মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

বিশ্বজিৎ ও তার প্রাক্তণ স্ত্রীর বিরুদ্ধে শাওনের মামলা

বাংলাদেশ রিপোর্ট :   |   বৃহস্পতিবার, ০১ জুলাই ২০২১

বিশ্বজিৎ ও তার প্রাক্তণ স্ত্রীর বিরুদ্ধে শাওনের মামলা

মরহুম কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের দ্বিতীয় স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন মুক্তধারা, নিউইয়র্কের সত্ত্বাধিকারী বিশ্বজিৎ সাহা ও তার প্রাক্তণ স্ত্রী রুমা চৌধুরীর বিরুদ্ধে হুমাতুন আহমেদের চিত্রকর্ম আত্মসাতের অভিযোগে ঢাকায় মামলা দায়ের করেছেন। গত ২৯ জুন ঢাকার মেট্টোপলিটান ম্যাজিষ্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে তিনি এ মামলা দায়ের করেন। আদালত বাদিও জবানবন্দি নিয়ে ২৯ আগস্টের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দিয়েছে। অভিযোগ আমলে নিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছেন শাওন।

মামলার বিবরণী অনুযায়ী হুমায়ুন আহমেদ ২০১২ সালে ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য নিউইয়র্কের জ্যামাইকায় অবস্থানকালে পুত্র নিশাদকে নিয়ে বেশ কিছু ছবি এঁকেছিলেন। ওই বছরের জুন মাসে তার আঁকা ২৪টি চিত্রকর্মের প্রদর্শনীর জন্য অভিযুক্তদের কাছে দেয়া হয়। প্রদর্শনী শেষে ছবিগুলো ফেরত দেয়ার কথা থাকলেও অভিযুক্তদের উদ্দেশ্য ছিল ছবিগুলো বিক্রি করে কমিশন লাভ করা ও পরবর্তীতে ছবি বিক্রি করে লব্ধ অর্থ আত্মসাত করা। হুমায়ুন আহমেদ মারা গেলে শাওন তার পুত্রসহ দেশে ফিরে যান। পরে ছবিগুলো ফেরত চাইলে অভিযুক্তরা টালবাহানা শুরু করেন। শাওন বিষয়টি ওই সময়ের সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জানান ও সহযোগিতা কামনা করেন। এর ফলে অভিযুক্ত রুমা তার প্রাক্তণ স্বামী বিশ্বজিৎকে দিয়ে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ২৪টির মধ্যে ২০টি ছবি হুমায়ুন আহমেদের মা আয়েশা ফয়েজের পল্লবীর বাসায় পৌছে দেন। বাকি ৪টি ছবি অভিযুক্তরা আত্মাত করেছেন।


শাওনের মামলা প্রসঙ্গে বিশ্বজিৎ সাহার বক্তব্য : হুমায়ুন আহমেদের চিত্রকর্মের প্রদর্শনী অথবা চিত্রকর্ম চুরির ব্যাপারে হুমায়ুন আহমেদের স্ত্রী শাওনের দায়েরকৃত মামলা প্রসঙ্গে মুক্তধারা, নিউইয়র্কের সত্ত্বাধিকারী বিশ্বজিৎ সাহা তার বক্তব্যে বলেছেন যে চিত্রকর্মের প্রদর্শনী বা তাঁর কোন চিত্রকর্ম চুরি হওয়ার সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, হুমায়ূন আহমেদের ২৪টি চিত্রকর্মের মধ্যে ২০টি তাঁর মায়ের কাছে ২০১৩ সালে হস্তান্তর করেছি। ১টি ছবি মেলার স্থান থেকে হারিয়ে যায়, যা জ্যামাইকার পুলিশ প্রিসিংকট জিডি করে, তাও হুমায়ূন আহেমদ এর মায়ের কাছে হস্তান্তর করি। এছাড়া ১টি চিত্রকর্ম হুমায়ূন আহমেদ জাতিসংঘে নিযুক্ত তৎকালীন স্থায়ী প্রতিনিধি বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেনকে উপহার দেন। আরেকটি বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনকে উপহার দেয়া হয়। ২৪ নং ছবিটি উপহার দেন হুমায়ূন আহমেদ নিউইয়র্কে নিযুক্ত তৎকালীন বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল সাব্বির আহমেদ চৌধুরীকে। হুমায়ূন আহমেদের আঁকা সকল ছবি ও প্রাসঙ্গিক তথ্য-উপাত্ত বাংলাপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত হুমায়ূন আহমেদের শেষদিনগুলি গ্রন্থে লিপিবদ্ধ রয়েছে। হুমায়ূন আহমেদের মায়ের কাছে চিত্রকর্মগুলো হস্তান্তরের ৮ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। এতদিন পর আবেগঘন বক্তব্য দিয়ে মামলা দায়ের করে শাওন হুমায়ূন আহমেদের সম্মান বা মর্যাদা কিভাবে বৃদ্ধি করলেন এ প্রশ্ন যাঁদের মনে উদয় হবে এর উত্তরও নিশ্চয় তাঁরাই খুঁজে নেবেন।

তিনি বলেন, হুমায়ূন আহমেদের আাঁকা ছবি আত্মসাতের অভিযোগে তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী শাওন মামলা করায় আমি অবাক হইনি। অবাক হইনি মামলার নথিপত্রে তাঁর মিথ্যাচার দেখেও। শাওন অভিযোগ করেছেন, ‌‌২০১২ সালে চিকিৎসার জন্য নিউইয়র্কের জ্যামাইকায় থাকাকালে অবসরে হুমায়ূন আহমেদ বেশ কিছু ছবি আঁকেন। সে সময়েই নাকি তাঁর সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতা হয়। হুমায়ূন আহমেদ যেদিন বেলভিউ হাসপাতালে মৃতুবরণ করেন সেদিন সকালে ভয়েস আমেরিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারেও মিথ্যা বলেছিলেন শাওন। তিনি বলেছিলেন, হুমায়ূন আহমেদ সুস্থ হয়ে উঠছেন, তাঁকে বাসায় নিয়ে আসা হবে। সাক্ষাৎকারে তাঁর এই কথা বলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নন্দিত লেখক হুমায়ূন আহমেদের অকাল প্রয়াণ ঘটে।


বিশ্বজিৎ সাহা আরো বলেন, হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে কখন থেকে আমার পরিচয় তা শাওনের জানার কথা নয়। ১৯৯৪ সাল থেকে যতবার হুমায়ূন আহমেদ নিউইয়র্কে এসেছেন, প্রধানত আমার সাংগঠনিকতায় মুক্তধারা নিউইয়র্ক ও নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলাকে ঘিরেই ছিল তাঁর সকল আনন্দ-উদ্‌যাপন। শাওনের সঙ্গে হুমায়ূন আহমেদের পরিচয়েরও অনেক আগের ঘটনা সেটা। ১৯৮৫ সালে আমি যখন মোস্তফা জব্বার সম্পাদিত সাপ্তাহিক আননন্দপত্রে কাজ করি, তখন থেকেই হুমায়ূন আহমেদের সাথে সম্পর্ক গড়ে উঠে। এ কথাও শাওনের জানা যে, চিকিৎসা নিতে নিউইয়র্কে এসে হুমায়ূন আহমেদ আমারই তত্ত্বাবধানে ছিলেন। বেঁচে থাকা অবস্থায় স্বজ্ঞানে তিনি হাসপাতালসহ সর্বত্র আমার ঠিকানাই ব্যবহার করেছেন। এমনকি তাঁর মৃতুর আগে ও পরে বেলভিউ হাসপাতাল থেকে যে বিল এসেছিল তার অর্থ আমিই হুমায়ূন আহমেদের ডেথ সাটিফিকেটসহ জমা দিয়ে মওকুফ করার ব্যবস্থা করেছি। এসব কথা জানা থাকা সত্ত্বেও প্রসঙ্গটি এড়িয়ে গেছেন শাওন!

হুমায়ূন আহমেদের আঁকা ছবিগুলো আত্মাসাৎ করার যে লক্ষ্য তাঁর ছিল তা আমি হতে দিইনি বলেই তাঁর যত উষ্মা। হুমায়ূন আহমেদের মা আয়শা ফয়েজ জীবিত থাকাকালে মুহম্মদ জাফর ইকবাল সহ তাঁর অন্যান্য পুত্র-কন্যাদের উপস্থিতিতে হুমায়ূন আহমেদের মা আয়েশা ফয়েজের মিরপুরের পল্লবীর বাসায় গিয়ে ১টি ছাড়া হমায়ূনের আঁকা অন্য সবগুলো চিত্রকর্ম তাঁর কাছে হস্তান্তর করি। আমার এই পদক্ষেপের কারণে শাওন হমায়ূন আহমেদের আাঁকা ছবিগুলো গ্রাস করতে পারেননি, সেটাই আমার অপরাধ। আমার লেখা হমুায়ূন ‌আহমেদের শেষ দিনগুলো’ প্রকাশিত হওয়ায় নিউইয়র্কের বেলিভউ হাসপাতালে হুমায়ূন আহমেদের চিকিৎসায় যে কোনো অর্থব্যয় হয়নি সে খবর জানাজানি হয়ে যাওয়ায় মানুষের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করতে শাওনের অসুবিধা হয়ে পড়ে। আমার লেখা বইটির প্রকাশনা রুদ্ধ করতে সেই ক্ষোভেই মরিয়া হয়ে শাওন মামলা করেছিলেন।


আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, নিউইয়র্কের পত্র-পত্রিকায় শাওনের বিভিন্ন কেলেংকারীর খবর প্রকাশিত হতে শুরু করে। বাংলাদেশের কয়েকজন লেখক-বুদ্ধিজীবীকে দিয়ে হুমায়ূন আহমেদের সম্মান ক্ষুণ্ণ না করার অজুহাত তুলে তিনি এ ধরনের সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে একটি বিবৃতি দেয়ার ব্যবস্থা করেন। আরো মর্মান্তিক ঘটনা হচ্ছে, চেয়ার থেকে পড়ে হুমায়ূন আহমেদের সেলাই খুলে যাওয়ার ঘটনা জানতে পেরে রুষ্ট হয়ে একজন হুমায়ূনপ্রেমী চট্টগ্রাম থেকে মামলা করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। অনেক অনুরোধ-উপরোধ করে তাঁকেও বিরত রাখা হয় হুমায়ূন আহমেদের সম্মান ক্ষুণ্ণ হবে এ অজুহাত তুলে। আমি পরিস্কার ভাবে বলতে চাই, শাওনের হাতে না দিয়ে হুমায়ূন আহমেদের চিত্র প্রদর্শনীর সকল ছবি হুমায়ূনের পরিবারের সকলের অভিভাবক হিসেবে তাঁর মায়ের কাছে আমি নিজ হাতে হস্তান্তর করে এসেছি। যেহেতু হুমায়ূন আহমেদ এর দুই সংসারে সন্তানেরা রয়েছেন তাই আমার বিবেচনায় কোন এক পক্ষের কাছে না দিয়ে তাঁর মায়ের কাছে চিত্রকর্মগুলো দেয়া শ্রেয় মনে হয়েছে।

advertisement

Posted ১২:১৬ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০১ জুলাই ২০২১

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

কাঁঠাল সমাচার
কাঁঠাল সমাচার

(1397 বার পঠিত)

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.