বাংলাদেশ অনলাইন : | বৃহস্পতিবার, ৩০ মে ২০২৪
গত কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের গুরুত্বপূর্ণ নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একইসঙ্গে জেলার গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চলসহ প্লাবিত হয়েছে। গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় গোয়াইনঘাট উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের রাস্তাঘাট, হাওর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বৈরী আবহাওয়া ও বন্যার কারণে গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫৬টি আশ্রয় কেন্দ্র খেলা হয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে মানুষজন এসেছেন।
উপজেলা সদর থেকে জাফলংগামী সড়ক ও সিলেটগামী কয়েকটি সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে পানি উঠেছে; তবে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়নি। এছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডে জরুরি উদ্ধার কার্যক্রম ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত নৌকা প্রস্তুত রাখার কথা বলা হয়েছে বলে তিনি জানান।
উপজেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, সারিঘাট-গোয়াইনঘাট সড়কের দুটি পয়েন্টে গোয়াইনঘাট-রাধানগর ও জাফলং সড়কের শিমুলতলায় বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার রুস্তুমপুর, লেংগুড়া, ডৌবাড়ি, নন্দিরগাঁও, পূর্ব ও পশ্চিম আলীরগাঁও, পশ্চিম জাফলং, মধ্য ও পূর্ব জাফলংয়ে বন্যা দেখা দিয়েছে।
২৯ মে (বুধবার) দুপুরের তথ্য অনুযায়ী, গোয়াইনঘাট ব্রিজ পয়েন্টের পানি ১০ দশমিক ১১ সেন্টিমিটার (বিপৎসীমা: ১০ দশমিক ৮২) এবং সারিঘাট পয়েন্টের পানি ১২ দশমিক ৮৮ (বিপৎসীমা: ১২ দশমিক ৩৫) সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পাহাড় ও মাটি ধসজনিত দুর্ঘটনা এড়াতে উপজেলার পাহাড়ি এলাকার পাদদেশে বসবাসকারীদের দ্রুত উপজেলা প্রশাসনের নির্ধারিত নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম।
এদিকে, সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার সারী, বড় নয়াগং ও রাংপানি নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালিক রুমাইয়া জানান, “পাহাড়ি ঢল টানা বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি এবং নিম্নাঞ্চলের জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয় ও গবাদি পশু সরিয়ে আনতে বলা হয়েছে। উপজেলায় ৪৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খেলা হয়েছে। কিছু কিছু এলাকার বাসিন্দারা আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছেন। উপজেলার নিজপাট, জৈন্তাপুর ও চারিকাটা ইউনিয়নসহ বেশ কিছু এলাকার নিম্নাঞ্চলে পানি রয়েছে।”
একই কথা জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেটের তথ্যমতে, প্রাক বর্ষাকালে সুরমা নদীর কানাইঘাট এলাকার বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। সেখানে ২৯ মে (বুধবার) সকাল ৯টায় ছিল ১২ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার। কুশিয়ারা নদীর আমলশিদ পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা হচ্ছে ১৩ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার। এই নদীর পানি ২৯ মে (বুধবার) সকাল ৯টায় ছিল ১৫ দশমিক ২২ সেন্টিমিটার। কুশিয়ারা নদী শেওলা এলাকার বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার। ২৯ মে (বুধবার) সকাল ৯টায় ছিল ১১ দশমিক ৬৬ সেন্টিমিটার। সারি গোয়াইন নদীর সারিঘাট পেয়েন্টে বিপৎসীমা হল ১০ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে ২৯ মে (বুধবার) সকাল ৯টায় ছিল ১১ দশমিক ২৯ সেন্টিমিটার। সারি-গোয়াইন নদীর গোয়াইনঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমা হল ৮ দশমিক ৬৫ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে বুধবার সকাল ৯টায় ছিল ৯ দশমিক ৭৩ সেন্টিমিটার।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজিব হোসেন জানান, “আগামী তিনদিন সিলেটে অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিলেটে ১৪৬ দশমিক ১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।”
Posted ১০:৫৬ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ৩০ মে ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh