স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ, বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজের প্রাক্তণ অধ্যক্ষ, মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম শাখাওয়াত হোসেন শাহীন আর নেই। গত ৪ মার্চ সোমবার বেলা দেড়টার দিকে মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর ঢাকার এভারকেয়ার হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা শেষনি:শ্বাস ত্যাগ করেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। এর আগে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মানিকগঞ্জের ভাটবাউর এলাকায় একটি বাস তাকে বহনকারী প্রাইভেটকারকে ধাক্কা দিলে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে তাকে প্রথমে মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় পাঠানো হয়। মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিল হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ডা. এ জেড এম সাখাওয়াত হোসেন মুন্নু মেডিকেল কলেজ কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর সদরে। জানা গেছে, সড়ক দূর্ঘটনার পর তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকা পাঠানো হয়। ওসি মো. হাবিল হোসেন জানান, বাসটিকে জব্দ করা হয়েছে। হাইওয়ে থানায় মামলা হয়েছে।তিনি ছিলেন বাংলাদেশে সার্জারি বিভাগে একজন কিংবদন্তী শিক্ষক এবং দেশবরেণ্য চিকিৎসক। তাঁর মৃত্যু বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।
উল্লেখ্য, ডা. এ জেড এম সাখাওয়াত হোসেন শাহীন ১৯৫৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮২ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে এমবিবিএস পাশ করেন। ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে স্বাস্থ্য ক্যাডারে মেডিকেল অফিসার হিসেবে যোগদান করেন এবং ২০১৬ সালের ২৪ ডিসেম্বর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ এর উপাধ্যক্ষ হিসেবে সরকারি চাকুরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। অত্যন্ত দক্ষতা, নিষ্ঠা ও সততার সাথে তিনি তাঁর কর্মজীবন শেষ করেন। মৃত্যুকালে তিনি তাঁর দুই সন্তান এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী ছাত্র ও চিকিৎসক সহকর্মী রেখে গেছেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর শোক
অধ্যাপক এ জেড এম শাখাওয়াত হোসেন শাহিনের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দু:খ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা সামন্ত লাল সেন। মরহুমের আত্মার প্রতি শান্তি কামনা করে সোমবার সন্ধ্যায় এক শোক বার্তায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‌‌মরহুম অধ্যাপক এ জেড এম শাখাওয়াত হোসেন শাহিন ছিলেন সার্জারি চিকিৎসার একজন দক্ষ ও নির্ভরশীল চিকিৎসক। তিনি আমার সাথে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি অল্প সময়েই দেশের সার্জারি চিকিৎসায় নির্ভরতার প্রতীক হয়েছিলেন। তাঁর এই অকাল মৃত্যুতে জাতির অপরিসীম ক্ষতি হয়ে গেল। বেঁচে থাকলে তাঁর হাতে আরো অনেক মানুষ ভালো চিকিৎসা সেবা পেতে পারত। তাঁর মৃত্যুতে দেশ একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ চিকিৎসককে হারালো। এই ক্ষতি সহজে পুরণ হবার নয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মরহুমের আত্মার প্রতি শান্তি কামনা করেন ও তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। তাঁর মৃত্যুতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সকল স্তরের কর্মকর্তা কর্মচারিবৃন্দ শোকাভিভূত এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছে।