বাংলাদেশ অনলাইন : | শনিবার, ২৫ জুন ২০২২
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘পদ্মা সেতু তৈরিতে যারা বাধা দিয়েছে, তাদের উপযুক্ত জবাব দেওয়া হয়েছে। পদ্মা সেতুর ফলে ২১ জেলার মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হবে। জনতার শক্তি ছিল আমার শক্তি। আপনাদের শক্তি নিয়ে আমরা সেতু নির্মাণ করেছি। এ সেতু নির্মাণের মাধ্যমে আপনারা নির্দ্বিধায় পার হতে পারবেন। কারও সন্তান-পিতা হারাতে হবে না। পদ্মা নদী এখন সুন্দরভাবে পার হতে পারবেন। পদ্মা সেতুর জন্য যাঁরা জায়গা দিয়েছেন, তাদের আমরা টাকা দিয়েছি। জায়গা কিনে বাড়ি করে দিয়েছি।’ পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর ২৫ জুন (শনিবার) জাজিরা প্রান্তে এক সমাবেশে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা আমাদের পাশে ছিলেন, আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। বাবা-মাকে হারিয়ে আপনাদের ভালোবাসায় বেঁচে আছি। আপনাদের জন্য প্রয়োজনে জীবন দেব।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে এবং জাজিরার নাওডোবা প্রান্তে উদ্বোধন কার্যক্রম শেষে কাঁঠালবাড়ীর জনসভাস্থলে পৌঁছান। এরপর মঞ্চে বাজানো হয় বাংলাদেশের লোকগানের উজ্জ্বল নক্ষত্র শিল্পী আবদুল আলীমের ‘সর্বনাশা পদ্মা নদীরে’ গানটি। এরপর বাজানো হয় ‘ও নদীরে একটি কথা সুধাই শুধু তোমারে’ গানটি। এরপর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে জনসভাস্থল মুখরিত হয়ে ওঠে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন পদ্মা সেতু অতিক্রম করেন, তখন বিমান বাহিনীর ছয়টি হেলিকপ্টার তাঁকে অভিবাদন জানায়। এরপর ওই হেলিকপ্টারগুলো কাঁঠালবাড়ী ঘাটে জনসভা মঞ্চের ওপর দিয়ে চক্কর দেয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ মুক্তি পাবে, সে প্রত্যাশায় বঙ্গবন্ধু মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য দেশ স্বাধীন করেন। কিন্তু, মাত্র তিন বছর সময় পান তিনি। কিছু খুনি ১৯৭৫ সালে আমার পরিবারের লোকজনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। আজ আমরা মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি, খাদ্যে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। চিকিৎসা, শিক্ষার ব্যবস্থা করেছি। বিনামূল্যে বই দিচ্ছি। আমরা নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করেছি, যে সেতুর সঙ্গে আমাদের উন্নয়ন জড়িত। সেটা নিয়ে কেন দুর্নীতি হবে। তারা টাকা দেয়নি। কিন্তু, আমার-আপনাদের সহযোগিতায় এ সেতু করতে সক্ষম হয়েছি।’
জনগণের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যার যার জায়গায় বৃক্ষ রোপন করবেন। এক ইঞ্চি জায়গাও যেন খালি না থাকে। আপনারা জানেন, রাশিয়া-ইউক্রেনের কারণে খাদ্যের অভাব তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশে যেন খাদ্যের অভাব না হয়। যার যতটুকু আছে, যে যেখানে আছেন, নিজে উৎপাদন করবেন। নিজে খাবেন, অন্যকে দেবেন, বাজারের পাঠাবেন। কোনো জায়গা যেন খালি না থাকে, সেভাবে কাজ করবেন। এ দেশ আপনাদের, এ দেশ আমাদের।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। এ দেশকে আমরা গড়ে তুলব। সব ক্ষেত্রে ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি। আরও উন্নত জীবন যেন আমাদের ছেলে-মেয়েরা পায়, তার ব্যবস্থা আমি করব। আজ আপনাদের কাছে এটা আমার ওয়াদা। বাবা-মা সব হারিয়ে আপনাদের পেয়েছি। আপনাদের মাঝেই আমি ফিরে পেয়েছি আমার বাবার স্নেহ, মায়ের স্নেহ, ভাইয়ের স্নেহ। আপনাদের জন্যই আমি আছি। আপনাদের অধিকার আদায়ে আমি যেকোনো ত্যাগ শিকার করতে সদা প্রস্তুত। এ ওয়াদা আমি আপনাদের দিয়ে গেলাম। প্রয়োজনে আপনাদের জন্য আমার জীবনটাই দেব।’
বক্তব্যের শেষে শেখ হাসিনা বলেন, ‘রিক্ত আমি, সিক্ত আমি, দেওয়ার কিছু নাই। আছে শুধু ভালোবাসা, দিয়ে গেলাম তাই।’
Posted ৮:১৪ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ২৫ জুন ২০২২
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh