বাংলাদেশ অনলাইন : | বৃহস্পতিবার, ২১ অক্টোবর ২০২১
কুমিল্লায় কুরআন অবমাননার ঘটনায় আলোচিত যুবক ইকবাল হোসেনকে কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ। কক্সবাজার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম (ক্রাইম অ্যান্ড অ্যাডমিন) ১৯ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) রাত সাড়ে ১০টায় জানান, ‘ইকবাল নামে ওই যুবককে একটু আগেই আমরা সৈকত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছি।’ তাকে কুমিল্লা জেলা পুলিশে হস্তান্তর করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। কুমিল্লার পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই ইকবাল (৩৫) কুমিল্লা শহরের সুজানগরের খানকা মাজার এলাকার নূর মোহাম্মদ আলমের ছেলে। তিনি পেশায় রঙমিস্ত্রি।
কুমিল্লা নগরীর পূজামণ্ডপে এই ইকবাল হোসেন নামের যুবকই মসজিদ থেকে পবিত্র কোরআন শরীফ সংগ্রহ করে। এ বিষয়টি সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা নিশ্চিত হয়। গত ২০ অক্টোবর গণমাধ্যমে মণ্ডপে কোরআন রাখার বিষয়ে ইকবাল হোসেনের নাম আসায় সংশ্লিষ্ট মহলে তোলপাড় সৃষ্টি করে। তবে কোরআনটি কোথায় থেকে আনা হয়েছিল এটা নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়। বৃহস্পতিবার একটি মাধ্যমে সমকালের হাতে আসা একটি সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, নানুয়াদিঘীর পাড়ের অদূরে দারোগাবাড়ি মাজারের মসজিদ থেকেই কোরআন শরীফটি সংগ্রহ করে মণ্ডপে রাখেন ইকবাল।
১৯ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) একটি মাধ্যমে সমকালের হাতে আসা ১৭ মিনিটের একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় ঘটনার দিন রাতে কয়েক দফায় ইকবাল হোসেন মাজার সংলগ্ন মসজিদে প্রবেশ করেন। রাত ১০টা ৫৮ মিনিটে তিনি মসজিদে যান। পরে বের হয়ে আসেন। এ সময় মসজিদে দুইজন মুসল্লি ছিলেন। পরে আবার রাত ২টা ১২ মিনিটে মসজিদের একটি বক্স থেকে কোরআন নামিয়ে ফ্লোরে রেখে বের হয়ে যান। সর্বশেষ রাত ২টা ১৭ মিনিটে আবারও মসজিদে গিয়ে কোরআন হাতে বের হয়ে যান।
এদিকে মণ্ডপে কোরআন রাখার বিষয়ে ইকবালের নাম গণমাধ্যমে প্রকাশের পর ১৯ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) দিনভর এলাকার লোকজন ও গণমাধ্যম কর্মীরা তার বাড়িতে ভিড় করে। সে নগরীর সজানগর এলাকার বাসিন্দা নুর আহমেদ আলমের বড় ছেলে।
পুলিশ ও একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার কয়েকটি টিম ইকবালকে ধরতে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কয়েকটি মাজারসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে।
এদিকে ঘটনাস্থলের আশেপাশের অন্তত ১২টি সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে মণ্ডপে কোরআন রাখা যুবক ইকবাল বলে পুলিশ নিশ্চিত হলেও এর নেপথ্যে কে আছে কিংবা কারা রয়েছে এসব বিষয়েও তদন্ত চলছে বলে পুলিশের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
পরিবারের তিন ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে ইকবাল হোসেন সবার বড়। এলাকায় ভবঘুরে হিসেবে পরিচিত ইকবাল প্রায়ই নেশা করতো। নেশার টাকার জন্য পরিবারের শোকজনের ওপর ক্ষিপ্ত হতো সে। সে কখনো বাস চালকের সহকারী, কখনো রং মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করলেও নেশার জগতে পা রাখায় কোথাও তাকে লোকজন কাজে রাখতে চাইতো না। প্রথম বিয়ে করেছেন বরুড়ায়। আয়েশা বেগম নামের সেই স্ত্রীর সঙ্গে পাঁচ বছর আগে তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। সেই সংসারে তার এক ছেলে রয়েছে। দ্বিতীয় বিয়ে করেন চৌদ্দগ্রামের কাদৈ গ্রামের রুমি আক্তারকে। অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রুমিও তাকে ছেড়ে গেছেন। আদালতে মামলাও করেছেন। সেই সংসারে তার একটি মেয়ে আছে।
Posted ৫:৫১ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২১ অক্টোবর ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh