বাংলাদেশ রিপোর্ট : | শনিবার, ০৭ আগস্ট ২০২১
আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে রেস্টুরেন্টে বসে খাওয়া, জিনেশিয়াম ও বিনোদন প্রতিষ্ঠান ব্যবহারকারী ও সেসব প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের করোনা ভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিন নেয়ার প্রমাণ দেখাতে হবে। করোনা ভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণশীল ডেল্টা ভেরিয়েন্টের নতুন সংক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে ভাইরাসের বিস্তার রোধে জাতীয় ভিত্তিক অভিযানের অংশ হিসেবে নিউইয়র্ক সিটিই যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম বড় সিটি যেখানে এ পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। গত মঙ্গলবার সকালে সিটি মেয়র বিল ডি ব্লাজিও এ সংক্রান্ত একটি আদেশ সম্পর্কে সাংবাদিকদের জানানোর সময় বলেন, ভ্যাকসিন নেয়ার পর নিউইয়র্কারদের পক্ষে চলমান সামারের সবকিছু উপভোগ করা সম্ভব হবে।
এছাড়া বিল ব্লাজিও আরো বলেছেন যে, যারা ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন তারা যদি পুনরায় কর্মস্থলেও আগের মত মাস্ক ব্যবহার করেন, বিশেষ করে তাদের আশপাশে যদি ভ্যাকসিন না নেয়া লোকজন থাকে, তাহলে অবশ্যই সকলের মাস্ক পরিধান করা উচিত। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ার সবচেয়ে বড় অস্ত্র হচ্ছে মাস্ক। গত কয়েক দিন যাবত সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশনের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে যে ডেল্টা ভেরিয়েন্টের বিস্তারের কারণে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ হার লক্ষ্যণীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সঙ্গে হাসপাতালগুলোতে করোনা ভাইরাস সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ও মৃতের সংখ্যাও বেড়েছে। যদিও সিডিসি বলছে যে, নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ভ্যাকসিন না নেয়া লোকদের সংখ্যাই অধিক এবং নতুন রোগীদের ৭০ শতাংশই ভ্যাকসিন গ্রহণ করেননি।
করোনা ভাইরাসে ডেল্টা ভেরিয়েন্টের বিস্তার রোধে নিউইয়র্ক সিটির রেস্টুরেন্ট, জিমনেশিয়াম ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে যারা বিভিন্ন সেবা গ্রহণ করতে যাবেন তারা ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন কিনা সে সম্পর্কিত প্রমাণ প্রদর্শন করার পর তারা সেবা লাভের সুযোগ পাবেন বলে সিটি কর্তৃপক্ষা জানিয়েছে। অন্তত এক ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছেন, এমন লোকজনও সুবিধা নিতে পারবেন। ডি ব্লাজিও বলেছেন, ইনডোর সুবিধাসমূহ নিতে ভ্যাকসিনের প্রমাণ থাকার শর্ত এজন্য আরোপ করা হচেছ যাতে সকলের মধ্যে সচেতনতার সৃষ্টি হয় এবং এই ভাইরাসের বিস্তার রোধে ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যাপারে যাতে কেউ দ্বিধা না করে। ভ্যাকসিনের প্রমাণ দেয়ার কর্মসূচি সম্পর্কে শিগগিরই বিস্তারিত জানানো হবে এবং এ নীতি ১৬ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। কিন্তু পরিদর্শন ও প্রয়োগ ১৩ সেপ্টেম্বরের আগে কার্যকর হবে না। ওই সময়ে সিটির পাবলিক স্কুলগুলো খুলবে।
সিটিতে এখনো অনেকে ভ্যাকসিন না নেয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সিটি মেয়র বিল ডি ব্লাজিও যত দ্রুত সম্ভব সর্বোচ্চ সংখ্যক লোককে ভ্যাকসিনের আওতায় আনার প্রয়োজনীতার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে ও বিচরণস্থলে মুখে মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতার উপর জোর দিযেছেন, যেভাবে ক্যালিফোর্নিয়ার বিভিন্ন সিটি ও কাউন্টিতে মাস্ক পরিধান করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। মেয়র গত সপ্তাহে বলেছেন যে, সিটির যেসব কর্মচারি সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় নাগাদ ভ্যাকসিন গ্রহণ করবেন না তাদের প্রতি সপ্তাহে কোভিড ১৯ টেস্টেও মুখোমুখি হতে হবে। এছাড়া ভ্যাকসিন নেয়ায় উৎসাহিত করার জন্য সিটির বাসিন্দাদের ১০০ ডলার করে প্রদান করার প্রস্তাবও দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক সিটির ৬৬ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক অধিবাসী ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগামী এক মাসের মধ্যে সমগ্র যুক্তরাষ্ট্রের ৭০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের কমপক্ষে এক ডোজ কোভিড ১৯ ভ্যাকসিন নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছেন। নিউইয়র্ক সিটিতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিদিন ১,২০০ এর অধিক সংক্রমিত রোগীকে শনাক্ত করা হচ্ছে, গত জুনের সংখ্যার চেয়ে এ সংখ্যা ছয় গুণ অধিক।
Posted ১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০৭ আগস্ট ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh