মোহাম্মদ আজাদ : | বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১
যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন কোর্টগুলোতে নিস্পত্তির অপেক্ষায় ঝুলে আছে প্রায় ১৫ লাখ মামলা। এসব মামলা দ্রুত নিস্পত্তি করে অবৈধ ইমিগ্রান্টদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে ডিপোর্ট করার পথ সুগম করার জন্য ইমিগ্রেশন বিচারকদের উপর রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করেছিলেন ট্রাম্প প্রশাসনের এটর্নি জেনারেলউইলিয়াম বার। শুধু তাই নয়, মামলার সংখ্যা এত বেশি যে মামলাগুলো নিয়ে দেনদরবার করতে হিমসিম খাচ্ছেন ইমিগ্রেশন আইনজীবীরাও। বিচারকদের উপর রাজনৈতিক চাপ থাকায় ইমিগ্রেশন বিচারক এখন জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন তাদের বিচারিক স্বাধীনতা প্রয়োগ করে মামলাগুলো নিস্পত্তি করতে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বিচারকেদের রাজনৈতিক চাপ এতোটাই প্রবল যে তারা নিরপেক্ষ থেকে স্বাধীনভাবে তাদের মতামত ব্যক্ত করতে পারছেন না বা মামলাগুলোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। সাবেক এটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার ইমিগ্রেশন বিচারকদের স্বাধীনতা ক্ষুন্ন করার জন্য বিচারকদের যে সংগঠন ছিল সেখানে হস্তক্ষেপ করে ইউনিয়নের কার্যকারিতা বন্ধ করে দিয়েছেন।
প্রায় ৫০০ ইমিগ্রেশন বিচারকের উপর এত বিপুল সংখ্যক মামলার বোঝা চাপিয়ে দিয়ে ১৫ লাখ মামলা দ্রুত নিস্পত্তি করে ইমিগ্রান্টদের ডিপোর্ট করার পথ সুগম করতে বলা হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট গত মঙ্গলবার প্রকাশ করেছে এনবিসি নিউজ। এতে বলা হয়েছে যে, ফেডারেল ট্রায়াল বিচারকদের নিয়োগ দেয়া হয় সারা জীবনের জন্য। স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে বিচার করার প্রক্রিয়া ও বিচারকদের নিরপেক্ষতা বজায় রেখে বিচার করার বিষয়টি সহজ করে দেয়অ হয়। বিচারক নিয়োগ দিয়ে থাকেন এটর্নি জেনারেল এবং বিচারকরা এটর্নি জেনারেলের কাছে দায়বদ্ধ থাকেন।
এসাইলাম বা রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদন এসাইলাম অফিস থেকে অগ্রাহ্য হওয়ার পর ইমিগ্রেশন বিচারকদের বেঞ্চে যাওয়ার পর সেগুলোর উপর বিচারকদের স্বাধীন ও নিরপেক্ষ ব্যক্ত করার উপর সাবেক এটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বারের হস্তক্ষেপ দ্বারা আপোস মিমাংসা করা হতো। এ প্রসঙ্গে আমেনা খান নামে একজন বিচারক এবিসি নিউজকে বলেন, আমরা আন্দোলন করছি আমাদের মতামতের স্বাধীনতা নিরপেক্ষতা ও মূল্যবোধকে রক্ষা ও সুন্নত রাখার জন্য। দ্য দিল এর এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ৬০ জন ডেমোক্রেট হাউজ রিপ্রেজেন্টেটিভ ও সিনেট জুডিশিয়ারি কমিটির কিছু সদস্য বর্তমান এটর্নি জেনারেল ম্যারিক গারল্যান্ডকে একটি চিঠি দিয়ে বলেছেন যে সাবেক এটর্নি জেনারেল বার এর বন্ধ করে বিচারকদের ইউনিয়নের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার জন্য।
ইমিগ্রেশন বিচারকরা বলেছেন, আমাদের আমাদের ইউনিয়নের উপর হস্তক্ষেপ করে যে স্বাধীনতাকে খর্ব করা হয়েছে তা ফিরিয়ে দিলে আমরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবো। এ প্রসঙ্গে ডানা লিগা নামে একজন বিচারক বলেন, আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতিয়ার হিসেবে কাজ করতে পারি না। তিনি বলেন, বিচার ব্যবস্থা তো কংগ্রেস নয়। কংগ্রেস ইচ্ছা করলে ইমিগ্রেশন পদ্ধতি নিয়ে যে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু বিচার বিভাগকে চলতে দিতে হবে তার নিজস্ব গতিতে। দ্য আমেরিকান ল’ইয়াস এসোসিয়েশন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি বলেছেন, যে মামলাগুলো দ্রুত নিস্পত্তি করতে বলা হয়েছে সেগুলোসহ ঝুলে থাকা মামলাগুলো দ্রুত নিস্পত্তি করতে কমপক্ষে চার বছর সময় লাগবে। কোন মামলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে তাড়াহুড়ো করার সুযোগ থাকে না।
Posted ১:৪৭ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh