়ী সহকর্মী, সংস্কৃতিকর্মী-সঙ্গীতশিল্পী রুনা লায়লা, ফকির আলমগীর, নাট্য ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার প্রমুখের আলোচনায় বসলাম। তারা পরামর্শ দিলেন সংস্কৃতি তহবিল গঠনের। এই প্রক্রিয়াটি শুরু করার উদ্যোগ নেই।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিকে যুগোপযোগী করে নীতিগত প্রতিক্রিয়াশীল একটি চক্র। মন্ত্রিপরিষদে জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতির খসড়া অনুমোদন করা হয়। এর প্রতিবাদে বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে মোল্লারা আমাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।
অপরদিকে প্রগতিশীল চক্র আমার পক্ষে দাঁড়ায়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একজন উপদেষ্টা হিসেবে জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতির ইতিবাচক দিকটিকে জোরালোভাবে সমর্থন করি। কবি সৈয়দ শামসুল হক, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট আব্দুল গাফফার চৌধুরী প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতির পক্ষে লেখালেখি করেন।

সেসময় একদিন ইতালি প্রবাসী একজন বাঙালি আমার ফোন নম্বর জোগাড় করে রাত এগারটার দিকে ফোন করেন। তিনি আমাকে বলেছিলেন, ‘ আপনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একজন উপদেষ্টা। আপনাকে অনুরোধ করব আপনার চেয়ারে পেছনে টাওয়ালটা যেন না থাকে। ইংরেজ ঔপনিবেশিক চিন্তাভাবনা থেকে চেয়ারের পেছনে টাওয়াল রাখার চল রয়েছে। তার এই পরামর্শ আমার খুব ভালো লেগেছিল।

তিন মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মনোনীত হওয়া নিয়ে রয়েছে একটি মধুর ঘটনা। আমি শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ভারতের কৈলাশ সত্যার্থীর ছেলের বিয়ের আমন্ত্রণে দিল্লিতে গিয়েছি। সেখানে একটি হোটেলে আমাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। হঠাৎ ফোন বেজে উঠল।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ফখরুদ্দীন আহমদ ফোনে আমাকে বললেন, ‘আপনাকে চূড়ান্তভাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা, মহিলা ও শিশু বিষয়ক এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মনোনীত করেছি।’

তখনি উনাকে আমার সিদ্ধান্ত না জানিয়ে বলেছিলাম, প্রথম শর্ত, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানাব। দ্বিতীয় শর্ত, আমরা নির্বাচন দেব কিনা? নির্বাচনের চিন্তা-ভাবনা না থাকলে যোগদান করব না। তিনি আমার কথা শুনে বললেন, ‘নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’

পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বললাম। মেয়ে বলেছিল, ‘মা তুমি শিক্ষা নিয়ে স্বপ্ন দেখ। দেখ না সেই স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন করতে পার কিনা?’ এরকম অনেক অম্ল-মধুর স্মৃতি রয়েছে এই তিন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনকালে।

প্রশ্ন : আপনার প্রিয় লেখকদের কোন বইগুলো আপনাকে নাড়া দেয়?

রাশেদা কে চৌধুরী : বাংলা ও ইংরেজি উভয় সাহিত্যের লেখকদের বই আমার পড়ার সুযোগ হয়েছে। বাঙালি লেখকদের মধ্যে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস, কবিতা, গল্প পড়েছি। তারমধ্যে স্ত্রীর পত্র (গল্পগুচ্ছ) আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের উপন্যাস ‘মৃত্যুক্ষুধা’, শরৎচন্দ্র চট্টোপধ্যায়ের উপন্যাস, গল্প গ্রন্থ, বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের ‘পথের পাঁচালী’. ‘অপুর সংসার’, আশাপূর্ণা দেবীর গল্প, উপন্যাস আমাকে নাড়া দেয়। সমসাময়িক লেখকদের মধ্যে হুমায়ূন আহমেদের ‘জোসনা ও জননীর গল্প’ উপন্যাস, ফরিদুর রেজা সাগরের ‘মানুষের মুখ’, মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘একটুখানি বিজ্ঞান’ ইত্যাদি বইগুলো আমাকে অনুপ্রেরণা জোগায়।

মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ৮০টি চিঠির সংকলন ‘একাত্তরের চিঠি’ বইটি মন খারাপ হলেই পড়তে ইচ্ছে করে। কারণ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে এত বিপর্যয়ের মধ্যেও তারা স্বপ্ন দেখেছিলেন প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতার। এই চিঠিগুলো পড়ে শুধু হতাশ হওয়া নয়, এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা পাওয়া যায়।

উইলিয়াম শেক্সপিয়রের কয়েকটি বই, ম্যাক্সিম গোর্কির ‘মা’ উপন্যাস আমাকে আজও নাড়া দেয়।

প্রশ্ন : আপনার দেখা শিক্ষানির্ভর চলচ্চিত্র কোনটি?

রাশেদা কে চৌধুরী : বাংলাদেশে শিক্ষা নির্ভর চলচ্চিত্র সেভাবে হয়নি। তারমধ্যে চলচ্চিত্র পরিচালক বাদল রহমানের ১৯৮০ সালে ‘‘এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী’ বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে আশ্চর্যজনক সমন্বয় রয়েছে।

২০১৩ সালে চলচ্চিত্র পরিচালক নাসির উদ্দীন ইউসুফের ‘‘গেরিলা’, ‘দেবী’’ ইত্যাদি চলচ্চিত্রগুলো থেকে শিশুরা জীবন নির্ভর শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে।

বিদেশী চলচ্চিত্রের মধ্যে চলচ্চিত্র পরিচালক জন ফাভরেওয়ের ‘‘দ্য জাঙ্গল বুক’, ‘‘দ্য লায়ন কিং’ ইত্যাদি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে শিশুরা জীবন নির্ভর শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে।

প্রশ্ন : ছাত্রজীবনে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সে সময়কার ছাত্র রাজনীতি আর বর্তমান ছাত্র রাজনীতির মধ্যে কোনো পার্থক্য খুঁজে পান কি?

রাশেদা কে চৌধুরী : ছাত্রজীবনে ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। অগ্নিকন্যা মতিয়া চৌধুরী আমাদের নেত্রী ছিলেন। বাম ধারার রাজনীতি থেকে ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে অংশ নিই। দেশের স্বাধীনতার পর বিয়ে হয়ে যায়, বিয়ে-লেখাপড়া ইত্যাদি কারণে আর রাজনীতি করা হয়ে ওঠেনি।

আমাদের সময়ে রাজনীতি ছিল আদর্শভিত্তিক রাজনীতি। মতাদর্শের রাজনীতি। ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে ছাত্র আন্দোলন, অসহযোগ আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা যুক্ত হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে যারা অংশ নিতেন তারা অনেক মেধাসম্পন্ন ছিলেন।

এখনকার মেধাবী শিক্ষার্থীরা ছাত্র রাজনীতি থেকে দূরে থাকেন। কারণ এখনকার ছাত্র রাজনীতি টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি নির্ভর হয়ে গেছে। আর্দশ থেকে সরে আসছে ছাত্ররা।

প্রশ্ন : দুই বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থার তুলনা করলে আমাদের অবস্থান কোথায়?

রাশেদা কে চৌধুরী : ভারতে গণতন্ত্র অনেক বেশি সংহত। শিক্ষা অধিকার আইন ভারতের পার্লামেন্টে পাশ হয়েছে। একেক রাজ্য নিজেদের অবস্থান থেকে এটা বাস্তবায়ন করবে। যেমন দিল্লি, মুম্বাইতে শিক্ষা ব্যবস্থা এগিয়েছে।

কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে পিছিয়ে আছে। ওপার বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থায় অসাম্প্রদায়িক ভিত্তি আছে। তারা মাদরাসা শিক্ষাকে মূলধারার সঙ্গে সম্পৃক্ত করেছে।

আমাদের দেশে মাঝখানে সামরিক শাসন ছিল। সেখান থেকে আমরা গণতন্ত্রে এগিয়েছি। মাদরাসা শিক্ষাকে আমরা এখনও যুগোপযোগী করতে পারিনি। তবে এক্ষেত্রে সরকারের কোনো ত্রুটি নেই।

প্রশ্ন : মেয়েদের লেখাপড়ার অগ্রগতি সম্পর্কে যদি কিছু বলেন?

রাশেদা কে চৌধুরী : বাংলাদেশে লেখাপড়ায় মেয়েদের আশ্চর্যজনক অর্জন লক্ষ্য করা যায়। করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে মেয়েদের ঝরে পড়ার হার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাল্যবিয়ের হারও বাড়তে পারে। এই জায়গাটায় আমরা হোঁচট খেতে পারি। মাধ্যমিকে মেয়েদের ঝরে পড়ার হার ৩০ শতাংশ।

কারিগরী ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় মেয়েদের সংখ্যা বেশি। এখানে নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়েরা যায়। উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়েরা প্রাইভেটে যায়।

‘তথাকথিত’ ইসলামিক রাষ্ট্র হিসেবে ছেলেমেয়েদের শিক্ষার হার আশাব্যঞ্জক রয়েছে। করোনা পরবর্তীতে মেয়েদের লেখাপড়ার অগ্রগতি কতটা হবে এ বিষয়ে অবগত নই।

প্রশ্ন : পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীদের কোন বইগুলো পড়া উচিত বলে আপনি মনে করেন?

রাশেদা কে চৌধুরী : আমাদের গোটা শিক্ষাব্যবস্থার দুর্বলতা হল পরীক্ষাকেন্দ্রিক। এই দুর্বলতাগুলো কাটানো দরকার। মেধার বিকাশের জন্য যত রকম লেখাপড়ার সুযোগ রয়েছে তা কাজে লাগাতে হবে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে জ্ঞানচর্চার সুযোগ রয়েছে। মা-বাবারা ছেলেমেয়েদের এখন বইমেলায় নিয়ে যান। ছেলেমেয়েদের জন্য পাঠ্যপুস্তকের বাইরে বই কিনে দেয়ার প্রতি মনোযোগী হচ্ছেন।

তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বইগুলো পড়তে আগ্রহী করতে হবে। এরফলে মেধা, জ্ঞান ও মননের বিকাশ হবে। মনন মানুষের মেধাকে বিকশিত করে। প্রাথমিক, মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের গ্রন্থাগারমুখী করতে হবে। এখনকার শিক্ষার্থীরা গ্রন্থাগারে আসে না। বাংলাদেশ জাতীয় গ্রন্থাগার, পাবলিক লাইব্রেরিতে পরীক্ষার্থীরা ছাড়া অন্য শিক্ষার্থীরা বই পড়তে যায় না।

অভিভাবকরা সন্তানদের মূল্যবান উপহার সামগ্রী দেন, এর সঙ্গে তাদের বইও উপহার দিতে হবে। আমি আমার সন্তানদের ছুটির দিনে ব্রিটিশ কাউন্সিলে নিয়ে যেতাম বই পড়তে। সব অভিভাবকদেরই এটা করা দরকার।

প্রশ্ন : প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার কোন বিষয়টি শিক্ষার্থীদের মানসিক, সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে বলে আপনার মনে হয়?

রাশেদা কে চৌধুরী : প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের মানসিক ও সামাজিক উন্নয়নে সংস্কৃতি চর্চা, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ইত্যাদি বিষয়গুলো ভূমিকা রাখছে।

আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিষয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের অনেক উৎসাহ দেন। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্রীড়া ও সংস্কৃতি চর্চার ব্যবস্থা থাকলে ভালো হয়। যা শিক্ষার্থীর সামাজিক ও মানসিক উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

প্রশ্ন : গণসাক্ষরতা অভিযানের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত রয়েছেন। জীবন দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষা প্রদানের পাশাপাশি বয়স্ক শিক্ষা নিয়েও কাজ করছেন। সে সম্পর্কে যদি কিছু বলেন?

রাশেদা কে চৌধুরী : প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত আমরা কাজ করছি। উচ্চশিক্ষা পর্যায়েও কাজ করে থাকি। ১৯৯১ সাল থেকে লক্ষ্য করছি, একটা শ্রেণি বিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছে, তারপর হারিয়ে যায়। তাদের জন্য ব্রাজিলিয়ান শিক্ষাবিদ, দার্শনিক ও সাক্ষরতা কর্মী পাওলো

রেমন্স নেভেস ফ্রায়ার বলেছেন, ‘শিক্ষার বিনিয়োগে বড় ছোট কোনো ভেদাভেদ নেই। ধনী-গরিব কোনো ভেদাভেদ নেই। একজন বয়স্ক মানুষের মেধা মননে কিছু না কিছু ভালো হবে।’ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও তার আর্দশে অনুপ্রাণিত হন।

কৃষক ভাই যদি জানতে পারেন ক্ষেতে কীটনাশক ওষুধ কি পরিমাণ ছিটাতে হবে তা হলে তিনি বাম্পার ফসল উৎপাদন করতে পারবেন। এটা জীবনব্যাপী শিক্ষা। শিক্ষার কোনো বয়স নেই। জানার কোনো শেষ নেই।

দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে শিক্ষা সাক্ষরতা নিয়ে যারা কাজ করছেন সেসব সংগঠনগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক মোর্চা হল গণসাক্ষরতা অভিযান। এক হাজারের বেশি বেসরকারি সংস্থা যুক্ত রয়েছে আমাদের সঙ্গে।

advertisement

Posted ৭:৪০ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৪ আগস্ট ২০২০

Weekly Bangladesh |

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.