বাংলাদেশ অনলাইন : | মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
ছবি : সংগৃহীত
যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির ৫৯ এমপি নিজেদের স্বাক্ষরসহ লেখা চিঠিতে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন। গাজাবাসীদের রাফাহ শহরের ধ্বংসস্তূপে থাকা শিবিরে জোর করে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। ঘোষণার পর পরই ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার আবেদন জানান এমপিরা।
ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম দ্যা গার্ডিয়ানের প্রদিবেদনে বলা হয়, মাঝারি ধারা ও বামপন্থী ব্যাকবেঞ্চারদের সমন্বয়ে গঠিত এই এমপিরা বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামিকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে সতর্ক করে বলেন, গাজায় জাতিগত নিধনের প্রক্রিয়া চলছে।
চিঠিতে তারা বলেছেন, ইসরায়েল সরকারের রাফাহ পরিকল্পনা রুখতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী যেন অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণ এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেন।
চিঠিটি পাঠানো হয় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে একই ধরনের আহ্বান জানানোর ঠিক পরেই।
এমপিরা লিখেছেন, ‘বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি এবং উদ্বেগজনক। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী সোমবার ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি গাজার সব ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিককে জোর করে রাফাহ শহরের ধ্বংসস্তূপে একটি শিবিরে সরিয়ে নিতে চান। এখান নিয়ে গেলে তারা শহর ছেড়ে যাওয়ারও অনুমতি পাবে না।’
তারা আরও বলেন, ইসরায়েলি মানবাধিকার আইনজীবী মাইকেল স্ফার্ড এই পরিকল্পনাকে ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনের একটি কৌশলগত পরিকল্পনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এটি গাজার দক্ষিণ প্রান্তে জনসংখ্যা স্থানান্তরের মাধ্যমে পরে তাদের পুরো গাজা উপত্যকা খালি করার পরিকল্পনা।
চিঠিতে এমপিরা পাঁচটি নির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এর মধ্যে কিছু পদক্ষেপ ব্রিটিশ সরকার ইতোমধ্যে গ্রহণ করেছে, যেমন – জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা-কে অর্থ সহায়তা প্রদান এবং হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্তির প্রচেষ্টা।
তবে অন্যান্য পদক্ষেপগুলো বেশি বিতর্কিত, যেমন—পশ্চিম তীরের ইসরায়েলি বসতিগুলোর ওপর বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে অবিলম্বে স্বীকৃতি প্রদান।
সরকার জানিয়েছে, তারা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত। তবে শুধু শান্তি প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে এমন এক সময় স্বীকৃতি দেওয়া হবে যভন তা শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ প্রভাব ফেলবে।’
ইতোমধ্যে ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। যদিও ফ্রান্স এখনো দেয়নি, তারা সম্প্রতি ব্রিটেনসহ মিত্রদের ওপর একযোগে স্বীকৃতি প্রদানের জন্য চাপ সৃষ্টি করছে।
সাম্প্রতিক সময়ে দ্বিতীয়বারের মতো লেবার এমপিরা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বানে সরকারের কাছে চিঠি পাঠালেন। তবে এবারই প্রথম তারা প্রকাশ্যে নিজেদের নাম ব্যবহার করেছেন। আগের চিঠিতে কিছু সংসদীয় সহকারী ও জুনিয়র মন্ত্রীর নামও ছিল।
এই চিঠিটি সংগঠিত করে লেবার ফ্রেন্ডস অব প্যালেস্টাইন অ্যান্ড দ্য মিডল ইস্ট নামক সংগঠন, এবং এতে ৫৯ জন এমপি স্বাক্ষর করেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন সংগঠনের দুই চেয়ারম্যান— সারা ওউয়েন ও অ্যান্ড্রু পেইকস। অন্য স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন বিজনেস সিলেক্ট কমিটির চেয়ারম্যান লিয়াম বার্ন, তানমানজিত সিং ধেসি এবং প্রভাবশালী ব্যাকবেঞ্চার স্টেলা ক্রীসি, ক্লাইভ লুইস, ডায়ান অ্যাবট ও ডন বাটলার।
Posted ৮:৫৪ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh