বাংলাদেশ অনলাইন : | বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নয়াদিল্লির লুটিয়েন্স বাংলো জোনের একটি বাড়িতে রয়েছেন। ভারত সরকার দুই মাস আগেই তার জন্য এ ব্যবস্থা করে বলে দ্য প্রিন্ট জানতে পেরেছে। মর্যাদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটি বড় বাংলো তার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। এমন বাংলো সাধারণত মন্ত্রী, শীর্ষ সংসদ সদস্য ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের জন্য নির্ধারিত থাকে। বাংলাদেশের সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে, দ্য প্রিন্ট তার সঠিক ঠিকানা বা রাস্তার নাম প্রকাশ করেনি। সূত্র দ্য প্রিন্টকে জানায়, নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট প্রটোকল মেনে হাসিনা লোদি গার্ডেনে হাঁটাহাঁটি করতে যান।
একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, তার জন্য একটি শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে, যেখানে নিরাপত্তাকর্মীরা সর্বদা তার পাহারায় থাকেন। এর বাইরে নিরাপত্তাকর্মীরা সাদা পোশাকেও থাকেন। বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব হিসেবে তিনি এ স্তরের নিরাপত্তা পাচ্ছেন। দুই মাসেরও বেশি সময় আগে থেকে হাসিনা সেখানে রয়েছেন। তার থাকার জন্য সব ব্যবস্থা সেখানে করা হয়, সূত্র এমনটি জানায়।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যান। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি উড়োজাহাজে করে ভারতের হিন্দোন বিমানঘাঁটিতে পৌঁছান। কয়েকটি সূত্র জানায়, দুদিনের মধ্যেই তিনি বিমানঘাঁটি ছেড়ে যান। তার ভারতে যাওয়ার দিন ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এবং শীর্ষ কয়েকজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা বিমানঘাঁটিতে হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
দ্বিতীয় সূত্র বলছে, হাসিনা বিমানঘাঁটিতে খুব বেশি সময় থাকতে পারতেন না। সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা পর্যাপ্ত ছিল না। তাই তাকে একটি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর লুটিয়েন্সের নিরাপদ ও সুরক্ষিত এলাকায় একটি বাড়িতে তার থাকার আয়োজন করা হয়। লুটিয়েন্সে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেশ কড়াকড়ি। সেখানে সাবেক ও বর্তমান বহু সংসদ সদস্যের বাস। হাসিনা বাড়ি থেকে বের হন কি না, এমনটি জানতে চাইলে সূত্রটি বলে, যখন প্রয়োজন হয়, তখন মূল নিরাপত্তা দলের কাছে তা জানানো হয় এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
ভারত সরকার এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে শেখ হাসিনার নির্দিষ্ট অবস্থান স্পষ্ট করেনি। গত আগস্টে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সংসদে হাসিনার ভারতে প্রবেশের অনুমতি চাওয়ার খবর জানান। দ্য প্রিন্ট ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কল ও মেসেজের মাধ্যমে যোগাযোগ করেছে। জবাব পাওয়া গেলে প্রতিবেদনটি হালনাগাদ করা হবে। হাসিনা দেশ ছাড়ার সময় বিমানে তার সঙ্গে ছিলেন বোন শেখ রেহানা। তিনি একজন ব্রিটিশ নাগরিক, তার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির নেতা। এটি এখনো জানা যায়নি, ওই বাড়িতে হাসিনার সঙ্গে তার বোন রেহানা রয়েছেন কি না।
হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ সায়মা ওয়াজেদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক। তিনিও দিল্লিতে থাকেন। এই পদে থাকা প্রথম কোনো বাংলাদেশি তিনি। গত সপ্তাহে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ৪৪জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। তাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ আনা হয়েছে। ট্রাইব্যুনালটি ২০১০ সালে শেখ হাসিনা-ই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ১৮ নভেম্বরের মধ্যে তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Posted ১১:৩২ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh