সোমবার, ৬ মে ২০২৪ | ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ইইউতে পোশাক রপ্তানি কেন কমছে

বাংলাদেশ অনলাইন :   |   শনিবার, ১৩ জানুয়ারি ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ইইউতে পোশাক রপ্তানি কেন কমছে

ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বড় বাজারগুলোতে রপ্তানির পরিমাণ কমেছে। এরমধ্যে বৃহত্তম বাজার যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য ও জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি কমেছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বিজিএমইএ’র তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সবশেষ নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বাজারে পোশাকের রপ্তানি আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে কমে গেছে। বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া পোশাক পণ্যগুলোর মধ্যে ৮০.৬৭ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে যাচ্ছে। এসব দেশকে পোশাক রপ্তানির বড় বাজার হিসেবে বিবেচনা করেন রপ্তানিকারকরা। রপ্তানির বাকি পণ্যগুলো চীন, ভারত, রাশিয়া, জাপান, অস্ট্রেলিয়াসহ অন্যান্য দেশে যাচ্ছে।

ইউরোপ ও পশ্চিমা দেশগুলোর মানুষের ক্রয় প্রবণতা কমে যাওয়ায় এসব দেশে পোশাক রপ্তানি কমে গেছে বলে মনে করেন শিল্প মালিকরা। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন এবং শ্রম অধিকার রক্ষার ইস্যুতে নিষেধাজ্ঞার শঙ্কা আগামী দিনে রপ্তানিতে প্রভাব ফেলবে কিনা, তা নিয়ে রপ্তানিকারকদের উদ্বেগ রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশটির খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশ থেকে পোশাক কেনা কমিয়ে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক ও অন্যান্য স্বল্প প্রয়োজনীয় পণ্যের ক্রেতারা খরচ কমিয়েছেন।


যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি কমছে। বিদায়ী বছরের প্রথম ১১ মাসে এই দেশে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ধস নেমেছে। বাংলাদেশের মোট পোশাক রপ্তানির ১৮ শতাংশের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। তথ্য মতে, বিদায়ী বছরের জানুয়ারি-নভেম্বর পর্যন্ত ১১ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ৬৭৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি এর আগের বছরের তুলনায় এক-চতুর্থাংশ (২৪.৯১ শতাংশ) কম। ২০২২ সালের প্রথম ১১ মাসে দেশটিতে ৯০৪ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছিল বাংলাদেশ।

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল অফিসের (ওটেক্সা) তথ্য অনুসারে, দেশটিতে ক্রেতাদের খরচ কমে যাওয়ায় গত বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি ২৪.৯১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৬.৭৯ বিলিয়ন ডলারে। বস্ত্র ও তৈরি পোশাক একসঙ্গে বিবেচনায় নিলে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি ২৫.৪১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৬.৯৫ বিলিয়ন ডলারে।


ইপিবি ও বিজিএমইএ’র তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে গত পাঁচ মাসে পোশাক রপ্তানি কম হয়েছে ৫.৭৬ শতাংশ। ৩২৮ কোটি ডলারের পোশাক গেছে সে দেশে। গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ৩৪৮ কোটি ডলার। রপ্তানি কমেছে ২০ কোটি ডলার বা প্রায় ২ হাজার ২০০ কোটি টাকার। রপ্তানি কমে যাওয়ার কারণে মোট পোশাক রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৭ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ১৯ শতাংশ।

এদিকে ইপিবি’র তথ্য অনুযায়ী, অর্থবছরের পাঁচ মাসে কানাডায় রপ্তানি কম হয়েছে ২.৭১ শতাংশ। ৬১ কোটি ডলারেরও কিছু কম মূল্যের পোশাক রপ্তানি হয় দেশটিতে। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৬২ কোটি ডলারের বেশি। পোশাকের মোট রপ্তানিতে এ বাজারের অংশ ৩.৪০ থেকে ৩.২২ শতাংশে নেমে এসেছে।


দেশের তৈরি পোশাকের অন্যতম বৃহত্তম বাজার যুক্তরাজ্যেও কমেছে রপ্তানি। চলতি বছরের জানুয়ারি-অক্টোবর মেয়াদে বাংলাদেশ থেকে এই বাজারে পোশাক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি কম হয়েছে ডলার ভ্যালুতে-৮.৯৮ শতাংশ। আর পরিমাণের ভিত্তিতে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি কমেছে ৮.৮৩ শতাংশ। ইউরোস্ট্যাট প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা যায়।

জানা যায়, যুক্তরাজ্যের মোট পোশাক আমদানিতে মূল্যের দিক থেকে বাংলাদেশের শেয়ার ২৩ শতাংশ এবং পরিমাণের দিক থেকে ২৮ শতাংশ। ইউরোস্ট্যাটের তথ্যে জানা যায়, গত তিন বছরের মধ্যে এবারই যুক্তরাজ্যের বাজারে পোশাক রপ্তানি সবচেয়ে বেশি কমেছে বাংলাদেশ থেকে। এর আগে ২০২১ সালে ৭.৭৪ শতাংশ এবং ২০২৩ সালে ৩৫.৬৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও এবার নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮.৯৮ শতাংশ।

ইপিবি’র হিসাব অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসে গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ইইউতে রপ্তানি কম হয়েছে ০.১৫ শতাংশ। জুলাই-অক্টোবর পর্যন্ত চার মাসে সেখানে রপ্তানি ৪ শতাংশের বেশি ছিল।

দেশের তৈরি পোশাক খাতের ইইউ’র মধ্যে সবচেয়ে বড় বাজার জার্মানি। জার্মানিতে চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ১৫.১০ শতাংশ ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ সময় দেশটিতে মোট রপ্তানি হয়েছে ২৩০ কোটি ৭৭ লাখ ডলারের পোশাক। গত অর্থবছরের একই সময়ে আয় হয়েছিল ২৭১ কোটি ৮১ লাখ ডলার। জার্মানিতে রপ্তানি কমেছে ৪১ কোটি ডলার বা সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার বেশি। বছরে ৭০০ কোটি ডলারের মতো পোশাক রপ্তানি হয় দেশটিতে।

রপ্তানিকারকরা বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার আশঙ্কায় গত বছরের মাঝামাঝি বিদেশি খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলো তাদের পরিকল্পনা পরিবর্তন করেছিল। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা কেটে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলো স্থানীয় সরবরাহকারীদের কাছে খোঁজখবর নিচ্ছেন। আশা করা যায়, শিগগিরই তৈরি পোশাকের রপ্তানি আয় আবার বাড়বে।

তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, বড় বড় বাজারে রপ্তানি কমে আসা অবশ্যই উদ্বেগের। বড় বাজারে রপ্তানি কমে আসার কারণে চলতি অর্থবছর শেষে সার্বিকভাবে পোশাক রপ্তানি হয়তো ঋণাত্মক ধারায় নেমে যেতে পারে। তবে কেবল বাংলাদেশেরই রপ্তানি কমেছে, তা নয়; ইউরোপ ও আমেরিকায় প্রতিযোগী সব দেশেরই রপ্তানি কমছে। প্রধান দুই প্রতিযোগী চীন ও ভিয়েতনামের চেয়ে বাংলাদেশের রপ্তানি কমে আসার হার কম। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে চাহিদা কমে আসা এবং পশ্চিমা দেশগুলোর নানা নীতির কারণে রপ্তানি কমছে।

গবেষণা সংস্থা র‍্যাপিডের চেয়ারম্যান ড. আব্দুর রাজ্জাক মনে করেন, জার্মানি অনেকটা মন্দার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দেশটির ব্যবসা-বাণিজ্য কমেছে। আমদানি-রপ্তানি সবই কমেছে। এ কারণে অন্য সব দেশের মতো বাংলাদেশেরও পোশাক রপ্তানি কমেছে। বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনীতি কিছুটা মন্দা পরিস্থিতি থাকায় এসব বাজারে আমাদের রপ্তানি কমে গেছে। আশা করছি কিছুদিনের মধ্যে এসব দেশের অর্থনীতিতে চাঙ্গাভাব ফিরে আসলে রপ্তানিটাও বাড়তে শুরু করবে। ইউরোপের অনেক দেশে ভালো করলেও বড় বাজার জার্মানিতে এবার খারাপ হয়েছে। জার্মানির বাজারে মন্দা পরিস্থিতি বিরাজ করায় এমনটি হয়েছে। তার মতে, যুক্তরাষ্ট্রে যতটা খারাপ হয়েছে, অপ্রচলিত কয়েকটি বাজার একই সময় ভালো করায় সামগ্রিক পরিস্থিতি এখনো ভালো আছে। পশ্চিমা বিশ্বে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের সঙ্গে সঙ্গে রপ্তানিও বাড়তে থাকবে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রপ্তানি কমে যাওয়ার সঙ্গে অন্য কোনো সম্পর্ক নেই বলে মনে করেন নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ’র সাবেক সভাপতি ফজলুল হক। তার মতে, মূলত উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে চাহিদা হ্রাস এবং গুদামে অবিক্রীত পণ্যের বিশাল মজুত থাকার কারণে ক্রয়াদেশ কমে গেছে। সূত্র : মানবজমিন

advertisement

Posted ১০:৩৪ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১৩ জানুয়ারি ২০২৪

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

কাঁঠাল সমাচার
কাঁঠাল সমাচার

(1408 বার পঠিত)

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.