শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫ | ২৯ আষাঢ় ১৪৩২

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

বঙ্গবন্ধুর অপমানের জন্য তার দুই সন্তান দায়ী : ভারতীয় গণমাধ্যমে বাঁধন

বাংলাদেশ অনলাইন :   |   মঙ্গলবার, ১৩ আগস্ট ২০২৪

বঙ্গবন্ধুর অপমানের জন্য তার দুই সন্তান দায়ী : ভারতীয় গণমাধ্যমে বাঁধন

ছবি : আজমেরী হক বাঁধনের ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া

কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরু থেকেই বেশ সরব ছিলেন দেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। এমনকি শিক্ষার্থী হত্যার গ্রহণযোগ্য বিচার এবং গণগ্রেফতার বন্ধসহ তাদের বিভিন্ন দাবির সঙ্গে সংহতি জানাতে প্রতিবাদ করতে পথেও নেমেছিলেন তিনি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের গণ-আন্দোলনকে ভিন্ন দৃষ্টিতে উপস্থাপনে তৎপর ভারতের কতিপয় গণমাধ্যম। এ কাজে অভিনেত্রী বাঁধনকে পাশে চেয়েছিল সেখানকার একটি গণমাধ্যম জি২৪ ঘণ্টা। গণ-আন্দোলন নিয়ে করা নানান প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় ওই গণ-মাধ্যমকে সমীচীন জবাব দিয়েছেন বাঁধন।

বাংলাদেশের গণ-আন্দোলন ইস্যুতে সম্প্রতি বাঁধনের একটি সাক্ষাৎকার নেয় জি২৪ ঘণ্টা। সেখানে বাঁধনের কাছে জানতে চাওয়া হয় সরকার পতন পরবর্তী সহিংসতা নিয়ে। জবাবে বাঁধন বলেন, ‘যে সহিংসতা হচ্ছে তা ঘৃণিত অপরাধ। বাংলাদেশে অবশ্যই কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ রয়েছে, যারা যে কোনো পরিস্থিতিকে তারা নিজেদের সদ্ব্যবহার ব্যবহার করে কিভাবে নিজেরা লাভবান হবে। যেসব ঘটনার কথা আপনি বলছেন, এই নৈরাজ্য তো গত ১৫ বছর ধরেই বিচ্ছিন্নভাবে চলছিল। যেভাবে আমাদের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে, সবাইকে ফেলে চলে গেছেন। এ কারণে আমাদের দেশ গত দু‘দিন ধরে আমরা কোনো রকম পুলিশের কাছ থেকে সাপোর্ট পাচ্ছি না। মাননীয় রাষ্ট্রপতির কাছ থেকেও কোনো দিকনির্দেশনা পাচ্ছি না। এখন আমি অভিনন্দন জানাতে চাই ছাত্র-জনতাকে যারা আন্দোলনটা সফল করেছেন। তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই, তাদের এই আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটেছে। আমাদের দেশটা একটি গণতান্ত্রিক দেশ গঠন করার জন্য তৈরি হচ্ছি। আমাদের সংস্কারের কাজ চলছে। কারণ আমাদের এখন কোনো অভিভাবক নেই। সব ধরনের নিরাপত্তা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। সেটা কিন্তু প্রতিনিয়িত হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙা প্রসঙ্গে বাঁধন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আমাদের সবার, তিনি কোনো দলের নয়। বঙ্গবন্ধু কারও একার বাবা নন, তিনি আমাদের জাতির পিতা। তিনি আমাদের দেশকে স্বাধীন করেছেন, ওনাকে আমরা সবাই শ্রদ্ধা করি ভালোবাসি। কিন্তু আজকে ওনাকে যারা অপমান অপমান করেছে, তাদের প্রতি আমি ঘৃণা জানাই। একই সঙ্গে এও বলতে চাই, তার অপমানের জন্য তার দুই সন্তান দায়ী। তাকে এই অবস্থানে এনে দাঁড় করিয়েছেন তার দুই মেয়ে, যে কারণে মানুষ এত ক্রোধ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে।’

রাহুল আনন্দের বাড়িতে আগুন দেওয়া প্রসঙ্গে বাঁধন বলেন, ‘রাহুল দা আমাদের প্রাণের মানুষ। তাকে আমরা ভালোবাসি। যারা এই সাম্প্রদায়িক উসকানিগুলো দিতে চায়। যারা প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হচ্ছে বলে দেখাতে চায়, তারা হয়তো এই ইচ্ছাটা কোনোভাবে পূরণ করেছে। তারাই রাহুল দার বাড়িতে আগুন দিয়েছে। এই ঘটনার জন্য আমরা লজ্জিত, রাহুল দার প্রতি ক্ষমাপ্রার্থী।’

উপস্থাপক সব্যসাচীর প্রশ্ন, এরা কারা? জবাবে বাঁধন বলেছেন, ‘গত ১৫ বছরে নৈরাজ্য সবচেয়ে বেশি করেছে আওয়ামী লীগ। ওনারা যে পরিমাণে জুলুম-নির্যাতন করেছে। যেভাবে মানুষের মুখ চেপে ধরা হয়েছে, যে পরিমাণ নৈরাজ্য হয়েছে এই দেশে, সেটা তো আসলে অকল্পনীয়। তিনি যেভাবে দেশের মানুষকে ফেলে চলে গেলেন, এটা তো আসলে খুব লজ্জাজনক। তার মতো লিডারের কাছে আমরা আশা করিনি। ওনি দেশে থাকতেন, ফেস করতেন, তার বিচার হতো!’

বাঁধন আরও বলেন, আমি যাদের ইঙ্গিত করছি, পৃথিবীতে সব দেশে এরকম মানুষ থাকবে যারা সুবিধাবাদী, যারা আসলে সুযোগ সন্ধানী, যারা আসলে ধর্মীয় যে কোনো কিছুকে উসকানিমূলক জায়গায় নিয়ে তারা সেটার সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করে এবং কিছু মানুষ লুট করে। আপনি যদি দেখে থাকেন কোনো একজন মানুষের দুর্ঘটনা ঘটলে কিছু মানুষ তাকে বাঁচাতে চায়, কিছু মানুষ তার মানিব্যাগ নিতে। এই প্রবৃত্তি কিন্তু কিছু মানুষের মধ্যে আছে। এগুলো যাদের রয়েছে, তারা হয়তো গা ঝাড়া দিয়ে ওঠেছে। তারা মনে করেছে এই সুযোগ, এখন কোনো নিরাপত্তা নেই। দেশের কোনো অভিভাবক নেই।’

দেশটির গণমাধ্যমে আসা ছবি তুলে ধরে সঞ্চালক সেসব নিয়ে জানতে চাইলে বাধন বলেন, ‘কিছু গণমাধ্যম বাদে আমাদের বেশিরভাগ গণমাধ্যমের ওপর আমাদের আস্থা নেই। ধিক্কার জানাচ্ছি।’

সঞ্চালক প্রশ্ন করেন, গণমাধ্যম, সরকার, সংবিধান কোনো কিছুতেই আস্থা নেই, তাহলে আস্থাটা কোথায়? জবাবে বাঁধন বলেন, ‘আস্থা জনগণের ওপর। আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। জনগণের আস্থা যাদের উপর তৈরি হবে এখন সেই সময়, এখন সংস্কারের সময়। আমাদের এই অনাস্থা থেকে আজকের ঘটনা। একটা ছোট কোটা আন্দোলন থেকে এই ঘটনা ঘটেনি। কীভাবে পুলিশের গুলিতে ছাত্র মারা গেছে, বাবার কোলে শিশু মারা গেছে। কিভাবে মানুষকে হয়রানি করা হয়েছে, এসব ঘটনা তো আমাদের গণমাধ্যমে দেখানো হয়নি। যখন ছাত্রদের উপর এভাবে নির্বিচারে গুলি চালানো হয়েছে হত্যা করা হয়েছে, তখন ওদের সাহস দেখে সাধারণ মানুষের ভয় কেটে গেছে।’

গত ৫ আগস্টের ঘটনার বিবরণ দিয়ে বাঁধন বলেন, ‘এদিন লাখ লাখ মানুষ পাঁয়ে হেঁটে ঢাকায় প্রবেশ করে। আমার বাসা মিরপুর। সেখান থেকে গণভবন পর্যন্ত পাঁয়ে হেঁটে গিয়েছি। পুরো রাস্তায় শুধু মানুষ। এই যে মানুষের আক্রোস, ক্ষোভ; আপনার এটাকে খেয়াল করতে হবে। আপনি যদি মনে করেন এই আক্রোস একদিনে হঠাৎ করে পুঞ্জিভূত হয়ে গেছে। একদিনে তারা গণতন্ত্র গণতন্ত্র করছে। তাদের মনে এই চাওয়াটা অনেক আগে থেকেই ছিল। কিন্তু বলতে পারছিল না। এই শিক্ষার্থীদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ, তারা এই জাতির কাছে একটি স্মরণীয় ঘটনা ঘটিয়ে দেখিয়েছে ।’

ওই গণমাধ্যমের কাছে ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে বাঁধন বলেন, ‘যাদের আমরা মান্য করি, এ রকম কিছু মানুষকে নিয়ে আমরা সংস্কার করছি। আমরা ছাত্রদের সঙ্গে থাকতে চাই।’

সরকারের সমালোচনা করে বাঁধন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলে মানুষ আর মানুষ থাকে না। কারণ গুলোতে এতগুলো প্রাণ যাওয়ার পরও তাদের জন্য সরকারের খারাপ লাগেনি, বরং কতগুলো স্থাপনার জন্য তারা কান্নাকাটি করেছে। অথচ আমাদের ট্যাক্সের টাকায় ওসব আবারও করা যেত। এই ঘটনা বলে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে সাধারণ জনগণের সঙ্গে এক ধরনের বিচ্ছিন্নতা তৈরি হয়েছে সরকারের। তিনি একা নন, ওনি যাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন তারাও সে রকম হয়ে গেছেন, মানুষকে মানুষ বলে গণ্যই করেননি। আজকে যেই আক্রোসে তাদের বাড়ি ঘরে হামলা হচ্ছে এটা আসলে ঘৃণিত কাজ। আপনার এই খারাপ গল্পটা বুঝতে হবে। গত ১৫ বছর ধরে এই মানুষগুলো সাধারণ মানুষেকে শোষণ করেছে। আমি কোনো রকম সহিংসতা সমর্থন করি না।’

Posted ২:৪৪ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৩ আগস্ট ২০২৪

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

কাঁঠাল সমাচার
কাঁঠাল সমাচার

(1763 বার পঠিত)

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

86-47 164th Street, Suite#BH
Jamaica, New York 11432

Tel: 917-304-3912, 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.