বাংলাদেশ অনলাইন ডেস্ক : | শনিবার, ২০ জুন ২০২০
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার রাজনীতিতে ইতিহাস গড়ে পেনিসেলভেনিয়ায় ‘অডিটর জেনারেল’ পদে পাঁচ লাখ ভোটে জয়ী হয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ড. নীনা আহমদ। ২৩৩ বছরের রাজ্যটিতে এই প্রথম শ্বেতাঙ্গ প্রার্থীর পরাজয়। বাংলাদেশের ময়মনসিংহের মেয়ে একসময়ের লাক্সসুন্দরী নীনা দেশকে এনে দিলেন সম্মান।
গত ১১ জুন ডেমোক্রেটিক প্রাইমারির এই ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ভোট অনুষ্ঠিত হয় গত ২ জুন। মোট পাঁচজন প্রার্থীর মধ্যে ড. নীনা পেয়েছেন প্রায় ৪ লাখ ৮৫ হাজার ভোট। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী পিটাসবার্গ সিটি কম্পট্রোলার মাইকেল ল্যাম্ব প্রায় ৮০ হাজার ভোট কম পেয়েছেন।
নীনা আহমেদ আশির দশকে অনুষ্ঠিত লাক্সসুন্দরী প্রতিযোগিতার শুরুর দিকে খেতাব জয়ীদের একজন। ১৯৯০ সালে ২১ বছর বয়সে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যান। প্রথম ম্যানহাটনের একটি হোটেলে খুব কম বেতনে ওয়েট্রেসের কাজ করতেন। পশাশাপাশি পড়াশোনা চালিয়ে যান। পরে পেনসিলভানিয়া ইউনিভার্সিটিতে রসায়নে পিএইচডি করেন।জেফারসন ইউনিভার্সিটি থেকে ফেলোশিপ করেন মলিকুলার জেনেটিক্স তথা চিকিৎসাবিজ্ঞানে। উইলস আই হাসপাতালে রিসার্চ সাইন্টিস্ট হিসেবে যোগ দিয়ে পেশাগত জীবনে সাফল্য পান। একই সঙ্গে জড়িত হন সমাজসেবা ও জনকল্যাণমূলক কাজে।
ড. নীনা বর্তমানে বসবাস করছেন পেনসেলভেনিয়ার রাজধানী ফিলাডেলফিয়ায় বসবাস করেন। ২০১৪ সালে বারাক ওবামা সরকারে গুরুত্বপূর্ণ পদ পান। এশিয়া-অ্যামেরিকা বিষয়ক কমিশনের উপদেষ্টা হন তিনি। প্যাসিফিক আইল্যান্ডও এই কমিশনের আওতাভুক্ত ছিল।
২০১৫ সালে নীনা ফিলাডেলফিয়া সিটির ডেপুটি মেয়র হন। এই সময়ে তিনি রাজ্যে তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিস্তার ঘটান। ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা হিসেবে অন্যান্য রাজ্যেও সক্রিয়তা দেখান।
২০১৮ সালে তিনি ফিলাডেলফিয়া রাজ্যের লে. গভর্নর পদে প্রার্থী হন। নিয়ম অনুসারে আগের বছর ডেপুটি মেয়র পদে পদত্যাগ করেন। কিন্তু ভোটের আগে প্রতিপক্ষের কৌশলের শিকার হন। নির্বাচনী এলাকা আদালতের মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়। ফলে তিনি এলাকাবিহীন প্রার্থী হিসেবে পরাজিত হন।
এবার নির্বাচনে তিনি অসামান্য সাফল্য দেখালেন। পর্যবেক্ষকদের মতে, তিনি ব্যাপকভাবে মাঠ চষেছেন। কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের হত্যাপরবর্তী আন্দোলনকেও কাজে লাগিয়েছেন। নারী ও অশ্বেতাঙ্গদের প্রতিনিধিরূপেও জিতেছেন প্রথম বিজয়।
ড. নীনার স্বামী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আহসান নসরুল্লাহ। দুই কন্যাসন্তানের জননী। স্বামী ব্যবসায় উন্নতি করলে ড. নীনা চাকরি ছাড়েন। নিজে মনোনিবেশ করেন মার্কিন রাজনীতিতে। ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্বাচনী মোর্চায় কাজ করেন। মার্কিন জীবনের কল্যাণচিন্তার ওপর গবেষণাও অনেক।
নির্বাচনটি মূল ধারার হলেও বাঙালি কমিউনিটি প্রচুর খেটেছিল। কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটারদের আপ্যায়ন করে স্বেচ্ছাসেবী বাংলাদেশিরা। তাদের সর্বাত্মক সমর্থন ও সহযোগিতায় অন্যরাও হতবাক। অনেক ভোটকেন্দ্রে বাংলাদেশের পতাকাও শোভিত হয়।
Posted ৮:২৯ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২০ জুন ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh